যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে নির্যাতন করে কাতারে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে জামালপুরের মাদারগন্জ উপজেলার ফুলারপাড় গ্রামের আমির উদ্দিন শেখের ছেলে আল আমিন (৩৪) এর বিরুদ্ধে। যৌতুকের দাবী মেটাতে না পারায় প্রায় সব সময় আল আমিন ও তার পরিবারের নির্যাতনের স্বীকার হতো তার স্ত্রী মিতু খাতুন।
এ ঘটনায় গত ১৯ সেপ্টেম্বর জামালপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ২ নং আমলী আদালতে স্বামী আল আমিনকে প্রধান আসামী করে ৪ জনের বিরুদ্ধে মিতু খাতুন পিটিশন মামলা দায়ের করলে আদালতের সিনিয়র জেলা জজ বিচারক মোঃ শহিদুল ইসলাম পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)কে তদন্ত করে প্রতিবেদন পাঠানোর নির্দেশ দেন। মামলায় অন্যান্য আসামীরা হলেন আল আমিনের বাবা আমির উদ্দিন(৬০) , মা মোছাঃ রেখা(৫৫) ও বড় ভাই আকরাম সেক (৪০)।
তবে মামলাটির তদন্ত চলছে বলে বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) জামালপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর এসআই মেসবাউল ইসলাম জানিয়েছেন ।
মামলা সুত্রে জানা গেছে , ২০১১ সালের ২৫ আগস্ট মাদারগন্জ উপজেলার ফুলারপাড় গ্রামের আমির উদ্দিন শেখের ছেলে আল আমিন (৩৪) এর সাথে চর গোলাবাড়ী গ্রামের মোঃ শাহজাহান মন্ডলের মেয়ে মোছাঃ মিতু বেগম (৩৪) এর বিবাহ হয় । মেয়ের সুখের চিন্তা করে ৩ লাখ ১০ হাজার টাকার মালামাল ও নগদ ১ লাখ টাকা প্রদান করে মিতুর পরিবার। তাদের সংসারে নিঝু (১০) ও মুরসালিন (৪) বছরের পুত্র সন্তান রয়েছে। বিবাহের পর থেকেই শুশুড় ও শাশুড়ী এবং ভাসুরের কু প্ররোচনায় মিতুকে বিভিন্ন সময় যৌতুকের জন্য অত্যাচার ও জালা যন্ত্রণা শুরু করতে থাকে আল আমিন।
গত ৮ আগস্ট মিতুকে শুশুড় আমির উদ্দিন,শাশুড়ী মোছাঃ রেখা,ভাসুর আকরাম সেক ও স্বামী আল আমিন নির্যাতন করে বাড়ী থেকে বের করে দেয় । এদিকে দেশে ছাত্র আন্দোলনের ফলে মাদারগন্জ সরকারী হাসপাতালে কার্যক্রম স্থবির থাকায় মিতুর শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখে জামালপুর বেসরকারী প্রাইভেট হযরত শাহ জামাল (রহঃ) জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে মিতুর পরিবার। আপোষ মিমাংসার নামে নানা তালবাহানা করে গত ১৮ আগস্ট দেশ থেকে পালিয়ে কাতারে চলে যায় আল আমিন আমির উদ্দিন।
এ বিষয়ে আল আমিন এর পরিবারের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তারা কোন কথা বলতে রাজি হননি ।
এদিকে মিতু বিচার চেয়ে সাংবাদিকদের জানান, আমাকে বিভিন্ন সময় যৌতুকের জন্য শ্বশুর ,শাশুড়ী এবং ভাসুর ও আমার স্বামী মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করত। গত ৮ আগস্ট আমাকে ব্যাপক মারধুর করা ওরা। আমার পরিবার আমাকে জামালপুর বেসরকারী প্রাইভেট হযরত শাহ জামাল (রহঃ) জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করান । পরে সুস্থ হলে শুশুড় বাড়ীর লোকজন আপোস মিমাংসার নামে সময় কাল ক্ষেপন করে আমার স্বামীকে বিদেশে পাঠিয়ে দেয়। আমি কোর্টে মামলা করেছি। আমার শুশুড় বাড়ীর লোকজন তদন্ত প্রতিবেদন থেকে তাদের নাম বাদ দেওয়ার জন্য বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করছে। সঠিক তদন্ত প্রতিবেদনের মাধ্যমে আমাকে নির্যাতন করা শুশুড়,শাশুড়ী ,ভাসুর ও আমার স্বামীর বিচারের দাবী জানাই। আমার ২ টি সন্তানেরও খোজ খবর নিচ্ছে না। আমার স্বামীকে আইনগত ভাবে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করা হোক।
তবে জামালপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ২ এর পেশকার ফারুক আহমেদ জানান , জামালপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর তদন্ত প্রতিবেদন এখনো আসেনি।