সাতকানিয়া কেরানীহাট ব্যবসায়ীদের নিকট গত একমাস ধরে ফোনে চাঁদা দাবি করা বহুল আলোচিত সমালোচিত জ্বীনের বাদশা নামক হুমকিদাতাকে শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সাতকানিয়া থানা পুলিশ। জ্বীনের বাদশার আসল নাম এমরান (২৬)। এমরানের চাঁদা দাবির সাথে সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তার বোন জামাই রিয়াদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ (১ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে গণমাধ্যমকে দেওয়া সাতকানিয়া থানা পুলিশের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। শনাক্তকৃত মূলহোতা এমরান (২৬) সাতকানিয়া পৌরসভা ভোয়ালিয়া পাড়ার কালু মেম্বারের বাড়ির বাসিন্দা ও মৃত আবুল কালামের পুত্র।
গ্রেপ্তার রিয়াজ উদ্দিন (৪০) সাতকানিয়া পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের ভোয়ালিয়া পাড়ার মো হোসেনের ছেলে ও মূল আসামী এমরানের বোন জামাই।
জানা যায়,গত একমাস ধরে সাতকানিয়ার কেরানীহাট ব্যবসায়ীদের কয়েকটি মোবাইল নাম্বার থেকে জ্বীনের বাদশা পরিচয়ে একের পর এক ফোন করে চাঁদা দাবি ও হুমকি দিতে থাকে।এরমধ্যে কেরানীহাটে মোহাম্মদ জোনায়েদের দোকানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।ধারণা করা হচ্ছে অগ্নিকাণ্ডের সাথে কথিত জ্বীনের বাদশার সম্পৃক্ততা রয়েছে।ফলে ব্যবসায়ীদের মধ্যে দিনের পর দিন আতঙ্কের সৃষ্টি হয়।এদিকে হুমকিদাতা গ্রেপ্তার কিংবা শনাক্ত না হওয়ায় সংবাদ সম্মেলন করে সড়ক অবরোধ সহ নানা কর্মসূচির ঘোষণা দেন কেরানীহাট প্রগতিশীল ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি।এরমধ্যে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রায়হান তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতায় হুমকি দেওয়া নাম্বারগুলোর সিডিআর, রেজিষ্ট্রেশন পর্যালোচনা করে জ্বীনের বাদশা খ্যাত হুমকিদাতা এমরানকে শনাক্ত করে।হুমকিদাতা তার বোন জামাই রিয়াদ হোসেনের এনআইডি দিয়ে বিকাশ চালু করে সেই বিকাশ নাম্বার দিয়ে চাঁদাগুলো আদায় করে।যার কারণে চাঁদাবাজির সাথে সম্পৃক্ত থাকায় এমরানের বোন জামাই রিয়াদ হোসেনকে পালিয়ে যাওয়ার সময় দিবাগত রাতে ডলু নদীর পাড় থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানায় পুলিশ।ঘটনার মূলহোতা এমরানকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।এদিকে অতিদ্রুত মূলহোতাকে গ্রেপ্তারের দাবি ও অবস্থার প্রেক্ষিতে কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা কেরানীহাট প্রগতিশীল ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির।
সাতকানিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল খান বলেন, কেরানীহাট ব্যবসায়ীদের হুমকিদাতাকে শনাক্ত করেছি।সে এর আগেও টেকনাফে একইভাবে ব্যবসায়ীদের হুমকি দিয়ে চাঁদা দাবি করে এবং কামাল নামক একজনের দোকান পুড়িয়ে দেয়।তার নামে টেকনাফ থানায় মামলাও রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মূলহোতা এমরান তার বোনের জামাইয়ের এনআইডি ও যাবতীয় তথ্য দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খুলে বিভিন্ন জায়গার ব্যবসায়ীদের হুমকি দিয়ে চাঁদা দাবি করে যাচ্ছিল।ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততা পাওয়ায় বোন জামাই রিয়াদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং মূলহোতা এমরানকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
কেরানীহাট প্রগতিশীল ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনজুর আলম বলেন, প্রশাসন আসামীকে শনাক্ত ও মূলহোতার সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে।আমরা আশা করবো অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে মূল আসামীকে গ্রেপ্তার করবে যেহেতু শনাক্তের মাধ্যমে আসামীর সকল তথ্য পেয়েছে।আমরা আমাদের কর্মসূচি ঘোষণা করেছি।প্রয়োজন অনুযায়ী আমরা আমাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাবো।