নড়াইলে গরু চোর সন্দেহে ৩ জনকে পিটিয়ে হত্যা করেছে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। বুধবার (৩০ অক্টোবর) গভীর রাতে সদরের তুলারামপুর ইউনিয়নের তুলারাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তুলরামপুর ব্রীজের পাশ থেকে ৩ জনের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতরা হলেন, বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ থানার আউলাদিপুর গ্রামের বেলাল উদ্দিন মোল্যার পুত্র নুরুন্নবী মোল্যা (৩৫), নড়াইল সদরের মাইজপাড়া গ্রামের জহিরুল ইসলামের পুত্র দুলাল (৩০) এবং জেলার লোহাগড়া থানার তেলকাড়া গ্রামের হাফিজুর রহমান শেখের পুত্র জান্নাতুল শেখ (৩০)। স্থানীয়রা জানান, গত ৫ মাসে পূর্ব ও দক্ষিন তুলারামপুর, আবাদ,দুর্বাজুড়ি গ্রাম থেকে ২৮টি গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে যার মূল্য কমপক্ষে ৩০ লাখ টাকা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি গ্রামে গরু চুরি বৃদ্ধি পাওয়ায় মঙ্গলবার রাতে বেতেঙ্গা গ্রামের হান্নু তরফদার গোয়াল ঘর পাহাড়া দিচ্ছিল। রাত ৩ টার দিকে বাড়িতে ৫ জনের গরু চোরের দল প্রবেশ করে চুরির প্রস্তুতি নেয়। এ সময় তিনি তুলারামপুর ও বেতেঙ্গা গ্রামের কয়েকজনকে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানায়। পরে স্থানীয় বিভিন্ন মসজিদে মাইকে ঘোষণা দিলে কয়েক গ্রামের ২-৩ হাজার মানুষ ওই এলাকা ঘেরাও করে গরু চোর সন্দেহে ৩ জনকে পিটিয়ে হত্যা করে। ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়। ঘটনাস্থল থেকে লোহা কাটা যন্ত্র, ধারালো দেশীয় অস্ত্র এবং একটি ফোন উদ্ধার করে এলাকাবাসী।
জানা গেছে, পূর্ব তুলারামপুর গ্রামের কলেজ শিক্ষক রেজাউল তরফদারের ২টি,আব্দুর রহিমের ৪টি,ফয়জুর মোল্যার ৪টি, সদর থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল ইসলামের ২টি, আবাদ গ্রামের প্রশান্ত বিশ্বাসের ৪টি,দক্ষিন তুলারামপুর গ্রামের শামিম সিকদারের ২টি,ফকরুজ্জমান মোল্যার ৩টি,নিজামউদ্দিন মোল্যার ১টি, আলমগীর মোল্যার ১টি এবং পার্শ্ববর্তী দুর্বাজুড়ি গ্রাম থেকে ২ জনের ৫টি গরু চুরি হয়।
তুলারামপুর গ্রামের কলেজ শিক্ষক রেজাউল তরফদার জানান, গত ৫ মাস আগে তার প্রথম গরু চুরি হয়। এ সময় দুবৃত্তরা আমাদের স্প্রে-এর মাধ্যমে অজ্ঞান করে ২টি বড়ো গরু নিয়ে যায়। এভাবে অধিকাংশ বাড়িতেই দুবৃত্তরা স্প্রে করে গরু চুরি করছে।
এ বিষয়ে নড়াইল সদর থানার ওসি সাজেদুল ইসলাম বলেন, স্থানীয়রা জানিয়েছেন, কয়েক গ্রামের ২-৩ হাজার মানুষ জড়ো হয়ে গরু চোর সন্দেহে ৩ জনকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। মৃতদের ময়না তদন্ত শেষে লাশ স্বজনদের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হবে এবং পরবর্তীতে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।