রংপুরে ধানখেত থেকে আবু সিয়াম (২০) নামে এক তরুণের লাশ উদ্ধার হয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার এক বন্ধুকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার সকালে গঙ্গাচড়া থানার বিনোদনকেন্দ্র ভিন্নজগতের পাশে খলেয়া ইউনিয়নের লালচাঁদপুর নয়াপাড়া এলাকার ধানখেত থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত আবু সিয়াম (২০) একই এলাকার আলতাব হোসেনের ছেলে। তিনি ভিন্নজগতে ফ্রিল্যান্সিং আলোকচিত্রী হিসেবে কাজ করতেন। বর্তমানে তার মামার ইট-বালুর ব্যবসা দেখাশোনা করেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকালে এক ব্যক্তি ভিন্নজগৎ এলাকার ক্যানেলের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তার মাঝে রক্ত ভেজা মাটি দেখতে পান। এসময় তিনি চারপাশে তাকাতেই দেখেন রাস্তার পার্শ্ববর্তী একটি ধানখেতে একজনের মরদেহ পড়ে আছে। তার পরনে শুধু লুঙ্গি ছিল।
খবর পেয়ে পুলিশ ও রংপুর সিআইডি এসে লাশে সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এ সময় লাশের পাশে একটি ভাঙা চাকু এবং একটি রক্তমাখা টি-শার্ট আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়।
ধারণা করা হচ্ছে, কে বা কারা তাকে হত্যা করে সেখানে ফেলে গেছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ময়না তদন্তের জন্য নিহতের মরদেহ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে আবু সিয়ামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির উঠানে বিলাপ করছেন মা সাদেকা বেগম। এ সময় তিনি সন্তান হারানো ব্যথায় আবেগী ভাষায় প্রলাপ করতে থাকেন।
নিহতের ভাগ্নে সোহাগ বলেন, রোববার সন্ধ্যায় আমি আর মামা একসঙ্গে ভিন্নজগৎ পার্ক হয়ে পাগলাপীর এলাকায় যাওয়া কথা ছিল। অর্ধেক রাস্তা যেতেই মামার মোবাইল ফোনে একটি কল আসে, এরপর আমি আর মামা পাগলাপীর না গিয়ে ভিন্নজগত পার্কের দিকে ফিরে আসি।
সোহাগ আরও বলেন, ভিন্নজগৎ এলাকায় (লাশ উদ্ধারের ঘটনাস্থল) আসার পর এক ব্যক্তির সঙ্গে মামা কথা বলেন। অন্ধকার থাকায় তাঁকে দেখতে পাননি। এরপর তাঁরা নানাবাড়ি গিয়ে রাতে খাবার খেয়ে ফের বের হন। একপর্যায়ে তাঁর মামা তাঁকে বলেন, মোবাইল ফোনে চার্জ নেই। বাড়ি গিয়ে চার্জার নিয়ে আসবেন। এরপর তাঁর মামা আর ফেরেনি। রাতে খোঁজাখুঁজি করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
রংপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) হোসাইন মুহাম্মদ রায়হান বলেন, লাশের গলায় ছুরির কয়েকটি খত পাওয়া গেছে। প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে, ছুরিকাঘাতে রক্তক্ষরণের কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তার ঘনিষ্ঠ এক বন্ধুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। কেন এই হত্যাকাণ্ড তা জানতে কাজ করছে পুলিশ। তদন্তে সব বেরিয়ে আসবে ইনশা-আল্লাহ্।