শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে (৩১ অক্টোবর) বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে দেশের সর্ববৃহৎ দুদিন ব্যাপী বার্ষিক তীর্থ উৎসব। নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী বারমারী সাধু লিও'র খ্রিষ্টান ধর্মপল্লীতে রোমান ক্যাথলিক খ্রিষ্টভক্তদের জন্য পর্তুগালের ফাতেমা নগরীর রূপে ও অনুকরনে স্থাপিত এই মা ফাতেমা রাণীর তীর্থস্থানে গতকাল (৩১অক্টোবর) ও আজ (১ নভেম্বর) এই বিশেষ উৎসবটি চলবে।
এবারের তীর্থে মুলসুর নির্ধারণ করা হয়েছে "সিনোডাল মন্ডলীতে মিলন,অংশগ্রহণ ও প্রেরণকর্মে ফাতেমা রাণী মা মারিয়া"। ১৯৯৮ সালে রোমান ক্যাথলিক খ্রিষ্টভক্তদের দাবীর প্রেক্ষীতে ভারত-বাংলা সীমান্ত ঘেঁষা পাহাড়ের মনোরম পরিবেশে তীর্থস্থানটি স্থাপন করা হয়। খ্রিষ্টধর্ম ময়মনসিংহে প্রদেশের লক্ষ্যে তৎকালীন প্রয়াত বিশপ ফ্রান্সিস গমেজ বারমারী সাধু লিও'র এই ধর্মপল্লীটিকে মা ফাতেমা রাণীর তীর্থস্থান হিসেবে ঘোষণা করেন। উক্ত তীর্থস্থানের প্রায় দুই কিলোমিটার পাহাড়ী টিলায় ক্রুশের পথ ও পাহাড়ের গুহায় ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪৮ ফুট উচ্চতার মা মারিয়ার মূর্তি স্থাপন করা হয়। খ্রীষ্টধর্মালম্বীরা এই স্থানটিকে তাদের পবিত্র স্থান হিসেবে মনে করেন এবং এখানেই প্রতি বছরের এই বিশেষ দিনে এসে তাদের ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী বিশেষ প্রার্থনায় অংশ নিয়ে থাকেন।
প্রতিবছরের ন্যায় এবারও তীর্থ উৎসবে মহাখ্রীষ্টযোগ, গীতি আলেখ্য,আলোর মিছিল,নিশীজাগরন,নিরাময় অনুষ্ঠান,পাপ স্বীকার,জীবন্ত ক্রুশের পথসহ নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদী অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত অনুষ্ঠানে খ্রীষ্টধর্মালম্বীরা নিজেদের পাপ মোচনে মোমবাতি জালিয়ে আলোর মিছিলে অংশগ্রহন করবেন। পাহাড়ী ক্রুশের পথ অতিক্রম শেষে মা মারিয়ার ৪৮ ফুট উচ্চতার মূর্তিটির সামনে সমাবেত হয়ে নির্মল হৃদয়ের অধিকারীনি,ঈশ্বর জননী, খ্রিষ্টভক্তের রাণী মা ফাতেমা রাণীর কর কমলে ভক্তি শ্রদ্ধা জানাবেন।
খ্রিষ্টানদের এ তীর্থোৎসবকে ঘিরে নিরাপত্তার বিষয়ে শেরপুরের পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম তীর্থের স্থান পরিদর্শন করেছেন এবং স্থানীয় আয়োজকদের কাছে প্রস্তুতির খোঁজ খবর নেন।
বারোমারী খ্রিষ্টান মিশনের ফাদার তরুন বানোয়ারী জানায়, তীর্থোৎসবের এবার অন্যান্য বছরের চেয়ে আরও বেশী অর্থাৎ প্রায় অর্ধ লক্ষ খ্রিষ্ট ভক্তের আগমনের আশা করছি এবং নিরাপত্তার ব্যাপারেও শতভাগ আশাবাদী।
এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম জানায়, পুলিশের পক্ষ থেকে সকল প্রকার নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। আমরা চাই উৎসবটি তারা নির্ভয়ে পালন করুক।