রংপুরের বদরগঞ্জ যমুনেশ্বরী নদীর খেয়া ঘাটে পানিতে ডুবে ফাতেমা নামে দুই বছরের এক কন্যা শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আদরের শিশুটি মতিন-মর্জিনা দম্পত্তির কন্যা ফাতেমা। তাদের বাড়ি মধুপুর ইউনিয়নের কাশীগঞ্জ গ্রামে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে নিমিষেই গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। সোমবার (২৬ আগস্ট) সকাল আটটার দিকে মর্মান্তিক এ ঘটনাটি ঘটে বদরগঞ্জ উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে চলা যমুনেশ্বরী নদীর মধুপুর ইউনিয়নের কাশীগঞ্জ খেয়াঘাটে।
এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, বদরগঞ্জ পৌরশহর থেকে মধুপুর ইউনিনের কাশীগঞ্জ গ্রামে যাতায়াতের জন্য রয়েছে যমুনেশ্বরীর নদীর খেয়াঘাট। ওই ঘাটের মাঝি আব্দুল মতিন। সেখানেই তাদের বসত বাড়ী। মতিন প্রতিদিনের মত সকাল থেকে যাত্রী পারাপার করতো। প্রায় সময় মা মর্জিনার সঙ্গে ঘাটে আসতো ফাতেমাও। সোমবার সকালে ঘুম থেকে উঠে একাই বাবার খোঁজে ঘাটে যায় ফাতেমা। ধারনা করা হচ্ছে এসময় নদীর উচু পাড় থেকে পড়ে পানিতে তলিয়ে ভেসে যায় সে। পরে প্রতিবেশী অপিউল ইসলামের স্ত্রী সুফিয়া বেগম শিশু ভেসে যেতে দেখে আশপাশের লোকজনকে খবর দেয়। কিন্তু তখনও মতিন জানতেন না তারই আদরের মেয়ে ফাতেমা তাঁকে খুঁজতে সে পানিতে তলিয়ে গেছে। উদ্ধার করে দেখা যায় শিশুটি আব্দুল মতিনের মেয়ে ফাতেমা। ওই দিন বিকেলের দিকে পারিবারিক কবরস্থানে শিশুটিকে দাফন করা হয়।
খেয়াঘাটের ইজারাদার আব্দুল লতিফ মিয়া বলেন, ‘আমার অধিনেই আব্দুল মতিন ঘাটের মাঝি হিসেবে কাজ করেন। তার মেয়েটির এমন মৃত্যুতে গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ না থাকায় মরদেহ দাফন করা হয়।
আব্দুল মতিন বলেন, ‘প্রতিদিন সকালে মায়ের সঙ্গে ঘাটে এসে টাকা নিয়ে যেত ফাতেমা। আজ সে একাই ঘর থেকে বের হয়ে আসে। আমি নদীর অপর প্রান্তে থাকার কারণে দেখতে পাইনি। কিন্তু আমার থেকে সামান্য দূরেই যে এমন সর্বনাশ অপেক্ষা করছে তা ভাবতেই পারছিনা। কারো প্রতি আমাদের কোন অভিযোগ নেই। কিন্তু এভাবে আমার কলিজার টুকরা ছেড়ে যাবে কল্পনাও করতে পারছিনা।
এ বিষয়ে বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আবু হাসান কবির জানান, সকালে যমুনেশ্বরী নদীতে ডুবে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।