বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে ভোলার চরফ্যাসনের ১২ জন নিহত হয়েছেন। এদের একজন হলেন তারেক। দীর্ঘ এক মাস পর ঢাকা মেডিকেলের মর্গে তার লাশ পাওয়া যায়।বুধবার তাকে দাফন করা হয়েছে। তারেকের বাড়ি চরফ্যাসন উপজেলার ওমরপুর গ্রামে। বাবার নাম মো. রিয়াজ। তিনি ঢাকায় যাত্রাবাড়ী বিবির বাগিচা এক নম্বর গেট এলাকার একটি মেসে থাকতেন। সেখানে একটি টেইলার্সের কর্মচারী ছিলেন।
গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গিয়ে গুলিতে নিহত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। দীর্ঘ এক মাস ধরে পরিবার তার কোনো খবর পাচ্ছিলেন না। ১ সেপ্টেম্বর ঢাকা মেডিকেলের মর্গে তার লাশ পাওয়া যায়। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। বুধবার সকালে ৯নং ওয়ার্ডে তার পৈতৃক বাড়ি সংলগ্ন মসজিদ মাঠে দ্বিতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।
তারেকের চাচাতো ভাই মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, পরিবার গ্রামে থাকলেও একাই একটি মেসে থাকত তারেক। গত ৫ আগস্ট বেলা ১১টার দিকে নাস্তা করে সেখান থেকে বের হয় তারেক। দুপুর ১২টা ৩৭ মিনিটের পর থেকে তার ফোন বন্ধ পাচ্ছিলেন সহকর্মীরা। তবে তারাও বিষয়টি পরিবারকে জানাননি। আর তার সঙ্গে পরিবারেরও যোগাযোগ খুব কম হতো।
১৫ আগস্টের পর পরিবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে না পেয়ে তাদের মনে সন্দেহ জাগে। পরবর্তীতে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায়, হাসপাতালে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। ঢাকা মেডিকেলের বিভিন্ন ওয়ার্ডেও খোঁজা হয় তাকে। তবে কোথাও তার সন্ধান মেলেনি। পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে এসে সব বেওয়ারিশ লাশের ছবি তুলে স্বজনদের পাঠানো হয়। সেসব ছবির ভেতর লাশের হাতে আঙুলে থাকা আংটি দেখে নিহত হওয়ার প্রায় ১ মাস পর প্রাথমিকভাবে এই লাশ তারেকের বলে শনাক্ত করেন তারা। গত রবিবার গ্রাম থেকে তারেকের বাবা মো. রিয়াজ ঢাকায় আসেন। রবিবারই তাকে ঢাকা মেডিকেলের মর্গে সরাসরি লাশ দেখানো হয়। তিনিও তার ছেলের হাতের আংটিসহ হাত-পায়ের নখ, গালে ছোট গর্ত ও মাথার চুল দেখে তার পরিচয় নিশ্চিত করেন।
জানা গেছে, পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে বড় ছিল তারেক। স্থানীয় ইয়াকুব মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল সে। বাবা কৃষিকাজ করায় সংসারের অভাব অনটনের মধ্যে পড়াশোনার পাশাপাশি ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায় টেইলারিংয়ের কাজ করত তারেক।