জামালপুরের মেলান্দহে নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই চলছে ফসলি জমির মাটি কাটার মহোৎসব। উপজেলার পৌর এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিন বিভিন্ন সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দিনে রাতে ভেকু দিয়ে কাটা হচ্ছে মাটি ও বালি।
ফসলি জমির পাশাপাশি সরকারি খালবিলও বাদ পড়ছে না মাটি খোরদের হাত থেকে । এ অঞ্চলের অধিকাংশ জমিই উর্বর পলি মাটি সমৃদ্ধ। বেশিরভাগ জমিই তিন ফসলী।
এসব জমিতে ধান, পাট, সরিষা, সবজি ব্যাপকভাবে উৎপাদন হয়। কিছু অসাধু মাটি ব্যবসায়ী কৃষকদের অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে এসব জমির টপ সয়েল কিনে নিচ্ছেন । আর এসব মাটি দিয়ে নির্মানাধিন বাড়ি ও গর্ত বরাটের পাশাপাশি উপজেলার বিভিন্ন ইট ভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে । এর আগে প্রশাসনের পক্ষ থেকে একাধিক অভিযান পরিচালনা করে জরিমানা করা হয়েছে । এরপরেও থামছে না মাটি ও বালু উত্তোলন ।
খোজ নিয়ে দেখা যায়, মেলান্দহ উপজেলার হাজরাবাড়ী পৌরসভার ব্রাহ্মণপাড়া এলাকায় ফসলি জমির টপ সয়েল বিক্রির হিড়িক পড়েছে। এছাড়া ফুলকোঁচা ইটের ভাটার পাশে থেকে মাটি কাটা হচ্ছে। মাটি যাচ্ছে স্থানীয় লোকজনের বাড়ি উচু করন, গর্ত ভরাট ও স্থানীয় ইটের ভাটায়। মাহিন্দ্র গাড়িতে এসব মাটি পরিবহনের সময় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রাস্তাঘাটও। রাস্তায় ধুলো উড়ছে এতে স্বাভাবিক চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সুত্রে জানা যায় , টপ সয়েল জমির প্রাণ। জমির উপরের আট থেকে ১০ ইঞ্চিই হলো টপ সয়েল। আর সেখানেই জৈবশক্তি বিদ্যমান থাকে। এই টপ সয়েল জমি থেকে উত্তোলন করা হলে কৃষি ধ্বংসের মুখে পতিত হবে। যেভাবে মাটি বিক্রি হচ্ছে তাতে করে ফসল উৎপাদন আশঙ্কাজনক হারে হ্রাস পেতে পারে ।
ব্রাহ্মণপাড়া এলাকার সুলতান, ইমরান, সবুজ মন্ডল সহ একাধিক কৃষক জানান, আমরা মাটি বিক্রি করতে না চাইলেও বাধ্য হয়েই মাটি বিক্রি করতে হচ্ছে। জমির চারপাশের মাটি বিক্রি করলে তখন আমাদের আর করার কিছু থাকে না। মাটি কাটলে ফসলের ক্ষতি হবে জেনেও তাই আমরা বাধ্য হয়েই মাটি বিক্রি করছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল বলেন, সাধারণত এক কানি জমিতে প্রায় ৩৫ কেজি ইউরিয়া সার দিতে হয়। কিন্তু টপ সয়েল কেটে নেওয়া জমিতে এর প্রায় দ্বিগুণ সার দিতে হবে । ফলনও স্বাভাবিকের চেয়ে কম হবে । এভাবে মাটি কাটা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে জমি চাষাবাদের অনুপযোগী হয়ে পড়বে ।
মেলান্দহ সহকারি কমিশনার (ভূমি) তাসনীম জাহান বলেন, বিষয় টা জানার পরে নায়েবকে পাঠিয়ে বন্ধ করে ছিলাম। আমি ব্যস্ততার জন্য যেতে পারিনি। আমি সরেজমিনে গিয়ে ব্যবস্থা নিবো।
জামালপুরে কৃষি জমি নষ্ট করে এক্সকেভেটর (ভেকু) দিয়ে মাটি কেটে বিক্রি করছে মাটি খেকোরা । উপজেলা প্রশাসনের কোনো পদক্ষেপ না থাকার কারণে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন মাটি এসব মাটি ব্যবসায়ীরা ।
তবে মেলান্দহ উপজেলা নির্বাহী অফিসার
এস.এম. আলমগীর বৃহস্পতিবার দুপুরে মুঠোফোনে জানান, খোজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সহকারি কমিশনার ভুমিকে বলে দিচ্ছি ।