গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে তিন সাঁওতাল হত্যার বিচার ও ভূমিদস্যুদের কবল থেকে বাপ-দাদার জমি রক্ষার দাবি জানিয়েছে সাঁওতাল-বাঙালিরা।
‘আদিবাসীদের অস্বিত্ব সংরক্ষণ ও মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় সামিল হই’ এই প্রতিপাদ্যে শনিবার গাইবান্ধায় ‘আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস’ পালনের কর্মসূচি থেকে এসব দাবি জানান নেতৃবৃন্দ।
১০ আগষ্ট শনিবার সকালে গাইবান্ধা নাট্য ও সাংস্কৃতিক সংস্থা (গানাসাস) এর সামনে প্রতিবাদী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এরপর একটি শোভাযাত্রা বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
এতে সাঁওতাল নারী-পুরুষরা তাদের অধিকার ও দাবি সম্বলিত ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে তাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক ও তীর-ধনুকসহ অংশগ্রহণ করেন।
শুরুতেই ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদ, সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, গাইবান্ধা সামাজিক সংগ্রাম পরিষদ ও নাগরিক সংগঠন জনউদ্যোগ গাইবান্ধার যৌথ উদ্যোগে প্রতিবাদী সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘সাঁওতাল হত্যা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের ৮ বছর পেরিয়ে গেছে। এমন একটি বিভৎস, অমানবিক ঘটনার আজও বিচার কাজ শুরু হয়নি।
সাঁওতাল হত্যার আসামী সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ ও উপজেলা চেয়ারম্যান শাকিল আকন্দ বুলবুলসহ আসামীদের গ্রেফতারের দাবি করেন তারা । সাঁওতাল হত্যা মামলার আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও তাদের কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।
মাদক ব্যবসায়ী ও ভূমিদস্যু স্বপন শেখ ও আতাউর রহমান সাবুর নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা নতুন করে সাঁওতালদের মারধর, ভয়ভীতি প্রদর্শন, বাড়িঘর ও কৃষিকাজে ব্যবহৃত ট্রাক্টর ভাংচুর এবং জমি দখল করে নিয়েছে । এ নিয়ে সাঁওতালদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম-ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ডা. ফিলিমন বাসকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য দেন, গাইবান্ধা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহামুদুন্নবী টিটুল, পরিবেশ আন্দোলন-গাইবান্ধার সভাপতি ওয়াজিউর রহমান রাফেল, আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদের আহ্বায়ক অ্যাড. সিরাজুল ইসলাম বাবু, জনউদ্যোগের সদস্য সচিব প্রবীর চক্রবর্তী, আদিবাসী নেত্রী প্রিসিলা মুরমু, মানবাধিকার কর্মী গোলাম রব্বানী মুসা, আদিবাসী নেতা সুফল হেমব্রম, থমাস হেমব্রম, সুচিত্রা মুরমু তৃষ্ণা, বাংলাদেশ রবিদাস ফোরামের সাবেক সভাপতি সুনীল রবিদাস, অ্যাড. কুশালাশীষ চক্রবর্তী সাগর, অ্যাড. ফারুক কবীর প্রমুখ।
‘আদিবাসী’ হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি, সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক মন্ত্রণালয় ও ভূমি কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, সারাদেশে সাঁওতালসহ আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার এবং জীবনমানের সার্বিক দিক দিয়ে আজও নানাভাবে বঞ্চিত। সে কারণেই তারা দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর থেকে পিছিয়ে পড়া ও অবহেলিত।