নাটোরের গুরুদাসপুরে নেশার টাকা জোগাড় করতে হারেজ আলী (৭৫) নামের এক বৃদ্ধকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এসময় গুরুত্বর জখম হন হারেজের স্ত্রী হলেদা বেগম (৬৫)। তিনি বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এঘটনায় নিহতের পরিবারে চলছে শোকের মাতম।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ভোর সাড়ে ৪ টার দিকে উপজেলার চাপিলা ইউনিয়নের বৃ-চাপিলা গ্রামে ওই ঘটনা ঘটে। নিহত হারেজ ওই গ্রামের মৃত ময়েন উদ্দিনের ছেলে। সেনাবাহিনীর সহযোগীতায় তিনজনকে আটক করেছে গুরুদাসপুর থানা পুলিশ। আটককৃতরা হলেন- চাপিলার আদর্শগ্রামের মো. ইউসুফ আলীর ছেলে মাসুদ (৩০), মো. মমিনের ছেলে সুমন আলী (৩০) ও মোজাফ্ফরের ছেলে মো. মনিরুল ইসলাম (২০)।
স্থানীয়রা জানায়- মাসুদ, সুমন, মনিরুলসহ তাদের সহপাঠীরা সবাই নেশাগ্রস্থ। তাদের অত্যাচারে আশ-পাশের সকল গ্রামের জনসাাধারন অতিষ্ঠ। তারা প্রতিনিয়ত নেশার টাকা জোগাড় করতে হাঁস, মুরগী, গরু ছাগল, টাকা-পয়সাসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র চুরি-ডাকাতি করে থাকে।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সুত্রে আরো জানাযায়- একটি পুকুর লিজ বাবদ গত সোমবার ৯ লাখ টাকা পান হারেজ আলী। মুলত সেই টাকা লুট করার উদ্দেশ্যে মঙ্গলবার ভোরে হারেজ আলীর বাড়িতে ঢুকে পাঁচজন দুর্বৃত্ত। বিছানার নিচে রাখা ৯ লাখ টাকা ও স্বর্ণ অলংকার লুটপাটের সময় বাধা দেওয়ায় দুর্বৃত্তরা হারেজ ও তার স্ত্রী হালেদা বেগমকে এলোপাতারিভাবে ছুরিকাঘাত করতে থাকে।
একপর্যায়ে তাদের ডাক চিৎকারে বাড়ির লোকজন ও এলাকাবাসী এগিয়ে গেলে নগদ টাকা ও স্বর্ণ অলংকার নিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এসময় মাসুদ নামের একজনকে আটক করে এলাকাবাসী। ঘটনাস্থলেই হারেজ আলীর মৃত্যু হয়। তার স্ত্রী হলেদা বেগমকে গুরুত্বর জখম অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
পরে স্থানীয়রা গুরুদাসপুর থানা পুলিশকে খবর দিলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহযোগীতায় সকাল ৮ টার দিকে হারেজ আলীর মরাদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনাস্থলেই এলাকাবাসীর হাতে আটক হওয়া মাসুদকে জিজ্ঞাসাবাদে সুমন ও মনিরুল নামে আরো দুইজনকে আটক করে পুলিশ। বাকী দুইজন পলাতক রয়েছে। টাকা ও স্বর্ণ অলংকার এখনও উদ্ধার হয়নি।
গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. উজ্জল হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পাওয়া মাত্রই এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) একরামুল হক বলেন, সেনাবাহিনীর সহযোগীতায় ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করা হয়েছে। আটককৃত মাসুদকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রেক্ষিতে তাৎক্ষনাত সুমন ও মনিরুল নামে আরো দুইজনকে আটক করা হয়েছে। আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে তৎপরতা চলছে।