কুমিল্লার হোমনা উপজেলার বড় ঘাগুটিয়া গ্রামে চাঞ্চলকর খুনের আসামী আক্তার হোসেন ওরফে সুমনকে (২৭) গ্রেফতার করে হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। সে হোমনা পৌরসভার শ্রীমদ্দি চরেরগাঁও গ্রামের হক মিয়ার ছেলে।
গতকাল রবিবার দুপুরে কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার ও হোমনা থানার অফিসার ইনচার্জ প্রেস রিলিজের মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। প্রেস রিলিজে হত্যা কান্ডের মূল রহস্য উদঘাটন করে পুলিশ জানান, নিহত মাহমুদা আক্তার ও আসামী আক্তার হোসেন সুমন নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। উক্ত সম্পর্কের ভিত্তিতে নিহত মাহমুদা আক্তার মাঝে মাঝে আসামীর কাছ থেকে টাকা ধার নিতেন। ঘটনার কিছুদিন আগে মাহমুদা আসামীর কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা ধার চায়। আসামী পূর্বের ধারের ৩৫ হাজার টাকা না পেয়ে নতুন করে ধারের টাকা না দেওয়ায় মাহমুদা আসামীর মা-বাবাকে নিয়ে বিশ্রী ভাষায় গালাগালি করে। এতে আসামীর মনে প্রচন্ড রাগ ও তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
আরো জানান, পরবর্তীতে আসামী ধারের টাকা নেওয়ার জন্য তার বাড়িতে আসতে বললে আসামী আক্তার হোসেন সুমন ঐ দিন রাত ৯ টায় মাহমুদার ঘরে যায়। পরবর্তীতে আসামী আক্তারসহ সবাই ঘরে পিয়াজু, সিঙ্গারা ও আখ খায়। রাত অনুমান ১০ টার দিকে সাহাদ ও তিশা ঘুমিয়ে যায়।
এসময়ে আসামী মাহমুদার কাছে পুনরায় ধারের টাকা ফেরত চাইলে সে আবার আসামীর মা-বাবাকে নিয়ে বিশ্রী ভাষায় গালাগালি করে। মাহমুদা আসামী আক্তারকে সকালে টাকা দিবে বলে রাতে তার বাড়িতেই থাকতে বলে। মাহমুদা ঘুমিয়ে পড়লে আসামী তাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে। পরে রাত্রে মাহমুদাকে ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় হত্যা করে। পরবর্তীতে কোনো প্রমাণ না রাখার উদ্দেশ্যে সাহাদ ও তৃষাকেও ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় হত্যা করে। আসামী তাদের মৃত্যু নিশ্চিত করতে খাটের নিচে থাকা কাঠের ফাইল দিয়ে ৩ জনের মাথায় পিটিয়ে গুরুতর জঘম করে মৃত্যু নিশ্চিত করে।
উল্লেখ্য গত বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাতে উপজেলার ২নং ঘাগুটিয়া ইউনিয়নেরবড় ঘাগুটিয়া গ্রামে চাঞ্চল্যকর ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- বড় ঘাগুটিয়া গ্রামের মো. শাহপরানের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার (২৫), তার ৮ বছরের ছেলে শাহাদ এবং ভাতিজী নবম শ্রেণির ছাত্রী তিশা মনি (১৪)। রাতে নিহত মাহমুদা বেগমের পিতা হোসেন মিয়া বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে হোমনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেলে জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় হোমনা মেঘনা সার্কেল ও থানার অফিসার ইনচার্জের পরিকল্পনায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশের একটি দল তাকে আটক করে।