ছবিঃ সকেল হোসেন
জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার (এটিইও) সুমন কুমার কুন্ডু এবং তৌফিকুর রহমান নামের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে অদক্ষতা, বেপরোয়া, দায়িত্ব কর্মে উদাসীন ও এটিইও হিসাবে একই কর্মস্থলে প্রায় ০৭ বছর যাবত কর্মরতসহ বিভিন্ন অনিয়ম এবং দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তাঁদের অনিয়মের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার বিকালে উপজেলা পরিষদের সামনে মানব বন্ধন শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন পৌর সদরের রাজকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক ও এলাকাবাসীরা।
এর আগে ওই বিদ্যালয়ে সরকারি বিধি না মেনে দূর্নীতি করে ম্যানেজিং কমিটি গঠন করা হয়েছে মর্মে গত ১৩ আগষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট একটি অভিযোগ দেন অভিভাবকরা।
মানববন্ধনে বক্তারা জানান, রাজকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০১৯ সালে যে কমিটি গঠিত হয়েছিল তা অনুমোদিত ছিল না। ওই কমিটির মাধ্যমে অভিভাবক সদস্য দুই জন পুরুষ এবং দুই জন নারীর ক্ষেত্রে নির্বাচনের মাধ্যমে না করে তাদের মনোনীত সদস্যদের নিয়ে ২০২৩ সালের ১৬ মার্চ ম্যানেজিং কমিটি গঠন করা হয়। সেখানে তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তৌফিকুর রহমান এবং সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার সুমন কুমার কুন্ডু মিলে নির্বাচনী তপসীল ঘোষনা না করে সরকারি বিধি ভঙ্গ করে স্থানীয় প্রভাবশালী কামরুল হাসানকে বিদ্যাৎসাহী সদস্য তৈরী করে সভাপতি নির্বাচিত করেন। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিদ্যাৎসাহী সদস্য হতে হলে অভিভাবক হতে হবে। কিন্তু সেখানে শর্তটি ভঙ্গ করেন তারা। ওই বিদ্যালয়ে তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এবং সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে এই ম্যানেজিং কমিটি গঠন করেছেন বলে অভিযোগ তাদের। ২০১৯ সাল থেকে অদ্যবধি ম্যানেজিং কমিটি কর্তৃক সকল প্রকার কাজ অবৈধ বলে দাবি করেন বক্তারা।
লিখিত অভিযোগ এবং স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠন নীতিমালা অনুযায়ী এক জন পুরুষ এবং এক জন মহিলা বিদ্যোৎসাহী সদস্য হতে হলে তাদের উভয়কে অবশ্যই ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর অভিভাবক হতে হবে। কিন্তু ক্লাস্টার কর্মকর্তা সুমন কুমার কুন্ডু এর বাড়ি একই জেলায় হওয়ায় ও একই কর্মস্থলে সুদীর্ঘ প্রায় ০৭ বছর কর্মরত থাকার সুবাদে ক্ষমতার অপব্যবহার এবং সরাসরি হস্তক্ষেপ করে নীতিমালা বহির্ভূতভাবে মোটা অংকের উৎকোচ গ্রহণের মাধ্যমে নির্বাচনী তপসীল ঘোষনা না করে অভিভাবক না হওয়া সত্বেও তার পছন্দের লোককে কমিটিতে বিদ্যোৎসাহী পুরুষ সদস্য হিসেবে কামরুল হাসান এবং বিদ্যোৎসাহী মহিলা সদস্য হিসেবে রেনুকা খাতুনকে মনোনীত করে কামরুল হাসানকে সভাপতি এবং মহিলা সদস্য রেনুকা খাতুনকে সহ-সভাপতি নির্বাচন করেছেন। যা সরকারি বিধি ভঙ্গ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের সামিল।
মানববন্ধনে ও অভিভাবক আব্দুল হাকিম বলেন, এটিইও সুমন কুমার কুন্ডুর কর্তব্য ও তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত প্রদান শিক্ষক তৌফিকুর রহমান মিলে কোন তপসীল ঘোষনা না করে মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেন করে কমিটি গঠন করেছেন। তারা বিদ্যালয়ের টাকা তছরূপ করার উদ্দেশ্যে এই কাজ করেছেন। ২০১৯ সাল থেকেই বিদ্যালয়টিতে অনিয়মের মাধ্যমে কমিটি গঠিত হয়ে আসছে। তাদের বিচারের দাবিতে এর আগে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে এবং মানববন্ধন করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হলো।
অভিযুক্ত সদ্য সাবেক সভাপতি কামরুল হাসানের ভাষ্য, প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়মকানুন সম্পর্কে আমার জানা নেই। সহকারি শিক্ষা অফিসার এবং তৎকালীন প্রধান শিক্ষক আমাকে সভাপতি হতে অনুরোধ করেছেন আমি সম্মতি দেওয়াই তারা আমাকে নির্বাচিত করেছে। দূর্নীতি ও অনিয়মের বিষয়টি তারা ভাল বলতে পারবে।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়টির তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও বর্তমানে সহকারী শিক্ষক তৌফিকুর রহমান গণমাধ্যমে কোন মন্তব্য করতে চাননি।
সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার সুমন কুমার কুন্ডু অনিয়মের মাধ্যমে কমিটি গঠনের বিষয়টি স্বীকার করেন এবং ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে দোষারোপ করে তিনি বলেন, বর্তমানে মন্ত্রণালয়ের একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে দেশের সকল বিদ্যালয়ের কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। সেই সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিয়ম না মেনে কমিটি গঠন করেছে। আমি বিষয়টি লক্ষ্য করিনি। ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনজুরুল আলম বলেন, ম্যানেজিং কমিটি গঠনে তাদের অনিয়মের বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি ইতিমধ্যে তদন্তাধীন রয়েছে। স্মারকলিপিটি তাদের নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের নিকট অগ্রায়ণ করা হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh