ছবিঃ সংগৃহীত
নরসিংদীর ঘোড়াশাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মালামাল ক্রয়ের মাধ্যমে নিজ ভাইয়ের নামে ঠিকাদারী লাইসেন্স করে কোটি কোটি টাকা ভাগিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠছে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আলী ফিরোজের বিরোদ্ধে। নিজ দপ্তরে ক্ষমতার অপব্যবহার করে হাতিয়ে ইতিমধ্যে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা।
জানা যায়, দপ্তরের বিভিন্ন স্টেশনারী মালামালসহ অন্যান্য মালামাল ক্রয়ের জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নিযুক্ত করতে হয়। এই ঠিকাদারের মাধ্যমে সকল মালামাল ক্রয় করা হয়ে থাকে। এই নিজ দপ্তরের কাজ ভাগিয়ে নিতে গোপনে আপন ভাইয়ের নামে মা এন্টার প্রাইজ নামে তৈরী করেছেন ঠিকাদারি লাইসেন্স। আর এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে একের পর এক সরবরাহের কাজ ভাগিয়ে নিচ্ছেন। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিয়ম অনুযায়ী কোন কর্মকর্তা নিজে বা তার স্বজনদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ঠিকাদারির কাজে যুক্ত হতে না পারলেও বিগত আওয়ামী সরকারের মদতপুষ্ট কয়েকজন নেতা ইন্দনে এসব অনৈতিক অপকর্ম করে যাচ্ছেন অনেকেই। তবে আওয়ামী সরকার না থাকলেও দুর্নীনিবাজ কর্মকর্তাদের দুর্নীতি বন্ধ নেই। নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই একের পর এক কাজ হাতিয়ে নিচ্ছেন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উপ পরিচালক মোহাম্মদ আলী ফিরোজ। এতে করে সাধারণ ঠিকাদারদের মাঝে দেখা দিয়েছে চরম উত্তেজনা আর ক্ষোভ।
জানা যায়, ঘোড়াশাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটিতে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রতিবছর এই কেন্দ্রটিতে প্রশিক্ষণের বিভিন্ন সরঞ্জাম ক্রয়সহ উন্নয়ন কাজের বরাদ্ধ দেয় বিদ্যুৎ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। এসব কাজের বাস্তবায়নে দরপত্রের মাধ্যমে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গুলোকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তবে বেশির ভাগ কাজই হাতিয়ে নিচ্ছেন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আলী ফিরোজের আপন ভাই সাইফুল ইসলামের মালিকানাধীন মা এন্টারপ্রাইজ নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। মোহাম্মদ আলী ফিরোজ ২০১৭ সাল থেকে ট্রেনিং সেন্টারের দায়িত্বে রয়েছেন। দীর্ঘ ৭ বছর ধরে এই অনিয়ম করে যাচ্ছেন তিনি। এতে করে দরপত্রের কাজ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ ঠিকাদারগণ।
ঘোড়াশাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের খান ট্রেডার্সের স্বাত্তাধিকারী জহিরুল ইসলামসহ একাধিক ঠিকাদার জানান, উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আলী ফিরোজ দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন সময় কমিশন নিত। তবে এখন তিনি নিজেই আপন ভাইয়ের নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান খুলে কাজ ভাগিয়ে নিচ্ছেন। গত ৫ বছর ধরে তার প্রতিষ্ঠান মা এন্টারপ্রাইজ অধিকাংশ কাজ ভাগিয়ে নেয়। এতে করে সাধারণ ঠিকাদারদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এদিকে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন ২০০৮ অনুযায়ী কোন কর্মকর্তা নিজে বা তার স্বজনদের কেউ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ঠিকাদারির কাজে যুক্ত হতে পারবে না। একই সাথে দরপত্রের সাথে জড়িত মূল্যায়ন কমিটির কেউ কোন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পর্ক তৈরি করতে পারবে না। তবে উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আলী ফিরোজ এর উল্টো করেছেন। নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে দরপত্রের মূল্যায়ন কমিটিতে থেকেও নিজ দপ্তরের কাজ হাতিয়ে নিতে গোপনে ভাইয়ের মালিকানায় নিজেই খোলে বসেছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
ঘোড়াশাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের আঞ্চলিক হিসাব দপ্তরের উপ-পরিচালক (হিসাব) নূরজাহান বেগম জানান, গত ৫ বছরে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের দরপত্রের বেশিরভাগ কাজই পায় মা এন্টারপ্রাইজ। এসব কাজের অর্থ সংগ্রহে কোন সময়ই প্রতিষ্ঠানটির মালিক সাইফুল ইসলামকে দেখেননি তিনি। বিলের অর্থ সংগ্রহে প্রতিবারই অন্য ব্যক্তি লেনদেন করতেন।
এসব বিষয়ে অভিযুক্ত উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আলী ফিরোজ জানান, মা এন্টারপ্রাইজের সাথে তার কোন প্রকার সম্পর্ক নেই। ওই প্রতিষ্ঠানের মালিকের পরিচয়ের সাথে নিজের পিতা মাতার নাম ও ঠিকানা মিল থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন সেটা মিলতেই পারে। এদিকে ঘোড়াশাল প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের পরিচালক আরিফুর রহমান জানান, বিষয়টি তার জানা নেই। এবিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে সত্যতা পাওয়অ গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh