রংপুরের পীরগঞ্জে চাচা রাজ্জাক মন্ডল ও ভাতিজা রফিকুল ইসলামকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় দুই আপন ভাইয়ের মৃত্যুদন্ড ও এক জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। রায় ঘোষনার সময় আসামীরা আদালতে উপস্থিত ছিলো। পরে তাদের কঠোর পুলিশী পাহারায় আদালতের হাজত খানায় নেয়া হয়।
রোববার (৩ নভেম্বর) দুপুরে রংপুরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ ফজলে খোদা মো. নাজির এ রায় প্রদান করেন। মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত দুই ভাই হলেন হারুন মন্ডল ও আব্দুর রশীদ ওরফে নান্নু মন্ডল এবং অপর যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আসামী হলেন আকমল হোসেন।
মামলার বিবরনে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৮ জুলাই সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে পীরগজ্ঞ উপজেলার দুবরাজপুর মজিলা তাহেরপুর গ্রামে নিজের জমিতে আব্দুর রাজ্জাক মন্ডল ও তার ছোটভাই সামসুল মন্ডল শ্যালো মেশিন দিয়ে জমিতে পানি সেচ দিচ্ছিলো। এমন সময় পুর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তাদের জমিতে সেচ দিতে বাঁধা দেয়। বাঁধা না মানায় কোদাল দিয়ে কুপিয়ে গুরতর আহত করে হারুন মন্ডল ও আব্দুর রশীদ ওরফে নান্নু মন্ডল এবং আকমল হোসেন। এ সময় তাদের আত্মচিৎকারে ভাতিজা রফিকুল ইসলাম এগিয়ে আসলে তাকেও কোদাল দিয়ে কুপিয়ে আহত করে। পরে আহতদের উদ্ধার করে পীরগজ্ঞ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করার পরামর্শ দেয়। হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আব্দুর রাজ্জাক মন্ডলকে মৃত ঘোষনা করে। অন্যদিকে আহত রফিকুল ইসলামও চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
এ ঘটনায় নিহত আব্দুর রাজ্জাক মন্ডলের মেয়ে আরিফা বেগম বাদী হয়ে হারুন মন্ডল, রশীদ মন্ডল ও আকমল হোসেনের বিরুদ্ধে পীরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে।
দীর্ঘদিন চলা মামলায় ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা শেষে হারুন মন্ডল ও তার ভাই রশীদ মন্ডল ওরফে নান্নুকে মৃত্যুদন্ড এবং আসামী আকমল হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দেয় আদালত।
এ ব্যাপারে সরকার পক্ষে আইনজীবী আফতাব উদ্দিন আহাম্মেদ জানান, প্রকাশ্য দিবালোকে চাচা ভাতিজাকে কোদাল দিয়ে কুপিয়ে নৃশংস ভাবে হত্যার ঘটনায় ডাবল মার্ডার মামলায় সাক্ষীরা আদালতে সাক্ষ্য দিয়ে প্রমান করেছেন। ফলে বিজ্ঞ বিচারক দুই জনকে মৃত্যুদন্ড ও এক জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন। ন্যায় বিচার পেয়েয়ে বলে জানান তিনি।
অন্যদিকে রায় ঘোষনার সময় আসামী পক্ষের কোন আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।