টানা বর্ষণ ও সীমান্তের ওপার থেকে আসা পাহাড়ী ঢলে থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশা ও টিলাগাঁও ইউনিয়নে মনু নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধে দু’টি স্পটে প্রায় ৬শ ফুট এলাকা জুড়ে বিশাল ভাঙন দেখা দিয়েছে।
উপজেলার টিলাগাঁও, জয়চণ্ডী, সদর, রাউৎগাঁও ও পৃথিমপাশা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় সহস্রাধিক মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। সড়কপথেও অনেক গ্রামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। একাধিক স্থানে প্রতিরক্ষাবাঁধের উপর দিয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করছে। এসব স্থানে যেকোন সময় ভাঙন সৃষ্টি হতে পারে। এসব স্থানে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় লোকজনের উদ্যোগে বালির বস্তা দিয়ে ভাঙন ঠেকাতে প্রাণপন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এদিকে উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, পানিবন্দিদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে।
পাউবো জানিয়েছে, মনু নদীর রেলওয়ে ব্রিজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৯৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও মনু নদী শহরের চাঁদনীঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধলাই নদী রেলওয়ে ব্রিজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে কুশিয়ারা নদীর শেরপুর পয়েন্টে ২ ও জুড়ী নদী ভবানীপুর পয়েন্টে বিপদসীমার ১৬৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বুধবার সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন, পিআইও মো. শিমুল আলী, ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মালিক প্রমুখ।
স্থানীয়রা জানান, প্রতি মুহূর্তে পানির পরিমাণ বাড়ছে। গত কয়েকবছরের চেয়ে এবারের পানির স্রোত খুবই ভয়াবহ। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কৃষি ও মৎস্যখাতে। রাস্তাঘাটও তলিয়ে গেছে পানিতে। বাড়িঘরে পানি উঠায় লোকজন চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন জানান, উপজেলার ৫ ইউনিয়নে পানি প্রবেশ করেছে। এতে বিভিন্ন এলাকায় সহস্রাধিক মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
তিনি জানান, আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। পানিবন্দিদের ১০ কেজি করে চাল দেওয়া হচ্ছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।