পাবনার ঈশ্বরদীতে অগ্নিদগ্ধ হয়ে এক নারী মৃত্যুবরণ করেছে। আজ (১৬ জানুয়ারি) ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই নারী মৃত্যুবরণ করেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ভোর ৬ টার সময় ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মীরা ঐ নারীকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করেন। ঐ নারীর শরীরের বিভিন্ন স্থান আগুনে পুড়ে ঝলসে গিয়েছিল। কিন্তু চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী কোন ঔষধ তাকে দেওয়া যায়নি, সম্ভবত মহিলাটি মানসিক রোগী ছিল। পরে দুপুর ১২ টার দিকে মহিলাটি মৃত্যুবরণ করেন।
এর আগে রুপপুর মর্ডান ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা ছলিমপুর ইউনিয়নের ভাড়ইমারী বটতলা থেকে ঐ অজ্ঞাত নারীকে উদ্ধার করেন।
রুপপুর মর্ডান ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার মাজেদুল ইসলাম জানান, বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ৪.১৫ মিনিটে একটি মোবাইল নাম্বার থেকে স্টেশনে ফোন আসে ভাড়ইমারী বটতলায় একটি অজ্ঞাত নারী আগুনে পুড়ে সড়কে পড়ে রয়েছে। আমরা দ্রুত সেখানে উপস্থিত হয়ে তাকে উদ্ধার করে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসি।
তিনি আরও বলেন, ভোরে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে জানতে পারি রাতে আগুন তাপানোর জন্য স্থানীয় লোকজন ভাড়ইমারী বটতলাতে আগুন ধরিয়েছিল। সেখান থেকেই ওই পাগলীর গায়ে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে পাশে গাজর পরিষ্কার করা মেশিনের ওখানে লোকজন গাজর পরিষ্কার করতে গিয়ে তারা পাগলীকে উদ্ধার করে মেশিনের কাছে নিয়ে আসেন।
ওখান থেকে একজন আমাদের ফোন করে জানালে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছায়। তখন লোকজন গাজর পরিস্কারের কাজ করছিল। তাদের জিজ্ঞেস করলে সেই শ্রমিকরা জানায়- ওই নারীকে তারা কেউ চেনেন না, ইতিপূর্বে কখনো তাকে কেউ দেখেনি। কিভাবে এখানে সে এসেছে এবং কিভাবে আগুনে পুড়লো কিছুই তারা জানেন না। পরে জানতে পেরেছি বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন।
রোগীকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার পরে ঈশ্বরদী থানাকে জানিয়েছিলেন কিনা এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমরা ঈশ্বরদী থানাকে জানাইনি আমরা হাসপাতালে রোগীকে দিয়ে চলে আসি।
ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শহিদুল ইসলাম শহীদ জানান, রাতে আগুনে পুড়ে অজ্ঞাত নারী নিহতের বিষয়টি আজ দুপুর ১২টায় জানতে পেরে ঘটনাটির বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যেই পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) পাবনাকে খবর দেওয়া হয়েছে। তারা এসে উক্ত নারীর মৃত্যু এবং আগুনে পোড়ার বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত করবেন।
ওসি আরো বলেন- ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা পুড়ে যাওয়া নারীকে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চলে গেলেও আমাদের তারা জানাননি। আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে মারা যাওয়ার পরে জানতে পেরে ঘটনার কি ঘটেছে তা তদন্ত করছি।
এবিষয়ে এই ফায়ার সার্ভিসে যে নাম্বার থেকে ফোন করছিল সে ব্যক্তির নাম ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ বলতে পারছেন না। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তার মোবাইল নাম্বার টি জানিয়েছেন। সেই ব্যক্তির মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি মোবাইল ফোনটি রিসিভ করেননি।