দীর্ঘদিন বর্জ্য জমে খালের পানিপ্রবাহ বন্ধ ছিল লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ-হাজীগঞ্জ উপজেলায় প্রবাহিত ঐতিহ্যবাহী বিরেন্দ্র খালটি। খালের ভেতর বাঁশের খুঁটি পুঁতে অবৈধ ঘর তুলেছিলেন স্থানীয় প্রভাবশালী লোকজন। সামান্য বৃষ্টি হলেই খালের পাশে গড়ে ওঠা বাগানবাড়ি বস্তির ঘরগুলো ময়লা পানিতে ডুবে যায়। এবারের বন্যায় পুরো রামগঞ্জ উপজেলা ডুবে যায়। ময়লা অনেকটা পরিষ্কার করায় পানিপ্রবাহ বেড়েছে, তবে খাল থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। পানিপ্রবাহ স্বাভাবিক হয়ে এলে দুর্গন্ধ কমে আসবে বলে জানান স্বেচ্ছাসেবীরা। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও তরুণ-যুবকদের এমন কাজকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
অবশেষে গত (২৮ আগস্ট) থেকে রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শারমিন ইসলামের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এ কার্যক্রম শুরু করে রামগঞ্জ ব্লাড ডোনারস ক্লাবসহ বেশ কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা।স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর প্রচেষ্টায় খালটি পরিষ্কার করার উদ্যোগ নেওয়া হলে প্রায় দুই কিলোমিটার দীর্ঘ খালটি ১৫ দিন ধরে স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ-হাজীগঞ্জ উপজেলায় প্রবাহিত ঐতিহ্যবাহী বিরেন্দ্র খাল প্রায় দুই যুগ পর আবার প্রাণ ফিরে পাচ্ছে।
সাধারণ মানুষ এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, দীর্ঘদিন পর খালটি তার পুরনো রূপ ফিরে পাবে। খালটি রামগঞ্জ পৌর শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত। এক সময় খালের পানিতে গোসল করা ও গৃহস্থালির কাজ করা যেত, এমনকি খালটিতে ছোট- বড় নৌকাও চলত। কিন্তু দেড় যুগের বেশি সময় ধরে দখল ও দূষণের কারণে ঐতিহ্যবাহী খালটি এখন নালায় পরিণত হয়েছে। দুর্গন্ধের কারণে খালের কাছে দাঁড়ানো যায় না। স্বেচ্ছাসেবীদের উদ্যোগে খালের প্রাণ আবার ফিরে আসতে পারে বলে মনে করছেন তারা।
খাল পরিষ্কার করার কাজে অংশ নেওয়া রামগঞ্জ ব্লাড ডোনারস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা মাহমুদ ফারুক বলেন, দুই যুগের বেশি সময় ধরে খালটি সংস্কার করা হয়নি। এবারের বন্যায় ময়লা ও বর্জ্যের কারণে পানিপ্রবাহ আটকে গিয়ে অনেক মানুষ পানিবন্দি হন। আমরা গ্রামের যুবকরা একত্র হয়ে প্রাথমিকভাবে খালটি পরিষ্কারের উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করি, এর সুফল দ্রæতই পাওয়া যাবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, খালের কাজ সম্পূর্ণ শেষ হতে আরও কয়েক দিন সময় লাগতে পারে। তবে ইতোমধ্যে পানিপ্রবাহ কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় দুর্গন্ধ কমার আশ্বাস দিয়েছেন স্বেচ্ছাসেবীরা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শারমিন ইসলাম জানান, দীর্ঘদিন ধরে খালটির কোনো সংস্কার না হওয়ায় ময়লা ও বর্জ্য জমে পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়েছিল। এতে এলাকায় জলাবদ্ধতা ও দুর্গন্ধসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। অবশেষে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর প্রচেষ্টায় খালটি পরিষ্কার করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা মানুষকে বিভিন্নভাবে উপকৃত করবে।