মারা যাওয়া শিক্ষার্থীর নাম মেহেদী হাসান (২২)। তিনি রুয়েটের আরবান প্ল্যানিং (ইউআরপি) বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাবার নাম নূর ইসলাম। বাড়ি রংপুর শহরের কোতোয়ালি থানার বনানীপাড়া মহল্লায়। মেহেদী হাসান থাকতেন রাজশাহী নগরের ফুদকিপাড়া মহল্লার এবেলা ছাত্রাবাসে। শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাতে ছাত্রাবাসটির নবম তলার তার নিজ কক্ষে সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলছিলেন তিনি।
নগরের বোয়ালিয়া থানার ওসি মেহেদী মাসুদ জানান, শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) দিবাগত মধ্যরাত ২টার দিকে তারা খবর পান। পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ তদন্ত করে। এরপর ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়। রাতেই পরিবারের সদস্যদের খবর দেয়া হওয়। সকালে তারা রাজশাহী পৌচ্ছে। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে লাশ হস্তান্তর করা হবে।
রুয়েটের ছাত্র উপদেষ্টা রবিউল ইসলাম সরকার জানান, ‘দুই সিটের একটি রুমে থাকতেন মেহেদী। তার রুমমেট নেই। রুমে একাই ছিলেন মেহেদী। ছাত্রাবাসের অন্য শিক্ষার্থীরা দরজা ভেঙে তার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হলে লাশ উদ্ধার করা হয়।’
তিনি বলেন, ‘শুক্রবার দুপুর থেকে মেহেদীর মা তাকে ফোনে পাচ্ছিলেন না। এভাবে সারাদিন গড়িয়ে গেলে রাত ১২টার দিকে তিনি ছাত্রাবাসের অন্য এক ছাত্রকে ফোন করে মেহেদী নিজ কক্ষে আছে কি না তা দেখতে বলেন। তখন শিক্ষার্থীরা দেখেন যে মেহেদীর রুম ভেতর থেকে লাগানো। এরপর তারা দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে মেহেদীর লাশ দেখেন।’
ছাত্র উপদেষ্টা জানান, মেহেদীর ব্যাচের শিক্ষার্থীরা স্নাতক শেষ করে বেরিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু এক বিষয়ে ফেল থাকার কারণে মেহেদী যেতে পারেননি। এটা নিয়ে তার ডিপ্রেশন ছিল। তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন এবং মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। এই ডিপ্রেশনের কারণে তিনি আত্ম’হত্যা করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শিক্ষার্থী এই আত্মহত্যা সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, ভারতীয় ফ্লিম "থ্রী ইডিয়েট'র মতোই ডিপ্রেশনের কারনে রুয়েট শিক্ষার্থীর এই আত্মহত্যা। ভারতীয় ঐসিনেমাতেও প্রজেক্টের কাজ মানসম্পন্ন না হবার কারনে ঐশিক্ষার্থীর পরবর্তী সেমিস্টারে উর্তীন্ন হবার বিষয়টি প্রতিকূলে ধাবিত হয়। অবশেষে পরিবার ও লোকচক্ষুর কারনে নিজের ভেতর একধরনের ডিপ্রেশন তৈরি হয়। এবং অবশেষে ওই শিক্ষার্থী নিজ কক্ষের সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করে। এক বিষয়ে ফলাফল খারাপ হবার কারনে ডিপ্রেসনের মতো গোলকধাধায় পড়ে রুয়েট শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার কারনে আমরা মর্মাহত, মন্তব্যে করেন শিক্ষার্থীরা।