চলনবিলের ডুবে যাওয়া বিল জলাশয়ে প্রতিবছর-ই মাছ ধরার উৎসব চলে। পলো-বাওয়াসহ দেশীয় উপকরণে মাছ শিকার করেন স্থানীয় সৌখিন শিকারিরা। তবে এ বছর রংপুর-গাইবান্ধার ৫শ শিকারি পলো-বাওয়া হাতে এসেছিলেন চলনবিলের সিংড়া অংশে মাছ শিকার করতে।
মাছ ধরতে আসা ব্যক্তিরা জানালেন, বর্ষায় কানায় কানায় পূর্ণ থাকে চলনবিল। প্রচুর পরিমাণে দেশীয় মাছের দেখা মেলে। স্বাদেও অন্যন্য এই মাছ। এমন সব গল্প শুনেছেন ছোট বেলা থেকেই। দেশের বৃহৎ সেই বিলে মাছ শিকার করতে এসে হতাশ হয়েছেন তারা। দুই একজন ছোট বোয়াল, টাকি পেলেও বেশিরভাগ শিকারি মাছ পাননি। এতে তারা রিতিমতো হতাশ হয়েছেন।
চলনবিল নিয়ে লেখা বিভিন্ন প্রবন্ধ থেকে আত্রাই, নন্দকুঁজা, গুমানী, গুড়, করতোয়া, বড়াল, তুলসি চেঁচিয়া, ভাদাই, চিকনাই, বানগঙ্গা, নবীরহাজির জোলা, হকসাহেবের খাল, নিমাইচড়াখাল, বেশানীরখাল, গুমানীখাল, উলিপুরখাল, সাঙ্গুয়াখাল, দোবিলাখাল, কিশোরখালির খাল, বেহুলারখাড়ি, বাকইখাড়া, গোহালখাড়া, গাড়াবাড়ি খাল, কুমারভাঙ্গাখাল, জানিগাছার জোলা, সাত্তার সাহেবের খাল, কিনু সরকারের ধরসহ অসংখ্য নদী-নালা খাল অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। অথচ এসব উৎসেই প্রচুর পরিমাণে দেশীয় মাছের দেখা পাওয়া যেত।
চলনবিল সংশ্লিষ্ট মৎস্য অফিসগুলোর দেওয়া তথ্যমতে, চলনবিল অঞ্চলে ১৭৫৭ হেক্টর আয়তনের ৩৯টি বিল, ৪২৮৬ হেক্টর আয়তন বিশিষ্ট ১৬টি নদী এবং ১২০ বর্গ কিলোমিটার আয়তন বিশিষ্ট ২২টি খালে মিঠাপানির ১৩০ প্রজাতির মাছ পাওয়া যেত। সেই মাছ কমে ৭৯ প্রজাতিতে নেমে এসেছে। বিলুপ্ত হয়েছে ধোঁদা, গুড়পুঁই, বাছা, ব্যাইটকা, গজার, শিলং, দুই প্রজাতির ট্যাংড়া, ভেদা, শংকর, ফাঁদা, টিপপুঁটি, পানি রুইয়ের মতো ১১ প্রজাতির মাছ। খুব কম দেখা মেলে মেনি, পুঁইয়া, চিতল, ফোলি, চিংড়ি, ভেদা, বেলে, পাবদা, কাঁচকি, চাঁদা, মলা-ঢেলা, দাঁড়কিনা, বৌমা, ঘাড়ুয়া, ভাঙ্গন, কালিবাউশ, বাঁশপাতা, পাঙাসসহ অন্তত ৫০ প্রজাতির মাছের।
রংপুরের পীরগঞ্জের শামীম, গাইবান্ধার গয়েশপুর গ্রামের রফিক, পলাশবাড়ির আব্দুর রশিদ ট্রাক ভাড়া করে চলনবিলে মাছ ধরতে এসেছিলেন। তারা জানান, চলনবিলের মাছের গল্প শুনে শখের বসে ট্রাক ভাড়া করে এসেছিলেন মাছ শিকার করতে। চার ঘণ্টা ধরে কয়রাবাড়ি এলাকায় পলো ফেলে মাত্র দুজন দুটি ছোট বোয়াল পেয়েছেন। তাদের মতো কয়েকশ শিকারি ট্রাকে এসেছিলেন মাছ ধরতে। কিন্তু ফিরেছেন খালি হাতে।
স্থানীয়রা বলেন, নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারী জালে অবাদে মাছ শিকার করায় হুমকির মুখে পড়েছে দেশীয় মাছের প্রজনন। এসব কারণেই দূরের শিকারিরা কয়েক ঘন্টা চেষ্টা করেও মাছের দেখা পাননি।
নাটোরের মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, গাইবান্ধা ও রংপুর থেকে কিছু সৌখিন মাছ শিকারি চলনবিরের নাটোরে মাছ শিকার করতে এসেছিলেন। পানি বেশি থাকায় শিকারিরা কাঙ্খিত মাছ পাননি।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh