ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের দিন ৫ আগস্ট নীলফামারীর বিভিন্ন এলাকায় গুলিতে আহত হয়ে সদর হাসপাতালে যান ৭৪ জন আন্দোলনকারী। এর মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন ৪৩ জন। প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ৩১ জন। বর্তমানে গুরুতর আহত আট শিক্ষার্থী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন। ছররা গুলির যন্ত্রণায় হাসপাতালের বিছানায় ছটফট করছেন তাঁরা। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে এমন চিত্র দেখা গেছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খোকন ইসলাম (২৮) জানান, তাঁর বাবা বেঁচে নেই। ছয় সদস্যের পরিবারের ভরণপোষণ চালানোর দায়িত্ব তাঁর ওপর। কিন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিতে আহত হয়ে ১৬ দিন ধরে হাসপাতালের বিছানায় পড়ে আছেন তিনি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউ তাঁর খোঁজ নিতে আসেনি।
পাশের শয্যায় চিকিৎসাধীন একাদশ শ্রেণির ছাত্র সৌমিক হাসান সোহাগ (১৮) বলেন, ‘কোনো ছাত্রসংগঠন বা সরকারের পক্ষ থেকে কেউ খোঁজখবর নিতে আসেনি। এই বিপদের সময় মা-বাবা ছাড়া পাশে আর কেউ নেই।’
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক আব্দুর রহিম জানান, ৫ আগস্ট আহত অনেককেই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। গুরুতর আহত চিকিৎসাধীন আটজনকে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।
নীলফামারী সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আরিফুজ্জামান বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যাঁরা আহত হয়ে হাসপাতালে এসেছেন, তাঁদের গুরুত্বসহকারে চিকিৎসাসহ সব ধরনের সেবা দেওয়া হয়েছে। তাঁদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড খোলা হয়েছে। ইতিমধ্যে অনেকেই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। বর্তমানে আটজন চিকিৎসাধীন। তাঁদের বিনা মূল্যে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।