× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

গুরুদাসপুরে এক'ই স্কুলের ১৯ ছাত্রীর বাল্যবিয়ে

মোঃ সোহাগ আরেফিন, (গুরুদাসপুর) নাটোর।

০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৫:২৬ পিএম । আপডেটঃ ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৬:২৬ পিএম

ছবিঃ সংগৃহীত (প্রতীকী ছবি)

দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর কয়েক দিন আগে শুরু হয় পাঠদান। তবে বিদ্যালয় খোলার পর দেখা যায়, অনেক ছাত্রী আসছে না। এক-দু’জন নয়, ১৯ জন ছাত্রী অনুপস্থিত। তারা সপ্তম, অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণিপড়ুয়া। তালিকা করে খোঁজ নিতে গিয়ে বেরিয়ে এলো উদ্বেগজনক তথ্য। ছুটির মধ্যে সবার বাল্যবিয়ে হয়ে গেছে। এমন ঘটনা ঘটেছে নাটোরের গুরুদাসপুর পৌর সদরের চাঁচকৈড় শাহীদা কাশেম পৌর বালিকা বিদ্যালয়ে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় বন্ধসহ নানা কারণে গত দুই মাসে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়েছে তাদের।

১৯ ছাত্রীর বাল্যবিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রধান শিক্ষক নেগার সুলতানা। বিদ্যালয় থেকে জানা গেছে, অপ্রাপ্ত বয়সী ছাত্রীদের বিয়ে হয়ে গেলেও শিক্ষক, জনপ্রতিনিধি, উপজেলা প্রশাসনসহ কিছু ক্ষেত্রে পাড়া-প্রতিবেশীরাও জানতে পারেননি। বিদ্যালয় খোলার পর ছাত্রীরা অনুপস্থিত থাকার কারণ খুঁজতে গেলে বিষয়টি জানাজানি হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে মেয়ের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে বিয়ে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন অভিভাবকরা।
বাল্যবিয়ে হওয়া অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীর বাবা পেশায় ভ্যানচালক। ভালো পরিবার থেকে বিয়ের প্রস্তাব আসায় রাজি হয়ে যান জানিয়ে তিনি বলেন, এখন মনে হচ্ছে, বিয়ে না দিয়ে পড়াশোনা করানো ভালো ছিল। নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া বাল্যবিয়ের শিকার আরেক ছাত্রীর বাবার ভাষ্য, তিনি মেয়েকে বাল্যবিয়ে দিতে চাননি। কিন্তু বিদ্যালয়ে যাতায়াতের সময় মেয়েকে উত্ত্যক্তের শিকার হতে হয়। প্রতিবেশী অনেক মেয়ে পছন্দের ছেলের সঙ্গে পালিয়ে গেছে। এসব ভেবে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন তিনি।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বাল্যবিয়ের শিকার ছাত্রীদের কয়েকজন এসএসসি পরীক্ষার্থী। অন্যরা ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির ছাত্রী। অভিভাবকরা তথ্য গোপন করে তাদের বিয়ে দিয়েছেন। তাদের সহযোগিতা করেছেন এক শ্রেণির বিবাহ রেজিস্ট্রার ও নোটারি পাবলিকের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। তারা জাল কাগজপত্র তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন।

প্রধান শিক্ষক নেগার সুলতানার তথ্য অনুযায়ী, বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী আছে প্রায় ১৫০ জন। এর মধ্যে দুই মাসে ১৯ জনের বিয়ে হয়েছে। এর আগেও বাল্যবিয়ে হয়েছে অনেক শিক্ষার্থীর। এ বিষয়ে গত ১৯ আগস্ট উপজেলা প্রশাসনের আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে তিনি অবগত করেছেন। সপ্তম শ্রেণির চার, অষ্টম শ্রেণির দুই, নবম শ্রেণির ছয় ও দশম শ্রেণির সাতজন বাল্যবিয়ের শিকার। আর তথ্য সংগ্রহ করলে এ সংখ্যা বাড়তে পারে। কারণ এখনও অনেকে বিদ্যালয়ে আসছে না।

নেগার সুলতানা বলেন, অভিভাবক সমাবেশের আয়োজন করলেও তারা আসতে চান না। এ সপ্তাহে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর বাড়ি গিয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে বিদ্যালয়ে সচেতনতামূলক সেমিনার করা হবে। উপজেলা প্রশাসন ও মহিলাবিষয়ক কার্যালয়ের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলবেন। 

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.