আত্মগোপনে থাকা রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন অমির অপহরণ মামলায় রাজশাহী মহানগরীর নতুন বিলসিমলা এলাকার আবাসন ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আরএমপি চন্দ্রিমা থানা পুলিশ। সাবেক এই ছাত্রলীগ (নিষিদ্ধ ঘোষিত) নেতা অমিকে পুলিশের প্রোটোকলে আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল জবানবন্দি দেবার জন্য বলে জানান থানা কর্তৃপক্ষ।
আজ (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে থানার হেফাজতে আনা হয় অমিকে। চন্দ্রিমা থানা হেফাজতে থাকাকালিন সময়ে স্থানীয় ছাত্রদল ও যুবদল নেতাকর্মীরা দাবি তোলেন সাবেক এই চিহ্নিত নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতার গ্ৰেফতারের দাবি তোলেন এবং ঘন্টাখানেক থানা এলাকায় অবস্থান করেন।
মাদক গ্রহণের ভিডিও ভাইরাল, প্রশ্ন ফাঁস এবং টাকার বিনিময়ে কমিটি দেওয়ার অভিযোগে ২০২২ সালের ১৯ অক্টোবর জাকির হোসেন অমিকে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তার বাড়ি জেলার বাগমারার ভবানীগঞ্জে। তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজের (রামেক) ডেন্টাল ইউনিটের শিক্ষার্থী ছিলেন।
অপহৃত হওয়া ও আত্মগোপনে থাকা সাবেক এই ছাত্রলীগ নেতা অমির বাবা চন্দ্রিমা থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেন। মামলার সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ জানুয়ারি দিনগত রাত আনুমানিক সাড়ে ৮ টায় অমি সিএনজি অটোরিকশা যোগে গ্রামের বাড়ি বাগমারা থেকে নগরীর ছোটবনগ্রাম ব্যাংক টাউন এলাকার বাসায় ফিরছিলেন। বাসায় প্রবেশের সময় ৬-৭ জনের একদল সশস্ত্র ব্যক্তি তাকে অপহরণ করে আব্দুর রশিদের বিল সিমলার নির্মাণাধীন এ্যাপার্টমেন্টে নিয়ে যায়। অপহরণকারীরা তার কাছ থেকে ব্যাংকের চেক ও ফাঁকা স্ট্যাম্পে জোর করে স্বাক্ষর করিয়ে নেন। এরপর আরও ২ কোটি ৭০ লাখ টাকার মুক্তিপণের দাবিতে অমিকে আটকে রেখে মারধর করা হয় বলে বলেন।
অভিযুক্ত আবাসন ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদের পরিবারের দাবি, আবাসন-ব্যবসার সুবাদে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সাথে তার সখ্যতা আছে এটা সত্য। ছাত্রলীগ নেতা জাকির হোসেন অমির সাথে জমি ও প্লট সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কিছু ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছিল। তাই সেটির সুরাহা করতে অমিকেসহ তার বাবাকেও ডাকা হয়েছিল। তাকে অপহরণ করা হয়নি বা তার কাছ থেকে কোন টাকাও দাবি করা হয়নি। এমনকি উল্টো তারাই বিভিন্ন মাধ্যম দিয়ে মীমাংসা করার চেষ্টা করেছেন।
অপহরণকারি রশিদের পরিবার দাবি করে বলেন, ক্রয়কৃত সম্পত্তিতে রাইসা টাওয়ার নামে দশতলার একটি ভবন নির্মাণ করেছেন রশিদ। নগরীর ডাব তলা এলাকায় এ ভবনের ফ্লাট বিক্রি প্রায় শেষের পথে। নতুন করে জমি ক্রয় করে স্টেডিয়াম সংলগ্ন নতুন বিলশিমলা এলাকায় আরেকটি ভবন নির্মাণ শুরু করেছেন যা এখনো চলমান। জিন্নানগর এলাকায় বিরোধপূর্ণ আরো একটি জমি আছে যা আদালতে মামলা চলমান আছে। তিনি সকল রাজনৈতিক দলের সাথেই ব্যাবসায়ীক হিসেবে সমানভাবে চলাফেরা করেন কোন দলের হয়ে না।
এ বিষয়ে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও অপহৃত জাকির হোসেন অমির কোন বক্তব্য বা তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি।
এবিষয়ে নগরীর চন্দ্রিমা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মতিয়ার রহমান জানান, জাকির হোসেন অমির অপহরণ মামলায় আব্দুর রশিদ ও তার গাড়িচালক মীম ইসলামকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ছাত্রলীগ নেতা জাকির হোসেন অমির বিরুদ্ধে থানায় কোন মামলা না থাকায় ভিকটিম হিসেবে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
( লগাতে মাফলার পড়া ব্যক্তি ছাত্রলীগের অমি, পাশের দাড়িওয়ালা ব্যক্তি অপহরণকারি রশিদ)