সোনাপুর-কবিরহাট-কোম্পানীগঞ্জ (বসুরহাট)- দাগনভূঁইয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের বেহাল দশা, সড়কে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়ে জমেছে পানি। পাশাপাশি রয়েছে কাদামাটির স্তূপ। এতে জনজীবনে শুরু হয়েছে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ।যথাযথমানে উন্নীতকরণ, কোটি টাকা ব্যয়ের সড়কটিতে প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা, বিকল হচ্ছে যানবাহনের মূল্যবান যন্ত্রাংশ। দুর্ভোগে পড়ছে এই রুটে চলাচলকারী হাজার হাজার পথচারী, যাত্রী ও চালক। রোদ-বৃষ্টিতে তাদের দুর্ভোগ বেড়ে যায় আরও কয়েক গুণ।
এ অবস্থার জন্য সড়ক বিভাগের গাফিলতি ও নজরদারি এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দুষছেন স্থানীয়রা। তবে দ্রুত সমস্যা সমাধানের জনসাধারণের দৃষ্টি সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের প্রতি।
স্থানীয়রা জানান, বসুরহাট থেকে জেলা শহর মাইজদী দূরত্ব বড়জোর ২২ কিলোমিটার। সড়কটি পার হতে সময় লাগার কথা ৪০/৪৫ মিনিট। কিন্তু এখন দুই ঘণ্টায়ও পার হতে পারে না যানবাহগুলো। তারা বলছেন, সওজের নির্দেশনা ও তাগাদাও মানছে না ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দুটি।
সোনাপুর-কবিরহাট-কোম্পানীগঞ্জ(বসুরহাট)-দাগনভূঞা সড়কটি গুরুত্বপূর্ণ। স্থানীয়রা জানান, সড়কটি পার হতে সময় লাগার কথা কয়েক মিনিট। কিন্তু এখন কয়েক ঘণ্টায়ও পার হতে পারে না যানবাহগুলো।
সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালে দাগনভূঞা-কোম্পানিগঞ্জ-কবিরহাট-সোনাপুর সড়ক প্রসস্থকরণ উন্নীতকরণকাজের প্রকল্প পাস হয়।
সরেজমিনে সোনাপুর-কবিরহাট-কোম্পানীগঞ্জ (বসুরহাট)- দাগনভূঁইয়া আঞ্চলিক মহাসড়ক (আর-১৪৮) যথাযথমানে উন্নীতকরণ দেখা গেছে, গুরুত্বপূর্ণ এ আঞ্চলিক মহাসড়ক বেহাল। সড়কটিকে প্রশস্তকরণকাজ চলমান থাকায় সড়কের পাশে মাটি খুঁড়ে বড় বড় গর্ত করা হয়েছে। কোথাও গর্ত বালু দিয়ে ভরাটের কাজ চলছে, কোথাও জমাট বেঁধেছে পানি। আর এ পানির কারণে মূল সড়কের পিচঢালাই-খোয়া উঠে গিয়ে বড় বড় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে।
এ কারণে কাদামাটি স্যাঁতসেঁতে হয়ে আছে পুরো সড়কে। নোয়াখালী শহরে যাওয়ার বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় এই সড়ক দিয়ে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যানবাহন চলাচল অব্যাহত রয়েছে। এতে চালক, যাত্রী ও পথচারীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।
বসুরহাট-দাগনভূঞা সড়কে চলাচলকারী আবদুল খালেক, জাকির হোসেন, নজরুল ইসলাম, সুমাইয়া বেগমসহ ভুক্তভোগী কয়েকজন অভিযোগ করে বলেন, অফিস-আদালত, হাসপাতালসহ নানা গুরুতপূর্ণ প্রতিষ্ঠান অবস্থিত।
অপরদিকে কােম্পানীগঞ্জ উপজেলার জেলা শহর মাইজদীতে অবস্থিত। যে কারণে প্রতিনিয়ত আসতে হয় এখানে। বিকল্প সড়ক না থাকায় এ সড়কই ভরসা। কিন্তু তাদের খামখেয়ালিতে দিনের পর দিন ভুগছি আমরা।
তারা আরও বলেন, বসুরহাট থেকে সোনাপুর এবং জেলা শহর মাইজদীতে যেতে যেখানে আগে প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ মিনিট সময় লাগে, এখন সময় লাগে দেড় থেকে ২ঘন্টা সময়। আবার ভাঙা সড়কের অজুহাতে পরিবহনে আদায় করা হচ্ছে দ্বিগুণ ভাড়া। যে কারণে সময় ও অর্থ নষ্টসহ নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে আমাদের।
স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপচারিতা মাধ্যমে জানা যায়, সড়কে টেকসই কাজ হচ্ছে না জানিয়ে তারা বলেন, সড়কের কাজে নিম্নমানের পাথর, ইট ও বালু ব্যবহার করা হচ্ছে। কোথাও কোথাও সড়ক উন্নয়নের বক্স বৃষ্টির পানিতে বালুর পরিবর্তে মাটিতে ভরে যাচ্ছে। পাথরের জায়গায় ইট ঢুকিয়ে দিচ্ছে। সোনাপুর জিরো পয়েন্ট এলাকায় আরসিসি ঢালাইয়ের কাজে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের বাংলা রড, পরিমাণে কম দেওয়া হয়েছে সিমেন্ট। এসব অনিয়মে সড়ক বিভাগের তদারকির অভাব রয়েছে বলেও জানান ভুক্তভোগীরা।
সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক ইসমাইল, আবদুল করিম; বাসচালক জামাল উদ্দিন বলেন, এ সড়ক দিয়ে একবার সোনাপুর থেকে মাইজদী কিংবা মাইজদী থেকে বসুরহাট গেলে দ্বিতীয়বার আর যাতায়াত করতে মন চায় না। ভাঙা সড়ক দিয়ে চলতে গিয়ে প্রতিনিয়তই দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়। কখনো বিকল হয়ে যায় যানবাহন।
ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক নুর মোহাম্মদ বলেন, মাঝেমধ্যে মাঝ রাস্তায় কাদার মধ্যে রিকশা আটকে যায়। তখন যাত্রী নামিয়ে ঠেলতে হয়। আবার একটু বেশি ভাড়া আদায় করলেও লাভের চেয়ে দণ্ড বেশি হচ্ছে।
জনসাধারণের অভিযোগ হচ্ছে, প্রতিনিয়তই বড় গর্তগুলোতে ইট-বালু ফেলে খানাখন্দ পূরণ করা হচ্ছে। বৃষ্টির কারণে ইট-বালু সরে গিয়ে কাদামাটি আর পানি জমাট বাঁধছে। তবু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারবেন বলে আশা করছেন তিনি।
জনসাধারণ চাই সোনাপুর-কবিরহাট- কোম্পানীগঞ্জ(বসুরহাট)-দাগনভূঁইয়া আঞ্চলিক মহাসড়ক (আর-১৪৮) যথাযথমানে উন্নীতকরণ কাজ দ্রুত শেষ হোক। আমি গণমাধ্যম কর্মী হিসেবে জনসাধারণের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ সড়কটির সুবিধা ভোগ করুক জনসাধারণ।