মতলব চাঁদপুর,বিক্ষুব্ধ জনতার ভয়ে ৩টি মামলার আসামি সাবেক মন্ত্রী দীপু মনিকে চাঁদপুর আদালতে হাজির করা হয়নি। পুলিশের প্রস্তুতি থাকলেও আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষুব্ধ জনতার অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে গতকাল বুধবার তাকে চাঁদপুর আদালতে তোলা হয়নি। বিএনপি, জামায়েত এবং বঞ্চিত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাদের নানা প্রশ্নের জবাব পেতে দীপু মনির বিরুদ্ধে আদালত প্রাঙ্গণে অবস্থান নেবে এমন আশঙ্কার কথাই বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের হত্যাসহ নানান দুর্নীতি ও নেক্কারজনক কাজের দায়ে চাঁদপুর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী দীপু মনির বিরুদ্ধে ৩টি মামলা দায়ের করা হয় চাঁদপুর আদালতে। এসব মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানোর জন্য গতকাল বুধবার সকালে চাঁদপুর আদালতে হাজির করার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত হাজির করা সম্ভব হয়নি।জানাগেছে, দীপু মনিসহ আওয়ামী লীগ ও তার সিন্ডিকেটের লোকদের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত চাঁদপুর সদরে তিনটি মামলা হয়েছে। দুটি মামলার তদন্তে রয়েছেন মডেল থানার উপ পরিদর্শক মকবুল হোসেন এবং উপ পরিদর্শক লোকমান হোসেন। এরমধ্যে গত ১৮ জুলাই চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের বাড়ি মনিরা ভবনে হামলা ভাঙচুর ও আগুন দেয়ার ঘটনায় দীপু মনি ও তার ভাই টিপুকে হুকুমের আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়।দ্বিতীয় মামলা চাঁদপুর শহরের বাস স্ট্যান্ড এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে হামলার ঘটনায় দীপু মনি তার ভাই টিপু, সেলিম মাহমুদসহ ৬২৪ জনকে আসামি করে মামলা করেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবক নুরুল ইসলাম খান।তৃতীয় মামলা চাঁদপুর শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ডের পূর্ব-পশ্চিম পাশের সড়ক ভবন এলাকায় বেআইনিভাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা করেন মুক্তার আহমেদ।এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সিনিয়র আইনজীবী সলিমুল্লাহ সেলিম বলেন, গতকাল সকালে ৩টি মামলায় আসামি হিসেবে গ্রেফতার দেখানোর জন্য দীপু মনিকে চাঁদপুর আদালতে আনার কথা। কিন্তু দীর্ঘ ১৭ বছর তিনি ও তার সিন্ডিকেট মানুষকে অনেক হয়রানি করেছে। বিক্ষুব্ধ জনতা অপেক্ষায় আছে কবে তাকে আদালতে হাজির করা হবে। তিনি আরো বলেন, দীপু মনি ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে চাঁদপুরে বিএনপি জামাতের ২৩ নেতাকর্মী তার নির্দেশনায় পুলিশের হাতে প্রাণ হারিয়েছে। সেসব লোকদের পরিবারের সদস্যরা তার বিচার, দুর্নীতি ও সীমালঙ্ঘনের জন্য তাকে খুঁজছে। তিনি চাঁদপুরে রাজনীতির সোহার্দ্য ও সম্প্রীতি ধ্বংস করেছেন। প্রকৃত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও প্রবীণ আওয়ামী লীগের লোকজনরাও তাকে খুঁজছে এসব প্রশ্নের জবাব দিতে। অবস্থায় যদি কেউ এসে হামলা চালায় বা কোনো ঝামেলা করে তার দায়িত্ব কে নেবে? নিরাপত্তার জন্য আমার কাছে সহায়তা চেয়েছিল, কিন্তু নিরাপত্তা দেওয়ার আমি কে? তার নিরাপত্তা দেবে প্রশাসন আর আওয়ামী লীগ।’এ আইনজীবী আরো বলেন, সন্ধ্যা ৭টায় আদালত বসানোর একটা চেষ্টা ছিল। কোর্টের নিয়ম হলো ৯ থেকে ৫টা পর্যন্ত। তবে ম্যাজিস্ট্রেট যদি বসা থাকেন তাহলে কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত ইচ্ছা করলে চালাতে পারবেন। কিন্তু কারো জন্য বিশেষ সময়ে বিশেষ কোনো কোর্ট বসানো যাবে না। আইনি বিধান নেই। এটি নিয়ে আইনজীবী মহলেও আপত্তি আছে। বিশেষ কোর্ট বসাতে হলে প্রজ্ঞাপন লাগবে।’