× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা জামায়াত বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও ঘটনাবহুল ২০২৪ সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

সরকারি জায়গায় রোহিঙ্গা বাজার; কালেকশনের নামে চাঁদাবাজি

অন্তর দে বিশাল, স্টাফ রিপোর্টার (কক্সবাজার)

০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০:৩৩ পিএম

ছবিঃ সংবাদ সারাবেলা

কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের দু'পাশে সরকারি জায়গা দখল করে গড়ে উঠেছে রোহিঙ্গা বাজার। উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালী মরাগাছতলা এলাকার রোহিঙ্গা বাজারে খাস কালেকশনের নামে প্রতিদিন তোলা হচ্ছে চাঁদা। যা ভাগবাটোয়ারা করে নিচ্ছে স্থানীয় বিএনপির কতিপয় সমর্থক'রা।

বাজারটি পর্বে বালুখালী মরাগাছতলা বাজার নামে বেশ জনপ্রিয় থাকলেও এখন রোহিঙ্গা বাজার নামে সর্বত্রে পরিচিত।  যার কারণ এই বাজারের অধিকাংশ দোকানদার রোহিঙ্গা নাগরিক। 

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়,উখিয়ার বালুখালী মরাগাছতলা (পূর্বের নাম বালুখালীর ঢালা) সড়ক ও জনপদ বিভাগের জায়গা ও সরকারি ১নং খতিয়ানভূক্ত জায়গা দখল করে টিন শিটের দোকান ও সড়কের উভয়ই পাশে দোকান বসিয়ে একটি বাজারে পরিণত করা হয়েছে।


বাজারের প্রায় রোহিঙ্গা দোকানদারের সাথে কথা বলে জানা যায়, মূলত স্হানীয় একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট বাজারটি নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন। আওয়ামী সরকারের আমলে বাজারটি নিয়ন্ত্রণ করতেন স্হানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। 


পট পরিবর্তনের পরে বাজারটি দখলে নেন বিএনপি সমর্থিত আনোয়ার সিকদার, ফোরকান চৌধুরী, আকবর আহাম্মদ, রহমত উল্লাহ ও হাজী নুরুল হক। এই ৫ জনের নেতৃত্বে তৈরি হয়েছে বিশাল একটি বাজার নিয়ন্ত্রণ সিন্ডিকেট। 


এদের নেতৃত্বে বাজারের প্রতিটি দোকান থেকে দৈনিক মোটা অংকের টাকা চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। বাজারটি স্হানীয়রা নিয়ন্ত্রণ করলেও প্রায় দোকানদার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা বলে জানা গেছে। 


বাজারে প্রায় দুইশটির মতো বিভিন্ন আধা পাকা ঘর নির্মাণ ও অস্থায়ী দোকান বসানো হয়েছে। যেখানে কয়েকটি দোকানে দেশীয় পন্য বিক্রি হলেও প্রায় দোকানে বার্মিজ পন্যে সয়লাব। 


তথ্য সূত্রে বলছে, সরকারী আইন অনুযায়ী কোন নাগরিক ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান করতে গেলে ট্টেড লাইসেন্স প্রয়োজন। এই লাইসেন্স উদ্যোক্তাদের আবেদনের ভিত্তিতে প্রদান করা হয়। ট্রেড লাইসেন্স শুধুমাত্র লাইসেন্সধারী ব্যক্তির বা প্রতিষ্ঠানের নামে প্রদান করা হয় যা কোনোভাবে হস্তান্তরযোগ্য নয়। প্রতিটি ব্যবসার জন্য ভিন্ন ভিন্ন লাইসেন্স থাকা বাধ্যতামূলক। লাইসেন্স বাধ্যতামূলক হলেও এই বাজারের অধিকাংশ দোকানদারের ট্রেড লাইসেন্স নেই। যাদের ট্রেড লাইসেন্স আছে তারা রোহিঙ্গাদের থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে লাইসেন্স ভাড়া দিয়েছে।


সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী রোহিঙ্গারা কাটা তারের বাইরে আসা সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। অথচ প্রতিদিন রোহিঙ্গারা কাটাতারের বাইরে এসে বালুখালী মরাগাছ তলা বাজারে দোকানদারি করে রাতে ক্যাম্পে চলে যাচ্ছে। আবার অনেক রোহিঙ্গা সড়কের পাশে বসে তেল,ডাল,চাল, সাবান ও বার্মিজ পন্য বিক্রি করছে।বাজারটি ঘিরে রোহিঙ্গাদের অবাধ বিচরণ।


নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য মতে, বালুখালী মরাগাছতলা বাজারে যেসব রোহিঙ্গা দোকানদারি করছে তাদের মূল উদ্দেশ্য দোকানদারি নয়। তারা এখানে বসেই স্হানীয় মাদক সিন্ডিকেটের সাথে মিশে মাদক কারবার নিয়ন্ত্রণ করে। প্রতিদিন এই বাজারে বসেই কোটি কোটি টাকার ইয়াবা কারবারের লেনদেন হয়। পট পরিবর্তনের পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তেমন তৎপরতা না থাকায় বাজারটি ঘিরে রোহিঙ্গা ও স্হানীয় মাদক কারবারিদের বিচরণ বেড়ে গেছে।

 রোহিঙ্গা মাদক কারবারিরা কোন প্রকার বাঁধা ছাড়া ক্যাম্পের বাহিরে আসাকে হুমকি সরূপ দেখছেন স্হানীয় সচেতন মহল। 


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই জানান, বাজার খাস কালেকশন হলেও দৈনিক প্রতিটি দোকান থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ চাঁদা আদায় করেন বিএনপি নেতারা। আদায়কৃত টাকার সিংহভাগ যায় বাজার নিয়ন্ত্রণকারীদের পকেটে। বাজারের অধিকাংশ দোকানদার রোহিঙ্গা,তাদের  কাছ থেকে মোটা অংকের সালামি নিয়ে ভাড়া দেয়া হয়েছে। আবার অনেক স্হানীয় বাসিন্দারা নিজেদের নামে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে চুক্তির ভিত্তিতে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে রোহিঙ্গাদের ভাড়া দিয়েছে। 


এদিকে বালুখালী মরাগাছতলা প্রায় এলাকায় সরকারি জায়গা দখলেরও হিড়িক পড়েছে। প্রতিনিয়ত সরকারি জমিতে নতুন করে নির্মাণ করা হচ্ছে দোকান ও ঘরবাড়ি। স্হানীয় দখলবাজরা সরকারি জায়গা দখল করে দোকান নির্মাণ করে রোহিঙ্গাদের মোটা অংকের টাকা নিয়ে ভাড়া দেয়। আবার অনেক দখলবাজ ঘর নির্মাণ করে রোহিঙ্গাদের বিক্রি করে দেয়।বাজারের পূর্বপাশে যেসব ঘর বাড়ি রয়েছে অধিকাংশ ঘরে রোহিঙ্গাদের বসবাস।


এবিষয়ে জানার জন্য রোহিঙ্গা বাজার নিয়ন্ত্রণ সিন্ডিকেটের প্রধান আনোয়ার সিকদার জানান, এবিষয়ে আমাকে কেন ফোন দিচ্ছেন। এসিল্যান্ড'কে ফোন দেন।আমাদের খাস কালেকশন উঠানোর জন্য ১৬ জন'কে নিয়োগ দিয়েছে।  আমরা সরকারি রাজস্ব আদায় করে দিচ্ছি। আমাদের বেতন দিচ্ছে এতটুকু। 


উখিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)  যারিন তাসনিম তাসিন বলেন, এবিষয়ে আমি অবগত নয়। প্রায় বাজার নিয়ে অভিযোগ রয়েছে। আমার ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।


Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.