কক্সবাজার বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের ছড়াছড়ি। এর মধ্যে সরকারের অনুমোদন বা লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা করা হাসপাতাল-ক্লিনিক যেমন আছে, তেমনি আছে অনেক অনুমোদনহীন প্রতিষ্ঠান। এদিকে ইউনিয়ন হাসপ সেবা কার্যক্রম নিয়েও রয়েছে বিস্তর অভিযোগ।
অস্বাভাবিক ফি আদায়, অপ্রয়োজনীয়ভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষার নামে ব্যয় বৃদ্ধি, অদক্ষ-অনভিজ্ঞ চিকিৎসকদের নামের আগে নানা ধরনের বিশেষজ্ঞ খেতাব বসিয়ে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা, পাস করা নার্সের বদলে আনাড়ি লোকজন দিয়ে সেবিকার দায়িত্ব পালন করানো, প্রায়ই রোগীদের ভুল ওষুধ সেবন করানো, ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু-এমনি আরো অনেক অভিযোগ রয়েছে চিকিৎসাসেবা প্রদানকারী এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। তার সঙ্গে রয়েছে পাওনা অর্থ আদায়ে অমানবিক পন্থা অবলম্বন করার অভিযোগ।
এদিকে কক্সবাজারের বেসরকারি ইউনিয়ন হাসপাতালে ভুল চিকিৎসার অভিযোগে আরও এক প্রসূতি মায়ের মৃত্যু হয়েছে।
নিহত মরিয়ম জান্নাত ইমা (২২) রামুর খুনিয়া পালং ইউনিয়নের দারিয়ার দিঘী এলাকার ব্যবসায়ী নেওয়াজ শরীফের স্ত্রী। স্বজনদের দাবি, ত্রুটিপূর্ণ অপারেশনের কারণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে।গত বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) কক্সবাজার শহরের ইউনিয়ন হাসপাতালে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
মরিয়মকে প্রথমে সি-সাইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় ইউনিয়ন হাসপাতালে রেফার করা হয়। ইউনিয়ন হাসপাতালে একাধিক অপারেশনের পরও তার অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় মৃত্যু হয়।
মরিয়মের বড় ভাই ইমরান জানান, প্রসব বেদনা নিয়ে বুধবার সকাল ১০টায় ডা. ইফ্ফাত সানিয়ার তত্ত্বাবধানে সী সাইড হাসপাতালে ভর্তি হন মরিয়ম। বিকেল ৪টায় তিনি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন।
ইমরানের অভিযোগ, ডা. ইফ্ফাত অপারেশন সম্পূর্ণ না করেই নার্সকে সেলাই করতে বলে অপারেশন থিয়েটার থেকে বেরিয়ে যান।
পরিস্থিতি খারাপ হলে মরিয়মকে ইউনিয়ন হাসপাতালে রেফার করা হয়, যেখানে তাকে ৮ ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়। রাত ৮টায় আরও একটি মেজর অপারেশন করা হয়। অপারেশন শেষে মুমূর্ষু অবস্থায় আইসিইউতে রাখা হলেও স্বজনদের দেখতে দেওয়া হয়নি। সকালে তার মৃত্যুর খবর জানানো হয়।
এই প্রসূতি মায়ের মৃত্যু ঘটনায় স্বজনদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। মরিয়মের ভাই ইমরান হাসপাতালের ভুল চিকিৎসাকে মৃত্যুর কারণ বলে দাবি করলেও, মরিয়মের মামা আমিন ইউনিয়ন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করেছেন।