× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

উপকূলে লবণ নিয়ে সিণ্ডিকেট সক্রিয়

শীতের শুরুতে লবণের দাম কম; হতাশ লবণ চাষি

হোবাইব সজীব, কক্সবাজার প্রতিনিধি।

২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬:১৭ পিএম

ছবিঃ সংগৃহীত

অনেক চাষি আগাম লবণ চাষ শুরু করলেও লবণ সিণ্ডিকেট সক্রিয় থাকায় তাদের খপ্পরে পড়ে লবণের নায্যমূল্য পাচ্ছে উপকুলের হতবাগা লবণ চাষিরা। সিণ্ডিকেট না ভাঙলে লবণ চাষিদের দুঃখ দুর্দশা কেটে উঠবেনা বছরের পর বছর।

কক্সবাজারের চৌফালন্ডি ও দ্বীপ উপজেলার কুতুবদিয়া গ্রামের আশপাশে রোদে ফেটে চৌচির জমি দেখে বোঝা যায় লবণ চাষের মৌসুম এসে গেছে। তবে বাজারে এই গুরুত্বপূর্ণ নিত্যপণ্যের দাম কম হওয়ায় হতাশ লবণ চাষিরা।

চাষিদের ভাষ্য, গেল বার অনুকূল আবহাওয়ায় দেশে রেকর্ড পরিমাণ লবণ উৎপাদিত হয়েছিল। তবে আগের মৌসুমের অপরিশোধিত লবণ অবিক্রিত থাকায় এ বছর বাজারে এর দাম কম।

গত বছর লবণের মোট উৎপাদন হয়েছে ২৪ লাখ ৩৮ হাজার টন। গত ৬২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এবারও আবহাওয়া অনুকূলে থাকলেও উপকূলীয় এই জেলার অনেকে লবণ চাষে আগ্রহী নন। বিশেষ করে অনেকের হাতে অবিক্রীত লবণ মজুদ আছে।

কুতুবদিয়া দ্বীপে গিয়ে দেখা যায়, কালো পলিথিনে ঢাকা লবণের স্তূপ মাঠজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। অন্যদিকে শীতের আগমনী বার্তার শুরুতে চাষিরা লবণ মাঠের পরিচর্যা ব্যস্ত রয়েছেন। কেউ লবণ ডিঙ্গি নৌকা করে ঝুঁড়িতে করে ট্রাকে ভরছেন।  আর কেউ লবণ মাঠ সমান করার কাজ করছেন। কেউ কেউ লবণ মাঠে পলিটিন দিচ্ছেন।

চাষিরা জানিয়েছেন, নভেম্বর থেকে মে পর্যন্ত ছয় মাস লবণের মৌসুম। তাদের হাতে আগের মৌসুমের লবণ আটকে আছে।

লবণ চাষিরা বলেন, 'তিন মাস আগে যে দাম পেয়েছিলাম এখন তা পাচ্ছি না। তখন মনপ্রতি লবণের দাম ছিল ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা। এখন প্রতি মন লবণ ৩১০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। প্রায় এক লোকসান হচ্ছে লবণ বিক্রি করতে গিয়ে।'

কক্সবাজার সদর উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের পাইকারি বিক্রেতা মো. সরওয়ার কামাল  বলেন, 'চাষিদের কাছ থেকে প্রতি মন লবণ ৩১০ টাকায় কিনেছি।'

এরপর তিনি লবণ কারখানায় তা বিক্রি করেছেন মনপ্রতি ৪০০ টাকায়। পরিবহন ও শ্রমিকদের খরচ বিবেচনায় নিলে প্রতি মনে তার মুনাফা হয়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা। তিনি জানান, আগের মৌসুমের লবণ মজুদ থাকায় কারখানাগুলো বেশি দামে লবণ কিনতে রাজি হয়নি। সরওয়ার কামাল মনে করেন, 'বাজারের যে অবস্থা তাতে বোঝা যায় নতুন লবণের দাম গত বছরের তুলনায় অনেক কম হবে।'

কুতুবদিয়ার লেমশীখালী এলাকার লবণ চাষি আব্দু রহিম জানান, বর্তমান দামেও তারা লবণ বিক্রি করতে পারছেন না।

তিনি বলেন, 'এক কানি জমি থেকে এক মৌসুমে প্রায় ৩০০ মন লবণ পাই। এ বছর ইজারা, শ্রমিক, পলিথিন ও পানিসহ মোট খরচ হবে প্রায় এক লাখ টাকা। তাই প্রতি মন ৩৩৩ টাকা পেলেই খরচ উঠবে। এর কম হলে লোকসান হবে।'

কিন্তু তারা কেউই কাঙ্ক্ষিত দামে লবণ বিক্রি করতে পারেননি। উত্তর ধুরুংয়ের এক কৃষক জানান, ওই এলাকায় এখন ২৩০ টাকা মন দরে লবণ বিক্রি হচ্ছে। এতে অনেকেই হতাশ।

আলী আকবর ডেইল এলাকার চাষি জয়নাল আবেদীন বলেন, গত কয়েক বছর লবণের টানা দাম পাওয়ায় মনে হচ্ছে সিণ্ডিকেট করে ব্যবসায়ীরা দাম কমিয়ে চাষীদের লবণ উৎপাদনে নিরুৎসাহিত করছে। এতে লক্ষ পুরণ না হলে,  লবণ সংকট দেখিয়ে বিদেশ থেকে আমদানির পরিকল্পনা করা হচ্ছে হয়তো। লোকসানে লবণ বিক্রি হচ্ছে দেখে বহু চাষি জমির পরিমান কমিয়ে দিচ্ছেন। তাতে লবণ উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা পুরণ না হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। 

অপরদিকে দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীতে দালাল সিণ্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে প্রান্তিক লবণ চাষিরা। ৪০ কেজিতে মন হলেও সেখানে ৪৮ কেজিতে মণ। চাষিদের ঠকিয়ে ৮ কেজি বেশি নিচ্ছেন দালালরা। তাদের সংস্কার করার দাবি জানিয়েছেন লবণ চাষীরা।

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিআইসি) সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজারের ৬৯ হাজার একর জমি থেকে ২৬ লাখ টন অপরিশোধিত লবণ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
দেশে লবণের বার্ষিক চাহিদা প্রায় সাড়ে ২৫ লাখ টন।

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.