দক্ষিণ চট্টগ্রামের চন্দনাইশে রাত হলে অবৈধভাবে কৃষি জমির মাটি ও পাহাড় কেটে মাটি বিক্রির মহোৎসব চলছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এস্কেভেটর ও কৃষি জমির উর্বর মাটি ও পাহাড় কেটে ইটভাটাসহ জমি ভরাট কাজে বিক্রি করছে অসাধু ব্যবসায়ীরা।
মাটি ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য কিছুতেই বন্ধ হচ্ছে না, ফলে দিন দিন আবাদী ফসলি জমি কমে যাচ্ছে অন্যদিকে পাহাড়ের মাটি কর্তনের কারণে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। কৃষকদের থেকে মাটি কিনে এবং সরকারী পাহাড়ের মাটি ইটভাটাসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছে পরিণত হচ্ছেন মাটি খেকো ব্যবসায়ীরা।
দিনের পর দিন রাতে আধাঁরে অবৈধ মাটি কাটার কার্যক্রম চলে আসলেও রহস্যজনক কারণে স্থানীয় প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, উপজেলায় কয়েকটি শক্তিশালী মাটি ব্যবসায়ী চক্র গড়ে উঠেছে। এরা দরিদ্র কৃষককে নানা প্রলোভন দেখিয়ে জমির মাটি কিনে নিচ্ছে। আবার কেউ কেউ প্রয়োজনের তাগিদে নগদ অর্থ পেতে ফসলি জমির মাটি বিক্রি করে দিচ্ছেন। ৮-১০ ফুট গভীর করে মাটি কাটার ফলে অনেক জমি পুকুর বা ডোবায় পরিণত হচ্ছে। এসব জমিতে ফসল বা মাছ চাষ করা সম্ভব হচ্ছে না।
অন্যদিকে চন্দনাইশে পাহাড়ের পাদদেশে ইটভাটা গড়ে উঠায় পার্শ্ববর্তী পাহাড় কর্তনের মহোৎসব চলচ্ছে। এসব মাটি বিভিন্ন স্থানে সরবরাহের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে ডাম্পার ট্রাক যার ফলে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত গ্রামীণ রাস্তাঘাটে খানা-খন্দ তৈরি হয়ে দ্রুত ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ছে।
সরেজমিন পরিদর্শন করে গত ৬ জানয়ারী চন্দনাইশ উপজেলার সবচাইতে সবচাইতে বেশি কাঞ্চনাবাদ এখানে দীর্ঘ এক মাস ধরে মাটিকে কেটে নিয়ে যাচ্ছে একটা গ্রুপ এছাড়া হাশিমপুর, বৈলতলী, জোয়ারা, বরমা, বরকল, সাতবাড়ীয়া, চন্দনাইশ পৌরসভা ঘুরে দেখা যায় বিভিন্ন স্থানে রাতের বেলা এক্সক্যাভেটর দিয়ে ফসলি জমির টপ সয়েল ও পাহাড়ের মাটি কাটার হিড়িক পড়েছে। আর এই মাটিগুলি ইটভাটা ও বিভিন্ন জায়গা ভরাটের কাজে ড্রাম্পার ট্রাকে ট্রাকে পাঠানো হচ্ছে।
আলাপকালে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন জানান, প্রশাসনকে ম্যানেজ করে তারা কাজ করছেন। স্থানীয় সচেতন মহল জানান, সরকার পরিবর্তনের ফলে অবৈধ কার্যক্রম পরিবর্তন হয়েনি। শুধুমাত্র অবৈধ কাজের মানুষের পরিবর্তন হয়েছে। আর এসব মাটি ব্যবসায়ীরা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পান না সাধারণ মানুষ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আজাদ হোসেন বলেন, কৃষিজমির উপরিভাগের মাটি কেটে নেওয়ায় পুষ্টি উপাদান কমে গিয়ে ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে জমির উপরিভাগের মাটি বিক্রি না করার জন্য কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
চন্দনাইশ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইমরান আল হোসাইনের সাথে মুঠো ফোনে কথা বলতে চাইলে তিনি অসুস্থ বোধ করায় চট্টগ্রাম শহরে যাওয়ায় তার বক্তব্য দেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে চন্দনাইশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রাজিব হোসেন বলেন, আমরা তথ্য সংগ্রহ করছি কোন কোন জায়গায় মাটি কাটা হচ্ছে। অতিদ্রুত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।