আওয়ামীলীগের প্রভাব খাটিয়ে উন্নয়ন বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ, ভূয়া নিয়োগ, জাল সনদে চাকরি দেওয়া সহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার ঘোষেরপাড়া ইউনিয়নে চর সগুনা এ.সি.এস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহিদুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে।
তিনি ঘোষেরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদকের পদে রয়েছেন। ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোবাশ্বির হাসান, প্রধান শিক্ষক জাহিদুল ইসলাম এবং বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মঞ্জুরুল ইসলাম ও কেরানী রাসেল রানার বিভিন্ন অনিয়মের সঠিক তদন্তের মাধ্যমে বিচার চেয়ে গত ১১ ডিসেম্বর মেলান্দহ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন চর সগুনা গ্রামের মরহুম সিরাজুল মন্ডলের ছেলে মো: মনোয়ার হোসেন মনু। লিখিত অভিযোগটি পেয়েছেন বলে মঙ্গলবার( ২৪ ডিসেম্বর) দুপুর ১২ টায় জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস.এম. আলমগীর।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ১৯৯২ সালে চর সগুনা এ.সি.এস উচ্চ বিদ্যালয় স্থাপিত হয়। ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক মোঃ জাহিদুল ইসলাম বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পরেই ভবন নির্মাণের জন্য জেলা পরিষদ থেকে বরাদ্দকৃত ৩৩ লাখ টাকার কাজের মধ্যে ৭লাখ টাকা খরচ করে বাকী টাকা সেই সময় থাকা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোবাশ্বির হাসান মিলে ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছে । স্কুলের বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণের জন্য ৬লাখ টাকার মধ্যে মাত্র দেড় লাখ টাকা খরচ করে বাকী টাকা আত্মসাৎ করেছে প্রধান শিক্ষক ও সাবেক সভাপতি।
এ ছাড়াও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম সহকারী শিক্ষক হিসেবে প্রধান শিক্ষকের সহযোহিতায় বি.এড সনদ জাল করে চাকরি করে আসছেন। এদিকে ঘোষেরপাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য মোঃ রাসেল রানাকে বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী কেরানী নিয়োগের জন্য দলীয় প্রভাব খাটিয়ে অন্য কোনো প্রার্থীকে আবেদন করতে না দিয়ে প্রধান শিক্ষক ও সাবেক ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোবাশ্বির হাসান মিলে নিয়োগ প্রদান করে তারা । ১৭ বছর আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে বিদ্যালয়ের নিয়োগ বাণিজ্য, উন্নয়ন বরাদ্দ আত্মসাৎ করাসহ বিভিন্ন অপকর্ম করেছে বলেও অভিযোগে উল্লেখ্য করা হয় ।
অভিযোগকারী মনোয়ার হোসেন মনু বলেন, এতোদিন আওয়ামী লীগের দলীয় প্রভাব খাটিয়ে প্রধান শিক্ষক, সাবেক সভাপতি নিয়োগ বাণিজ্য, উন্নয়ন বরাদ্দ আত্মসাৎসহ বিভিন্ন অপকর্ম করেছে। ধর্মীয় শিক্ষক (মৌলভী) মোঃ আব্বাস আলীর নিয়োগের সময় বিদ্যালয়ের উন্নয়নের কথা বলে ৫ লাখ টাকা নিলেও স্কুলে জমা দিয়েছে সাড়ে তিন লাখ। লাইব্রেরিয়ান পদে মোছাঃ লুৎফার নিয়োগের সময় ৭ লাখ টাকা নেওয়া হলেও স্কুলে জমা মাত্র ২ লাখ । সম্পুর্ন টাকা আত্মসাৎ করেছে তারা। এতোদিন প্রতিবাদ করতে পারি নাই।
এদিকে জাল সনদে চাকরির বিষয়ে সহকারী শিক্ষক মঞ্জরুল ইসলাম ও অফিস সহকারী (কেরানী) মোঃ রাসেল রানা সাংবাদিকদের সাথে কোন কথা বলতে রাজি হননি।
অভিযোগের ব্যাপারে এ.সি.এস. উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ জাহিদুল ইসলাম জানান, মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানী করা হচ্ছে।
এদিকে বুধবার সকালে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আজাদুর রহমান ভূইয়া এ প্রতিবেদক মাসুদুর রহমানকে বলেন, অভিযোগটি নিয়ে তদন্ত করে সত্যতা মিললে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।