রংপুরে মুজিববর্ষ ও শেখ হাসিনার বাণী সংবলিত লিফলেট তথ্যমেলার চারটি স্টলে বিতরণের ঘটনায় দুই কর্মকর্তাকে বদলি ও একজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এদের মধ্যে রংপুর জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি দপ্তরের সহকারী পরিচালক মালিক মোহাম্মদ তৈমুর গোফরানকে বরগুনায় ও জেলা সঞ্চয় ব্যুরোর সহকারী পরিচালক মো. মোক্তারুজ্জামানকে ঠাকুরগাঁওয়ে বদলি করেছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। এছাড়া জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. মুহাম্মদ সালাহ উদ্দিন কবিরকে সাময়িক বরখাস্ত করে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (রিজার্ভ) হিসেবে মৎস্য অধিদপ্তরে পদায়ন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) বিকেলে রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গত ২২ ডিসেম্বর রংপুরে জেলা প্রশাসন ও সচেতন নাগরিক কমিটি-সনাক) এ তথ্যমেলার আয়োজন করেছিলেন।
মেলার উদ্বোধনী দিনে শেখ হাসিনার বাণী ও মুজিববর্ষের লোগো সংবলিত লিফলেট সাধারণ মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি জানার পর তাৎক্ষণিকভাবে জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি, মৎস্য বিভাগ, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ ও সঞ্চয় ব্যুরোর স্টল থেকে লিফলেট সরিয়ে ফেলা হয়। বিতর্কিত এ ঘটনায় জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসককে আলটিমেটাম দিয়েছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।
এসব লিফলেট ‘নিরাপদ মাছে ভরবো দেশ, মুজিববর্ষে বাংলাদেশ,’ বাঙালি জাতি এখন বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলছে আগামীতেও মাথা উঁচু করে চলবে, সেটাই হবে আমাদের আজকের দিনের প্রতিজ্ঞা-মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’ এবং কন্যাশিশুর জন্য শেখ হাসিনার বাণী সংবলিত একাধিক লিফলেট বিতরণ করা হয়।
জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের বিতরণ করা লিফলেটে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধুর অভিবাসন দর্শন ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ‘স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল বাংলাদেশে রূপান্তরে অবিশ্বাসনের ভূমিকা’ শীর্ষক একটি লেখা, যাতে সাবেক শেখ হাসিনার আমলের নানা কর্মকাণ্ডের বিবরণ। এ ছাড়া লিফলেটের শেষে শেখ হাসিনার একটি বাণী ছাপা হয়। এ ছাড়া সঞ্চয় ব্যুরোর স্টল থেকে পাওয়া লিফলেটে শেখ হাসিনার সময়ের সঞ্চয় স্কিম ও বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রমের বর্ণনা দেওয়া ছিল। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এসব লিফলেট নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়।
এ নিয়ে সেদিন বিকেলে ঢাকা পোস্ট ডটকমসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম সংবাদ প্রকাশ করে। এরপর তদন্তের উদ্যোগ নেয় জেলা প্রশাসন। প্রমাণ নিশ্চিত হওয়ায় সংশ্লিষ্ট দফতরগুলো থেকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল আরো জানান, ঘটনা নজরে আসা মাত্রই কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। এরপর সংশ্লিষ্ট দফতরগুলো তদন্ত শুরু করে। তদন্তে দায়িত্বে অবহেলা এবং সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মেলায় তাদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেয়া হলো। এছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।