বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলায় আসামির তালিকায় নতুন করে আরও ৭ জনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাদের সম্পৃক্ততা এবং এজাহারকারীর দাখিল করা আলামত খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন আদালতের বিচারক।
গত ১৪ অক্টোবর শহীদ আবু সাঈদের ভাই রমজান আলীর করা হত্যা মামলায় আদালতে আবেদন করা হলে দাখিল করা ছবি ও সিসি টিভি ফুটেজ জব্দ ও গ্রহণের আদেশ দেওয়া হয়। মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তাজহাট আমলি আদালতের বিচারক মো. আসাদুজ্জামান গত ২৮ অক্টোবর বিকেলে ওই আবেদন মঞ্জুর করেন।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন আবু সাঈদ হত্যা মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী প্যানেলের অ্যাডভোকেট রোকনুজ্জামান রোকন। প্যানেলে থাকা অ্যাডভোকেট শামীম আল মামুন, কামরুন্নাহার খানম শিখা ও অ্যাডভোকেট রায়হানুজ্জামানও এর সত্যতা নিশ্চিত করেন।
নতুন সাত আসামি হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. হাসিবুর রশিদ, সাবেক প্রক্টর ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শরিফুল ইসলাম, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা শাখা) শাহ নূর আলম পাটোয়ারী, বিশ্ববিদ্যালয়ের চুক্তিভিত্তিক ও অস্থায়ী চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নূরুন্নবী, সুরতহাল প্রস্তুতকারী কর্মকর্তা এসআই তরিকুল ইসলাম ও সুরতাহাল রিপোর্টের প্রতিস্বাক্ষরকারী ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ সাদাত।
আইনজীবী অ্যাডভোকেট রোকনুজ্জামান রোকন বলেন, আদালতের এই আদেশের মাধ্যমে অজ্ঞাতনামা আসামিদের মধ্যে আবু সাঈদ হত্যা মামলায় সরাসরি সিসি টিভি ফুটেজে সম্পৃক্ততা পাওয়ায় আদালত সিসিটিভি ফুটেজ ও অন্যান্য প্রমাণপত্র, ছবি দেখে দীর্ঘ শুনানি শেষে ন্যায়বিচারের স্বার্থে তা খতিয়ে দেখার জন্য মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে আদেশ দেন।
গত ১৮ আগস্ট আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী বাদী হয়ে ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। ওই মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও অন্তত ১৩০ থেকে ১৩৫ জনকে। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) মামলাটির তদন্ত করছে। এ মামলায় দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ ২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ।
প্রসঙ্গত, গত ১৬ জুলাই পুলিশের গুলিতে নিহত হন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু সাঈদ। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রথম শহীদ। আবু সাঈদ নিহত হওয়ার পর সারা দেশে আন্দোলন ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এর ধারাবাহিকতায় গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়।