× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা জামায়াত বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

যুবদল নেতাদের, ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি!

পাবনায় শটগান ঠেকিয়ে কলেজছাত্রকে অপহরণ

রাকিব হাসনাত, পাবনা প্রতিনিধি ।

১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭:২৫ পিএম । আপডেটঃ ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭:৩১ পিএম

ছবিঃ সংগৃহীত।

পাবনা সদরের চরতারাপুরে সোহাগ ইসলাম (২৫) নামে একজন কলেজ শিক্ষার্থীকে শর্টগান ঠেকিয়ে অপহরণ করে মুক্তিপণ হিসেবে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন বিএনপি- যুবদলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় আরও একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহতাবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। 

সোমবার (১৩ জানুয়ারি)  রাত ১১ টার দিকে চরতারাপুর ইউনিয়নের শুকচোর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অপহরণের প্রায় ৬ ঘন্টা পর রাত ৪ টার দিকে তাকে উদ্ধার করে পুলিশ। 

অপহৃত সোহাগ চরতারাপুর ইউনিয়নের শুকচর গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য তোফাই মেম্বারের ছেলে।  তিনি পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ থেকে অনার্স শেষ করে ঢাকায় চাকুরীর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আর গুলিবিদ্ধ রফিকুল ইসলাম অন্তু একই গ্রামের মোফাজ্জল প্রামানিকের ছেলে। সে ও পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজে পড়াশুনা করেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ইউনিয়নের শুকচোর গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য তোফাজ্জল হোসেন তোফাই  দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে শয্যাশায়ী অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ঢাকায় চিকিৎসার জন্য জমি বিক্রি করে বাড়িতে টাকা রেখেছিল। দু-একদিনের মধ্যে ঢাকায়  নেওয়ার কথা ছিল। গতকাল রাত ১১ টার পর বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ছিল সোহাগ। এসময় সন্ত্রাসীরা  এসে প্রথমে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এসময় দিতে অস্বীকৃতি জানালে শর্টগান ঠেকিয়ে তাকে বাড়ি থেকে জোরপূর্বক অপহরণ করে ইউনিয়ন যুবদলের প্রচার সম্পাদক কুতুব উদ্দিন, বিএনপি পরিচয় দেওয়া মুতাহার হোসেন মোতাই ও রেজাউল করিম। এসময় বাধা দিতে গেলে তার চাচাতো ভাই রফিকুল ইসলাম অন্তুকে মোতাহার হোসেন মোতাই প্রথমে শর্টগান দিয়ে আঘাত করে।  পরে গুলি করে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্তমানে তার মাথায় একটি গুলি রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। এপর রাত ৪ টার দিকে পুলিশ চরতারাপুরে অভিযানে গেলে সন্ত্রাসীরা তাকে ফেলে পালিয়ে যায়। এরপর পুলিশ তাকে উদ্ধার করে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করেন। এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চরতারাপুর ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক নেতা বলেন, বিএনপির বড় বড় নেতা ও প্রশাসন রাত ৩ টার দিকে আমাকে ফোন দিয়ে বিষয়টি অবগত করে। এবং উদ্ধারে কাজ করতে বলেন, এরপর কুতুব ও মুতাইকে ফোন দিয়ে বলি যে তাকে দ্রুত পরিবারের কাছে ফেরত দিয়ে আসো তাছাড়া সমস্যা হবে কিন্তু।  এরপর মোবাইলের ওপার থেকে বলে যে ১০ লাখ টাকা নিয়ে আসতে বলো তারপর ছেড়ে দিচ্ছি। সে আরও অভিযোগ করে বলেন, এলাকায় তারা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। নামে বেনামে সবার থেকে চাঁদা ধরছে। ফসল ও গরু চুরি থেকে শুরু করে নানা অপরাধ করে বেড়াচ্ছে। এসব হাইব্রিডদের জন্য বিএনপির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। 

ভুক্তভোগী সোহাগ ইসলাম বলেন,  গতকাল রাত ১১ টার দিকে বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছি। এমন সময় এলাকার কুতুব কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে এসে আমাকে অপহরণ করে। পরে রাত ৪ টার দিকে প্রশাসনের চাপের মুখে আমাকে ছেড়ে দেয়। এর বেশি বলতে রাজি হননি তিনি।

তবে গুলিবিদ্ধ রফিকুল ইসলাম অন্তুর মা মোছা: মায়া খাতুন বলেন, ১০ লাখ টাকা চাঁদা চেয়েছিল। দেওয়া হয়নি এজন্য আমার ভাসুরের ছেলে সোহাগকে অপহরণ করে।  আমার ছেলে এগিয়ে গেলে শর্টগান দিয়ে প্রথমে আঘাত করে। পরে গুলি করে। এখনো গুলি মাথার ভিতরে আছে। ডাক্তার অপারেশন করে বের করার কথা বলেছেন। আমরা প্রশাসনের নিকট সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাই।

অভিযোগ জানতে সুজানগর পৌর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব জসিম বিশ্বাসকে ফোন পাওয়া যায়নি। তবে সুজানগর উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব শেখ আব্দুর রউফ বলেন, সে ৫ আগষ্টের আগে আমার সঙ্গে চলত ও রাজনীতি করত। এরপর এখন তার সঙ্গে কোন যোগাযোগ নেই।

পাবনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অপহরণের ঘটনা জানতে পেরে আমরা রাতে ওই এলাকায় অভিযানে গেলে চাপের মুখে সে ফেরত দেয়। তবে অভিযুক্তদের আটক করা সম্ভব হয়নি। থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। একজনের মাথায় গুলির ঘটনায় কাজ করছে পুলিশ।

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.