উপসচিব পদে পদোন্নতিতে প্রশাসন ক্যাডারের কোটা কমাতে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদের অংশ হিসেবে কলম বিরতি পালন করেছে রাজশাহীতে কর্মরত ২৫তম বিসিএস ক্যাডারের সকল কর্মকর্তা।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) রাজশাহীতে অবস্থানরত সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অফিসাররা এই কর্মসূচি পালন করেন। রাজশাহীর বিভিন্ন দপ্তর ঘুরে দেখা গেছে, অফিসের সামনে ব্যানার টানিয়ে কর্মসূচী পালন করছেন অফিসাররা। এসময় কর্মকর্তাদের সাথে কথা বললে তারা জানান, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ আমরা কলম বিরতি দিয়েছি। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন যদি আমাদের চলমান কোটা সংস্কার বাস্তবায়ন না করে তাহলে কেন্দ্রের নির্শদেনা অনুযায়ী আগামীতেও যেকোন ধরনের কর্মসূচিতে থাকবে ২৫তম ব্যাচের ক্যাডাররা।
উল্লেখ্য, গত ১৭ ডিসেম্বর সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী জানান, উপসচিব পদে পদোন্নতিতে প্রশাসন ক্যাডারের ৫০ শতাংশ এবং অন্য সব ক্যাডার থেকে ৫০ শতাংশ কোটা রাখার সুপারিশ করবেন এবং চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সরকারের কাছে এই কমিশনের প্রতিবেদন দেওয়ার কথা রয়েছে। বর্তমান বিধিমালা অনুযায়ী, উপসচিব পদে প্রশাসন ক্যাডারের ৭৫ শতাংশ এবং অন্য সব ক্যাডারের মধ্য থেকে অবশিষ্ট ২৫ শতাংশ কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেওয়া হয়।
উক্ত কমিশনের সুপারিশের মধ্যে রয়েছে—জনপ্রশাসনে উপসচিব ও যুগ্ম সচিব পদে পরীক্ষার মাধ্যমে পদোন্নতি। উপসচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের জন্য ৫০ শতাংশ ও অন্যান্য ক্যাডারের জন্য ৫০ শতাংশ বরাদ্দ করা এবং শিক্ষা ও স্বাস্থ্যকে ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত না রেখে আলাদা রাখা। কমিশনের সুপারিশের বিষয়গুলো প্রকাশের পর এ ব্যাপারে প্রশাসন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডারের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানানো হয়। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশের বিষয়ে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের জেলা শাখা সভাও করেছে। পদাধিকারবলে জেলা প্রশাসকেরা এই সংগঠনের জেলা শাখার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
প্রশাসন ক্যাডার উপসচিব থেকে সচিব পর্যন্ত সব পদে প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তাদের পদায়ন চায়। অন্যদিকে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডারের কর্মকর্তারা তাদের ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত না রাখার সুপারিশের বিপক্ষে অর্থাৎ তারা ক্যাডারেই থাকতে চান।
এরইমধ্যে ২৫টি ক্যাডার নিয়ে গঠিত ‘আন্তক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ’ এর সঙ্গে পরিষদভুক্ত ২৫টি ক্যাডারের পৃথক সংগঠনের নেতাদের মতবিনিময় হয়। সভা থেকে প্রতিটি মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট ক্যাডারের কর্মকর্তাদের দিয়ে পরিচালনা ও কোটামুক্ত উপসচিব পদের দাবিতে কলমবিরতিসহ আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, প্রতিটি ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১ ঘণ্টা সব অফিসে কলমবিরতি। ২৬ ডিসেম্বর বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত মানববন্ধন কর্মসূচি পালন। আর যেসব বিভাগে বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়নি, দ্রুত সেখানে সমাবেশ আয়োজন ও জনসম্পৃক্ততা বাড়ানো। এ ছাড়া আগামী বছরের ৪ জানুয়ারি ঢাকায় সমাবেশের আয়োজন করে সেখানেই পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।