মোল্লারহাট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ। ওয়াকফ্ সম্পত্তিতে বহুতল বিশিষ্ট এ মসজিদটি ঘিরে গড়ে ওঠেছে ছোট-বড় অসংখ্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। দূর-দূরান্ত থেকে চরাঞ্চলের গরু-ছাগলসহ গবাদি পশুপাখি এ স্থানটিতে কেনাবেচা হয় দেদারছে। এ হাটে মসজিদের নামে চাঁদা আদায় করে তা মসজিদ ও বাজার উন্নয়ন কাজে ব্যয় করা হতো, জানালেন সংশ্লিষ্টরা। তবে স্থানীয়রা বলছে, বাজারের স্থান পরিবর্তন করে সরকারিভাবে খাজনা আদায় করা হচ্ছে।
১৯৯২ সালে আদালতের রায়ের মাধ্যমে বাজারটি ইজারা বা খাজনা আদায়ে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করে ওয়াকফ স্টেটের বাদি আবদুর রশিদ মোল্লাকে দখলে থাকার অনুমতি দেয়া হয়। পরে ২৮ বছরের বেশি সময় পর আবদুর রশিদ মোল্লাকে বিবাদি করে মামলা দায়ের করলে তা তামাদি হিসেবে বাতিল করেন আদালত। এ দীর্ঘ সময় ধরে ওয়াকফ স্টেটের মসজিদটির মোতায়াল্লিল ও একে ঘিরে গড়ে ওঠা বাজারটির দেখভালো করেন আবদুর রশিদ মোল্লা।
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে একটি জনপ্রিয় হাট হচ্ছে মোল্লারহাট। এ হাটে ৩টি পয়েন্টে গরু, ছাগল ও ১টি মহিষের বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। পশু-পাখি কিংবা সবজি বিকিকিনি কোন অংশে কম নয়।
স্থানীয়রা বলেন, বাহার আলী ওয়াকফ্ এস্টেটের নামে এ বাজার। পশুর হাট থেকে যে টোল আদায় করা হয়। সেই টাকা মোল্লার হাট জামে মসজিদের উন্নয়ন কাজে ব্যয় করা হয়। বাজার সাপ্তাহিক শনিবার ও মঙ্গলবার। এ বাজারের সঠিক নাম হচ্ছে বাহার আলী মোল্লার হাট। বাহার আলী মোল্লার ছেলে আবদুর রশিদ মোল্লা মোল্লারহাট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের মোতায়াল্লিল হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এ হাটে জেলার বাহিরে নোয়াখালী, ভোলা, বরিশাল ও
শরীয়তপুরসহ বিভিন্ন জেলার খামারি ও বেপারীরা গরু নিয়ে আসে। এ হাট থেকে ১-২ কিলোমিটার দূরত্ব মেঘনা নদী। এজন্য নৌপথে গরু আনা নেওয়া খুব সহজ হয় খামারিদের।
চরবংশী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হারুন হাওলাদার বলেন, চলতি বছরের আগষ্টের মাঝামাঝিতে বাজার নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি হলে স্থান পরিবর্তন করে ব্যক্তিগত জায়গায় গেলো কয়েক বাজার থেকে খাজনা আদায় নিয়ে হট্টগোল বাধে। পরে বাজার উন্নয়ন কমিটির সভাপতি রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বাজারের শৃঙ্খলা ফেরাতে ব্যক্তি মালিকানা জায়গায় নগদ ইজারার টাকা পরিশোধ করে খাজনা আদায় করছেন।
এনিয়ে বক্তব্য জানতে একাধিকবার রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ দায়িত্বশীলদের সাথে যোগাযোগ করা হলেও এবিষয়ে কোন বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
ওয়াকফ স্টেটের বাদি ও মসজিদের মোতায়াল্লিল আবদুর রশিদ মোল্লা বলেন, আদালতের নির্দেশ অমান্য করে এধরনের খাজনা আদায় আদালত অবমাননার শামিল বলে দাবি করেন তিনি।
এদিকে চরবংশী ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো: আবদুস সাত্তার বলেন, এ বাজারে খাজনা আদায় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সমস্যার কথা শুনেছেন তিনি। বাজারের শৃঙ্খলা ফেরাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরকার নির্ধারিত খাজনা আদায়ের উদ্যোগ নিয়েছেন।