কুমিল্লায় অদক্ষ চিকিৎসকের সিজারিয়ান অপারেশনে রাবেয়া আক্তার (৩৪) নামের এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। ওই ঘটনায় বুধবার (২ অক্টোবর) বিকালে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গাইনি বিভাগের প্রধান ডা. আসমা বেগমকে আহ্বায়ক করে বুধবার ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার রাতে জেলার চান্দিনা উপজেলার নবাবপুর টাওয়ার হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। ওই প্রসূতি চান্দিনা উপজেলার গল্লাই ইউনিয়নের পাঁচধারা গ্রামের আশিকুর রহমান আশুর স্ত্রী। এ ঘটনায় হাসপাতাল ছেড়ে পালিয়েছেন অভিযুক্ত চিকিৎসক সারোয়ার জাহানসহ সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জেলার চান্দিনা উপজেলার দোল্লাই নবাবপুর বাজারে ‘টাওয়ার হসপিটাল অ্যান্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গত মঙ্গলবার রাতে রাবেয়া আক্তার নামে এক প্রসূতি নারীর সিজারিয়ান অপারেশন করার ৩০ মিনিট পর ওই প্রসূতি মারা যান। এতে মৃত রোগীকে অপারেশন থিয়েটারে রেখেই পালিয়ে যান ওই চিকিৎসক সারোয়ার জাহানসহ সংশ্লিষ্টরা। খবর পেয়ে পুরো হাসপাতাল এলাকাজুড়ে বিক্ষুব্ধ জনতার ভিড় জমে।
ওই নারীর স্বামী আশিকুর রহমান আশু জানান, আমার স্ত্রীর প্রসব ব্যথা হলে মঙ্গলবার রাতে ওই হাসাপাতালে নিয়ে গেলে তার সিজারিয়ান ডেলিভারি করে ডা. সারোয়ার জাহান। কিছুক্ষণ পর আমাকে জানান, আমার স্ত্রীর আরও ওষুধ লাগবে, রক্ত লাগবে। পাঁচ মিনিট পর বলেন, দ্রুত অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে আসেন অন্য হাসপাতালে পাঠাতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমার স্ত্রীর কী সমস্যা হয়েছে জানতে আমরা ওটি রুমে প্রবেশ করতে গেলে তারা আমাদের কাউকে প্রবেশ করেতে দেয়নি। পরে জোর করে ওটি রুমে প্রবেশ করে দেখি তারা আমার স্ত্রীর মুখ ঢেকে রেখেছে। এ সময় ডাক্তারও ছিল না। পরে জানতে পারি, যিনি অপারেশন করেছেন তিনি একজন অদক্ষ চিকিৎসক।
হাসপাতালের সহকারী পরিচালক মো. সোহাগ সাংবাদিকদের জানান, প্রসূতি মারা গেলেও বাচ্চা সুস্থ আছে। বাচ্চাটি পাশের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি আছে। এটি একটি দুর্ঘটনা, অবহেলা নয়।
বুধবার রাতে জেলা সিভিল সার্জন ডা. নাছিমা আক্তার বলেন, হাসপাতালটির লাইসেন্সের মেয়াদোত্তীর্ণ। প্রতিবেদন পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।