কুমিল্লার চান্দিনায় লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি এলডিপি’র নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের মাধ্যমে হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা এসব মামলা দায়েরে উৎসাহ দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) চান্দিনা পৌর এলাকার পশ্চিম বেলাশ^র আরএনআর পাম্প সংলগ্ন এলডিপি মহাসচিব সাবেক প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. রেদোয়ান আহমেদ এর কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে একান্ত আলাপচারিতায় এসব অভিযোগ করেন তিনি।
দলটির মহাসচিব বলেন- এলডিপি’র জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়েই বিএনপি এমন কাজ করছে। চান্দিনার মধাইয়া বাস স্টেশনে গত ৪ আগস্ট এর একটি ঘটনায় এলডিপি’র ১০ জনেরও বেশি নেতাকর্মীকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। যা একেবারেই ষড়যন্ত্রমূলক। কারণ আমার নেতাকর্মীরা সেদিন শিক্ষার্থীদের সমর্থন দিয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলো। অথচ মামলায় এলডিপি নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের মারধর করেছে বলে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে।
এলডিপি’র আসামীরা হলেন- উপজেলার বাতাঘাসী ইউনিয়ন গণতান্ত্রিক যুবদলের সভাপতি মো. নাছির উদ্দিন, শ্রীমন্তপুর গ্রামের ওয়ার্ড গণতান্ত্রিক যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ শহিদ, বরকইট ইউনিয়ন গণতান্ত্রিক যুবদলের সভাপতি এনামুল হক, এলডিপি কর্মী ও সমর্থক নাজিরপুর গ্রামের খোরশেদ আলম, অম্বরপুর গ্রামের মকবুল হোসেন, পরচঙ্গা গ্রামের মো. হোসেন সরকার, ইমরান মো. আশিক, মাহফুজ ভূইয়া, মারুফ ভূইয়া, জাকির হোসেন বক্সী।
এলডিপি মহাসচিব রেদোয়ান আরও বলেন- এলডিপি দীর্ঘদিন ধরে বিএনপি’র নেতৃত্বাধীন জোটে ছিলো। আওয়ামী সরকারের বিরুদ্ধে একসাথে রাজপথে থেকে আন্দোলন সংগ্রাম করেছে। সর্বশেষ আওয়ামী লীগ সরকার পতন আন্দোলনে আমরা বিএনপি’র সাথে যোগপদ আন্দোলন করেছি। কিন্তু চান্দিনা উপজেলা বিএনপি’র স্থানীয় নেতাকর্মীরা দলীয় ঐক্য বিনষ্ট করার পাঁয়তারা করছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চান্দিনার মধাইয়া বাস স্টেশনে গত ৪ আগস্ট এর একটি ঘটনায় গত ৩ সেপ্টেম্বর চান্দিনা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। পাশর্^বর্তী দেবিদ্বার থানার রাজামেহার গ্রামের মোরশেদ আলমের ছেলে সাইফুল ইসলাম রনি বাদি হয়ে ওই মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নং-৪/১৫৪। এতে চান্দিনা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. মেহেদী হাসান সোহাগসহ ৫৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ৮০ জনকে আসামী করা হয়। ওই মামলার ১০জন আসামীকে এলডিপি তাদের কর্মী বলে দাবি করছেন।
এব্যাপারে চান্দিনা উপজেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক আতিকুল আলম শাওন বলেন- ‘আমি ওই মামলার বিষয়ে কিছুই জানি না। উনি যা ইচ্ছে তাই বললে তো হবে না। আমার দাবি হচ্ছে উনি যে অভিযোগ করেছেন তা নিরপেক্ষভাবে যাচাই করে দেখা হোক।’ তিনি আরও বলেন- এই মামলার সাথে আমার বা আমাদের দলের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই।
এব্যাপারে চান্দিনা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সঞ্জয় কুমার সরকার বলেন, ‘মামলায় কোন আসামীকে এখনো গ্রেফতার করা হয়নি। তদন্ত চলমান রয়েছে। কেউ নির্দোষ হলে তদন্তেই বের হয়ে আসবে।’