পাহাড়ের মাটিতে মিশ্র ফল বাগানের ফাঁকে বস্তায় আদা চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। সে কারণে বাণিজ্যিকভাবে এ পদ্ধতিতে আদা চাষে ঝুঁকছেন তারা। আদা উচ্চমূল্য ও ভেষজ ওষুধিগুণে ভরপুর এবং মসল্লা জাতীয় ফসল।
নিত্যদিন রন্ধনশালায় নানা খাবারে স্বাদ বাড়াতে আদার জুড়ি নেই। ওষুধ শিল্পে কাঁচামাল হিসেবেও আদার চাহিদা ব্যাপক। তাই সারা বছর বাজারে ভোক্তার কাছে এর চাহিদা বেশি। মাটিতে সরাসরি আদা চাষে মাটির আদ্রতা রক্ষা করা যায় না। এতে ঘাসের যন্ত্রণায় মাটি শক্ত হয়ে যায়। ফলে আদার বিস্তারে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে ফলন কমে যায়। আর বর্ষাকালে মাটিতে পানি জমে আদা পঁচে যায়। কিন্তু বস্তা পদ্ধতিতে আদা চাষ করলে এ ধরনের কোনো ঝুঁকি থাকে না। বস্তায় মাটি নরম থাকে ফলে ঘাস কম হয়।
এদিকে মাটিরাঙ্গার মোহাম্মদপুর এলাকায় রশিদ মিয়ার বাগানে গিয়ে দেখা মিলে প্রায় সহস্রাধিক বস্তায় একটি মিশ্র ফল বাগানে আদা চাষ। প্রায় এক একরের একটি মিশ্র ফল বাগান করেছেন তিনি। পথ চলতে পথের পাশেই বাঁশের ঘেরার ভিতরে সারি সারি বস্তায় আদা গাছ গাছগুলোও বেশ সুন্দর পাতার রং আর সতেজতা দেখেই যে কেহ বুজতে বাকি থাকবে না যে এ বাগানে ভাল ফলন হবে। প্রায় ১টন আদা উৎপাদন আশা করে করা বাগানের কেয়ারটেকার অনুমান করে বলেন, প্রতি কেজি আদা ২৫০/৩০০ টাকা কেজি মূল্য হলে প্রায় আড়াই থেকে ৩ লাখ টাকার আদা বিক্রি করা যাবে।
মাটিরাঙ্গায় উপজেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, মাটিরাঙ্গা উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বাণিজ্যিকভাবে বস্তায় আদা চাষ দিন দিন বেশ জনপ্রিয় পাচ্ছে। উপজেলার বড়নাল, তবলছড়ি, তাইন্দং ও পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থানে এর চাষ করা হয়। মাটিরাঙ্গায় আদা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ৪৩০ হেক্টর, অর্জিত ৪৪০ হেক্টর। মাটিরাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. সবুজ আলী জানান, মাটিতে মসলা জাতীয় আদা চাষ করলে ভূমি ক্ষয় ও নানা ধরনের রোগ বালাইয়ের ঝুঁকি থাকে। জমিতে আদা চাষে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি কন্দপঁচা রোগ। টানা ১০ থেকে ১৫ দিনের বৃষ্টিতে হলে এই রোগের সংক্রমণ হয়। কিন্ত বস্তায় আদা চাষে সেই ঝুঁকি নেই। যতই বৃষ্টি হোক বস্তায় পানি বেশিক্ষণ জমে থাকে না। আর যেহেতু প্রতিটি বস্তা আলাদা আলাদা তাই কন্দ পঁচা রোগ সংক্রমিত হওয়ার সুযোগ নেই।