গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার উদাখালী ইউনিয়নের হরিপুর ও সদর উপজেলার বানিয়ারজান এলাকা থেকে বিরল প্রজাতির দুটি হিমালয়ান গৃধিনী শকুন উদ্ধার করা হয়েছে।
গত রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ফুলছড়ি উপজেলার হরিপুর দুর্গা মন্দিরের পাশে শকুনটি হঠাৎ আকাশ থেকে পড়ে। স্থানীয় রেজ্জাক আলী ও কয়েকজন মিলে আহত শকুনটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আকাশে উড়ানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু শকুনটি এক কিলোমিটার দূরে দাঁড়িয়ারপাতার এলাকায় গাছে আটকা পড়ে। পরে স্থানীয়রা এটি উদ্ধার করে শান্তিরমোড় এলাকায় নিয়ে আসেন এবং ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে প্রশাসনকে অবহিত করেন।
পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে বন বিভাগের সহায়তায় শকুনটি উদ্ধার করা হয়।
পরের দিন সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে সদর উপজেলার বানিয়ারজান এলাকা থেকে আরও একটি শকুন উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধারকারী দলের সদস্য মোশারফ হোসেন জানান, উদ্ধার হওয়া শকুন দুটি হিমালয়ান গৃধিনী প্রজাতির। এদের উচ্চতা প্রায় তিন ফুট, পাখার দৈর্ঘ্য সাত ফুট এবং ওজন ১০ কেজি। পাখির গাঢ় বাদামি রঙ, পাখার নিচে ফ্যাকাশে ধূসর ডোরা রয়েছে।
হিমালয়ান গৃধিনী শকুন বিশ্বের বৃহত্তম প্রজাতির শকুন। এর বৈজ্ঞানিক নাম Gyps himalayensis। এই শকুনের ডানার বিস্তার ৮.৫ থেকে ১০ ফুট পর্যন্ত হতে পারে। এটি বিশ্বের বিপদমুক্ত পাখি হিসেবে বিবেচিত হলেও বাংলাদেশে মহাবিপন্ন। সাধারণত হিমালয়ের দেশগুলোতে এই শকুন পাওয়া যায়।
গাইবান্ধা বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এএইচএম শরিফুল ইসলাম মন্ডল জানান, শকুন দুটি বন বিভাগের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছে। আজ (৩০ ডিসেম্বর) দিনাজপুরের বীরগঞ্জ সিংড়া শকুন উদ্ধার ও পরিচর্যা কেন্দ্রে শকুনগুলো হস্তান্তর করা হবে।
স্থানীয়দের দ্রুত পদক্ষেপ এবং বন বিভাগের উদ্যোগে শকুন দুটি নিরাপদে থাকায় প্রশংসা করা হচ্ছে। পরিবেশবিদদের মতে, এই শকুনগুলো জীববৈচিত্র্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং এ ধরনের উদ্ধার কার্যক্রম পরিবেশ সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।