ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতিন কবলে মৌলভীবাজার। ভারতের উজান থেকে অবিরত আসা পাহাড়ি ঢল আর গত ৪৮ ঘন্টার টানা বৃষ্টিতে ইতিমধ্যে জেলার মনু, ধলাই, কুশিয়ারা ও জুড়ী নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সকাল ১১ টার দিকে শহরের চাঁদনীঘাট ব্রিজ এলাকা দিয়ে মনুনদীর পানি বিপৎসীমার সর্বোচ্চ ১৩৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে দেখা গেছে।
তবে পাউবো বলছে ওই এলাকায় বিপৎসীমার ১১১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় প্রতি মুহূর্তে বেড়ে চলেছে পানির স্রোতের তীব্রতা।
বৃহস্পতিবার সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, শহরের সাইফুর রহমান সড়কের শহর প্রতিরক্ষাবাঁধটি বেশ ঝুঁকিতে রয়েছে। গাইড ওয়ালের সামান্য নিচে রয়েছে পানির অবস্থান। এতে করে যেকোনো সময় ঘটতে পারে ভয়াবহ বিপর্যয়। বাঁধ অতিক্রম করে শহরে পানি প্রবেশের আশঙ্কায় শহরবাসী বৃহস্পতিবার মধ্যরাত খেকে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।
শহরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সহ নাগরিকদের রক্ষায় ব্যবসায়ী, বিএনপি-জামায়াত সহ রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, রেড ক্রিসেন্ট, স্কাউট সহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠনের শতশত তরুণ প্রবল বৃষ্টি উপেক্ষা করে বালুর বস্তা ফেলে শহর রক্ষার জন্য প্রাণপন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। পাশাপাশি মাইকযোগে শহরের মানুষকে সচেতনতার জন্য প্রচারণা চালানোও হচ্ছে।
এদিকে শহর প্রতিরক্ষাবাঁধটি বেশ ঝুঁকিতে থাকায় সন্ধ্যার পর থেকেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাইফুর রহমান সড়কে যানবাহন সহ সর্বসাধারণের চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। ওই সড়কের উভয় দিকের প্রবেশ পথটি বাঁশ দিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ব্যবসায়ীদেরও তাঁদের দোকানের মালামাল অন্যত্র সরিয়ে নিতে দেখা গেছে।
মনু প্রতিরক্ষাবাঁধ রক্ষায় কয়েকশো দলীয় নেতাকর্মী নিয়ে কাজ করছেন জেলা বিএনপি নেতা ব্যবসায়ী মনোয়ার আহমেদ রহমান।আলাপকালে তিনি জানান, ২০১৮ সালের বন্যায় যে সঙ্কট ছিল, এবারের বন্যা পরিস্থিতি তারচেয়েও ভয়াবহ। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকারের পৌরসভা ও জেলা পরিষদের জনপ্রতিনিধিদের অপসারণ করার কারনে এই পরিস্থিতিতে তাদের উপস্থিতিও নেই।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন (পাউবো) বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাবেদ ইকবাল জানান, মনু নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। তবে ভারতে এই মুহূর্তে বৃষ্টি বন্ধ থাকায় মনুনদীর রেলওয়ে ব্রিজ এলাকা দিয়ে কমতে শুরু করেছে পানি।