ঢাকার কেরানীগঞ্জে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে এক তরুণীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে ধর্ষকের বাড়ি ঘেরাও করে দুর্বৃত্তদের জিম্মি অবস্থা থেকে ধর্ষণের শিকার ওই তরুণীকে উদ্ধার করে শিক্ষার্থীরা।
গত শনিবার রাত ১০টার দিকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়া ইউনিয়নের পশ্চিমদী গোয়ালপাড়া এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।
শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী সূত্রে জানাগেছে, গত শনিবার রাত ১০টার দিকে পশ্চিমদী গোয়ালপাড়া এলাকায় অটোরিকশাযোগে দুজন তরুণ তাদের দুই বান্ধবীকে নিয়ে ঘুরতে যায়। একপর্যায়ে ওই এলাকার মৃত সলি মোল্লার ছেলে মাদকসেবী শিপন মোল্লা (২৮) সহ আরও দুজন ব্যক্তি তাদের পথরোধ করে। এসময় শিপন ও তার সহযোগীরা অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ওই চারজনের সাথে থাকা মুঠোফোন ও নগদ টাকা লুট করে নেয়। পরবর্তীতে কৌশলে সেখান থেকে ভুক্তভোগী দুই তরুণ ও এক তরুণী পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। তবে তাদের সঙ্গে থাকা আরেক তরুণী (১৭) সেখান থেকে পালাতে পারে না। একপর্যায়ে শিপন ও তার সহযোগীরা ওই তরুণীকে তুলে নিয়ে শিপনের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখান থেকে পালিয়ে আসা তিনজন দিবাগত রাত তিনটার দিকে বিষয়টি কেরানীগঞ্জের কদমতলী এলাকায় ডাকাত ধরার টহলে থাকা শিক্ষার্থীদের জানায়। তৎক্ষণাৎ ওই শিক্ষার্থীরা পশ্চিমদী গোয়ালপাড়া এলাকায় জিম্মি তরুণীর সন্ধানে যায়। একপর্যায়ে ওই তরুণীকে আটক রাখা বাড়িটি শনাক্ত করে বাড়িটিকে ঘিরে ফেলে শিক্ষার্থীরা। ভোর সাড়ে চারটার দিকে ওই বাড়িটিতে অভিযান চালায় শিক্ষার্থীরা। এসময় ওই তরুণীকে গুরুতর আহত অবস্থায় স্বপনের ঘর থেকে উদ্ধার করা হয়। এসময় স্বপনের ঘর থেকে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র ও ইয়াবা সেবনের সরঞ্জাম উদ্ধার করে শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে ওই তরুণীকে চিকিৎসার জন্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে ধর্ষণের শিকার তরুণীর এক বন্ধু জানান, আমি আমার এক বন্ধু ও দুই বান্ধবী মিলে অটোরিকশাযোগে ঘুরতে যাই। অটোরিকশাটি গোয়ালপাড়া সড়ক এলাকায় পৌঁছালে স্বপনসহ তিনজন আমাদের অটোরিকশাটির পথরোধ করে। একপর্যায়ে তারা অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে আমাদের সাথে থাকা মুঠোফোন ও টাকা লুট করে নেয়। এরপর আমাদের ছেড়ে দেওয়ার জন্যে তাদের কাছে অনেক আকুতি মিনুতি ও কান্নাকাটি করি। কিন্তু ওরা আমাদের সেখান থেকে যেতে দিচ্ছিল না। একপর্যায়ে আমি, আমার এক বন্ধু ও বান্ধবী কৌশলে সেখান থেকে পালিয়ে আসি। তবে আমাদের সাথে থাকা আরেক বান্ধবী পালাতে ব্যর্থ হয়। একপর্যায়ে আমরা বিষয়টি কদমতলী এলাকায় প্রহরায় থাকা শিক্ষার্থীদের জানাই। এরপর তাদের নিয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। তারপর এলাকাবাসীর সহায়তায় ধর্ষক শিপনের বাড়ির সন্ধান পেয়ে সেখানে সবাই অবস্থান নেই। পরবর্তীতে ভোর বেলা আমাদের সাড়াশব্দ পেয়ে অপহৃত ওই বান্ধবী সিপনের বাড়ির জানালা দিয়ে তার হাত দেখায়। আমরা তার অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা এলাকাবাসীর সহায়তায় ওই বাড়িতে অভিযান চালায়। এসময় ওই বাড়ির একটি কক্ষ থেকে বান্ধবীকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করি। তিনি আরও বলেন, বান্ধবী জানায়, রাতভর দুর্বৃত্তরা তার ওপর পৈশাচিক নির্যাতন চালিয়েছে। শিপনসহ তিনজন পালাক্রমে রাতভর ওকে ধর্ষণ করেছে। ও বারবার তাদের কাছে ছেড়ে দেওয়ার আকুতি জানালেও তারা কোন কথা শোনেননি।