× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

লালমনিরহাটে আদালত ভবন সংকট; বিচারকাজ ব্যাহত

বাড়ছে মামলা জট

মিজানুর রহমান মিজান, লালমনিরহাট প্রতিনিধি।

১৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪:৫২ পিএম

ছবিঃ সংবাদ সারাবেলা

লালমনিরহাটে চীফ জুডিসিয়াল  ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের অভাবে ও এজলাস সংকটে ব্যাহত হচ্ছে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচার কার্যক্রম। এতে দীর্ঘ হয়ে উঠছে মামলা জট। ভোগান্তীতে পড়ছেন বিচার প্রার্থী মানুষ নিজস্ব ভবন না থাকায় জেলা জজ আদালত ভবন, আদালত ভবনের বারান্দায় অস্থায়ী অবকাঠামো তৈরি করে ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ভবনের কয়েকটি কক্ষে  চলছে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচার কার্যক্রম। এসব কক্ষের কোন কোন  এজলাস চলছে আবার পালা বদল করে।

২০০৭ সালের ১ লা নভেম্বরে বিচার বিভাগ আলাদা হওয়ার পর ফৌজদারি বিচারকাজ পরিচালনার জন্য আলাদা বিচারক এবং এজলাসের প্রয়োজন হয়।জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন তৈরি না হওয়ায় তখন থেকে ফৌজদারি বিচারকাজে নানা সমস্যা তৈরি হয়।  জেলাবাসী দ্রুত বিচার এবং ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হতে থাকেন। ভবন না থাকায় জেলা জজ আদালতের বারান্দাকে এজলাস বানিয়ে বিচারকাজ চালাতে হচ্ছে।  একই এজলাস দিনে দুই বা তিনজন বিচারক ধারাবাহিকভাবে কাজ করেন।একই খাস কামরায় দু-তিনজন বিচারক বসায় গোপনীয়তা রক্ষা করা ও মামলায় রায় ঘোষণা করার মত গুরুত্বপূর্ণ কাজে জটিলতা সৃস্টি হয়। নিজস্ব ভবন না থাকায় আদালতের অন্যান্য কর্মচারী গাদাগাদি করে বসে কাজ করেন।একই রুমে ছোট ছোট চেয়ার টেবিল নিয়ে  গাদাগাদি করে বসেন। অপর দিকে নথি সংরক্ষণ করা ও মামলার আলামত, বিভিন্ন ধরনের যানবাহন রোদ বৃষ্টিতে নস্ট হ'য়ে যাচ্ছে।

এ ছাড়া জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নিচে কয়েকটি কক্ষে আদালত বসায় এক এজলাস থেকে আরেক এজলাসের দূরত্ব প্রায় ২০০ মিটার এতে কোন বিচারক কোন এজলাসে কখন উঠবেন তা বুঝতে প্রায়ই সমস্যা হয়। এটি সঠিক ভাবে না জানার কারণে অনেক বিচারপ্রার্থীরা এসে সারাদিন থেকে সন্ধ্যায় মামলার নতুন তারিখ নিয়ে বাড়ি ফিরেন।

আইনজীবী অ্যাডঃ নজরুল ইসলাম রাজু (পিপি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত) জানান, বিচারক যথাসময়ে এজলাসে বসতে পারেন না এজলাস সংকট থাকায়, এমনকি বিচার প্রার্থীরা ভালোভাবে বসার জায়গা পান না,চীফ জুডিসিয়াল আদালত ভবন নির্মিত হলে বিচার কাজ দ্রুত সময় শেষ করা সম্ভব হবে ও বিচার প্রার্থীদের ভোগান্তি কমবে,ন্যায় বিচার পেতে সুবিধা হবে। আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী সমিতি এ্যাড ফজলুল হক সরকার জানান, দীর্ঘদিন থেকে আমরা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কক্ষে মামলা পরিচালনা করছি, আর এজলাস সংকটে বিচারক গণ শিফট করে বসে বিচার কাজ পরিচালনা করেন। সরকার দ্রত ভবন নির্মাণ করলে দুর হবে এ সমস্যা গুলো।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ১ হাজার ১২০টি, অতিরিক্ত জেলা জজ আদালতে ৯৯২টি, যুগ্ম জেলা জজ আদালতে ৩ হাজার ৬০৪টি, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৭ হাজার ৮৮ টি, সহকারী জজ আদালতে ৬ হাজার ৫৫৪ টি এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে ২ হাজার ৪৭২ টি মামলা বিচারাধীন। আর ২২ জন বিচারক থাকার কথা থাকলেও রয়েছে মাত্র ১৭ জন। তবে মামলার হিসেব অনুযায়ী জেলায় কমপক্ষে ২৫ জন বিচারক প্রয়োজন বলে মনে করেন আইনজীবীরা। ভবন সংকটে বাড়ছে মামলা জট ভোগান্তিতে পড়ছে বিচার প্রার্থীরা।

পাটগ্রাম উপজেলা থেকে আসা বিচারপ্রার্থী শহিদুল্লাহ প্রধান( ৫৮) মোঃ আবদুল্লাহ ইসলাম (৬৪) জানান, তারা হাজিরা দিতে ভোর ৫টায় ট্রেনে করে লালমনিরহাট শহরে আসেন বিচার কাজে দেরি হওয়ায় বাসায় ফিরতে মধ্য রাত হয়ে যায়, কখনো খেয়ে না খেয়ে দিন চলে যায়। হাতিবান্দা উপজেলার বাসিন্দা, আব্দুল বারী মামলা নং ৮২/২৪ জানান, এজলাসে যায়গা না থাকায় বাহিরে দাঁড়িয়ে থাকি হাজিরার ডাক ভালমতো শুনতে না পারার মামলার নতুন তারিখ পড়ে যায়। এতে আমাদের খুব ভোগান্তি হয়ে যায়। তাদের মত আরো বিচার প্রার্থী জহুরুল ইসলাম, সৈয়দ আলী,একই অভিযোগের কথা বলেন।

আদালতের সুত্র হতে জানা যায়, বাংলাদেশের অন্যান্য জেলায় চিফ জুডিসিয়াল আদালত ভবন থাকলেও এ জেলায় নেই। চীফ জুডিসিয়াল ভবনের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হলেও এখন পর্যন্ত টাকা বরাদ্দ না হওয়ায় কাজও আরম্ভ হয়নি। সংশ্লিষ্টদের মতে, আলাদা এজলাস ও খাস কামরা থাকলে দ্রুত বিচারকাজ নিষ্পত্তি হতো। ফলে বিচার বিভাগে আসত গতিশীলতা।

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.