ছোট-বড় গর্ত আর খানাখন্দে বেহাল লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ-হাজীগঞ্জ সড়ক। কোথাও দেবে গিয়ে কোথাও ভেঙে গিয়ে, আবার কোথাও বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে দীর্ঘ বছরের পর বছর চলাচলের অযোগ্য হয়ে হয়ে আছে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ-হাজীগঞ্জ সড়কের রামগঞ্জ পৌর শহরের দীর্ঘ ৩ কি.মি. অংশ।
এতে করে চরম বিপাকে পড়েছেন এই সড়কচলচলকরীদের। পায়ে হেঁটে হোক আর যানবাহনে, এই পথ পাড়ি দিতে হলেই পোহাতে হচ্ছে দুর্ভোগ। জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটির এমন পরিস্থিতিতে পথচারীসহ স্থানীয় এবং দূরপাল্লার যানবাহন চালকদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ স্থায়ীরূপ ধারণ করলেও সড়ক ও জনপথ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে নেয়া হচ্ছে না পদক্ষেপ। এতে রামগঞ্জের সর্বমহলে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
আজ (১৭ জানুয়ারী ২৪) সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি সংস্কারের অভাবে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকারে পৌছেছে ও বতর্মানে শুঙ্ক মৌসুমে রাস্তার ধুলাবালিতে অতিষ্ঠ জনজীবন। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারহীন থাকায় সড়কটিতে ছোট-বড় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে।
সড়কের বেহাল দশার কারণে দুর্ঘটনার শঙ্কা নিয়েই যাত্রীদের এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। হাজারো শিক্ষার্থীসহ পথচারীদের ধুলাবালির মধ্য দিয়েই চলাচল করতে হচ্ছে। শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে দূষণযুক্ত ধুলাবালি ফুসফুসে ঢুকে শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি, যক্ষ্মা, ক্যানসারসহ নানা জটিল রোগ সৃষ্টি করছে। শিক্ষার্থী, পথচারীদের অনেকেই নাক বন্ধ করে স্থানটি অতিক্রম করছেন।
অনেকে সময় যাত্রীরা অটোরিকশা থেকে পড়ে আহত হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন অনেকে। ছোট-বড় গর্ত এড়িয়ে গণ-পরিবহনগুলোকে চলতে হচ্ছে এঁকে-বেঁকে হেলে-দুলে। যা চালকদের জন্যে অস্বস্তিকর। রোগী নিয়ে এই সড়ক দিয়ে চলাচল করা অনেকটা অসম্ভব।
জানা যায়, রামগঞ্জ-হাজীগঞ্জ সড়কের উত্তরে ফকির বাজারের ব্রিজ থেকে দক্ষিণে মীরগঞ্জ বাজার পর্যন্ত রামগঞ্জ অংশে বিদ্যমান ১৭ কি.মি.। সড়কটির প্রস্থ ১৮ ফুট হলেও রামগঞ্জ পৌর অংশে প্রস্থের পরিমাণ ২২ ফুট। পুরো সড়কটিতে থেকে থেকে গর্ত আর দেবে যাওয়ার অংশবিশেষ থাকলেও শহরের সোনাপুর ব্রিজ থেকে দক্ষিণে জোড় কবর পর্যন্ত নাজেহাল অবস্থা চরমে গিয়ে ঠেকেছে। বড় বড় গর্তের সঙ্গে সৃষ্টি হয়েছে ঢেউ।
আবার কোথাও বৃহৎ অংশ নিয়ে দেবে যাওয়ার কারণে ওই অংশ দিয়ে দূরপাল্লার বাস, মালবাহী ট্রাক, ডাম্পট্রাক চলাচল দুরূহ হয়ে পড়েছে। ৫ মিনিটের দূরত্ব পেরুতে চালকদের সময় গুনতে হচ্ছে এক থেকে দেড়ঘণ্টা। এতে করে প্রতিদিন ভয়াবহ আকার ধারণ করে জানজট। এরমধ্যে কিছু কিছু গর্তে ইটের খোয়া দেয়া হলেও তা নিম্নমানের হওয়ায় ওই খোয়া থেঁতলে গিয়ে কাদামাটির সৃষ্টি করেছে।
গাড়ি চালক ও যাত্রীরা বলছেন, বাস, ট্রাক, প্রাইভেটকার, সিএনজি, অটোরিকশা, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন সড়কের গর্তের মধ্যে পড়ে দুর্ঘটনার স্বীকার হচ্ছে। পিচ ঢালাই উঠে ছোট পাথরগুড়ো ও ইটের সুরকিগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। যার ফলে গাড়ি ব্রেক করলে স্লিপ করে দুর্ঘটনায় পড়তে হয়। অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এ অবস্থায় সড়কটি সংস্কার করার দাবি জানিয়েছেন চালক ও যাত্রীরা।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক মোহাম্মদ মামুন জানান, সড়ক দিয়ে যানবাহন দূরের কথা পায়ে চলাচলও দূরূহ। এমন পরিস্থিতির কারণে পৌরসভার চলমান উন্নয়ন কাজেও অন্তরায় সৃষ্টি করছে। এ ব্যাপারে বারংবার জেলা সড়ক ও জনপদ প্রকৌশলীকে অবহিত করার পরও পদক্ষেপ গ্রহণে কেন দেরি হচ্ছে বুঝতে পারছি না।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপজেলা উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আমির হোসেন জানান, সর্বশেষ সড়কটিতে কবে মেরামতের কাজ হয়েছিল তা জানেন না। বর্তমানে সড়কটির বাইপাস অংশ ঢালাই কাজ করার জন্য ওয়ার্কঅর্ডার হয়েছে। সে মোতাবেক অতিসত্বর কাজ শুরু হবে বলে তিনি জানান।