কুষ্টিয়ার দৌলতপুর কলেজে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য নির্ধারিত স্থানে পূর্বের লাগানো গাছ দরপত্রের মাধ্যমে বিক্রয় করা হয়েছে। গাছ বিক্রয় কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে সর্বোচ্চ দরদাতাকে গাছ কাটার অনুমতি দেওয়া হলে তিনি গাছগুলি কেটে নেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাগেছে, দৌলতপুর কলেজের প্রশাসনিক ভবনের পশ্চিম পাশের বরাদ্দের একটি ভবন নির্মাণ করা হবে। সেখানে পূর্বের লাগানো শিশু ও মেহগনি গাছ কাটার সিদ্ধান্ত হয়। গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর আবেদন করেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। গাছ কাটার বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে ৩ সদেস্যর একটি কমিটি গঠন করা হয় এবং দৌলতপুর বন বিভাগকে গাছ বিক্রয়ের যথাযথ কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়।
ভবন নির্মাণের জন্য নির্ধারিত স্থানে ৩৫টি গাছ কাটার সিদ্ধান্ত হয় এবং সেলক্ষ্যে গাছের নম্বর বসিয়ে মৌখিক ঘোষনার মাধ্যমে দরপত্র আহ্বান করা হয়। নির্ধারিত অর্থ জমা (জামানত) রেখে দৌলতপুর বনবিভাগ কতৃপক্ষ ও ঠিকাদারদের উপস্থিতিতে ১৫ জানুয়ারী গাছ বিক্রয়ের প্রকাশ্য ডাক হয়। বন বিভাগের বিবেচ্য অর্থের চেয়ে ডাকের অর্থ কম হওয়ায় ওইদিন গাছ বিক্রয়ের ডাক বন্ধ রাখা হয়।
পরে একই কমিটির উপস্থিতিতে ২০ জানুয়ারী প্রকাশ্য ডাক হয়। সে ডাকে আল আমিন নামে এক ঠিকাদার সর্বোচ্চ্য দর দিয়ে নির্ধারিত গাছগুলি ক্রয় করেন।
গাছ ক্রেতা আল আমিন গত শুক্র ও শনিবার গাছগুলি কেটে নিলে শুরু হয় মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর অপপ্রচার।
৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দৌলতপুর কলেজের অধ্যক্ষ ও দৌলতপুর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছাদিকুজ্জামান খান সুমন এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। তাঁর অবর্তমানে কলেজের উপাধ্যক্ষ মো. আব্দুস সালাম ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন। দৌলতপুর কলেজে শিক্ষার পরিবেশ অস্থিতিশীল করতে অজ্ঞাত স্থান থেকে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছেন অধ্যক্ষ ছাদিকুজ্জামান খান সুমন।
একইভাবে দৌলতপুর কলেজের নবনির্মিত ভবনের জন্য নির্ধারিত স্থানে কলেজের লাগানো গাছ কাটার বিষয়ে কলেজের শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে নিয়েও তিনি মিথ্যা অপপ্রচার ছড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে যা রীতিমতো মানহানিকর।
গাছ কাটার বিষয়ে দৌলতপুর কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য প্রধান শিক্ষক আরিফুল ইসলাম নান্নু মাষ্টার বলেন, নিয়ম নীতি ও সব ধরণের আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে দৌলতপুর কলেজের নতুন ভবনের জন্য নির্ধারিত স্থানের গাছগুলি দরপত্র ও ওপেন ডাকের মাধ্যমে বিক্রয় করা হয়েছে। এখানে অনিয়মের সুযোগ নেই।
দৌলতপুর কলেজের অধ্যক্ষ ছাদিকুজ্জামান খান সুমন অজ্ঞাত স্থান থেকে দৌলতপুর কলেজের ভাবমূর্তি ও সুনাম নষ্ট করতে অপপ্রচার ও বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। যা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য সুখকর নয়।
এ বিষয়ে দৌলতপুর কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আব্দুস সালাম বলেন, দৌলতপুর কলেজের প্রশাসনিক ভবনের পশ্চিম পাশে সরকারী বরাদ্দের একটি নতুন ভবন নির্মাণ করা হবে। সেখানে কিছু গাছ ছিল। গাছগুলি কাটার জন্য আবেদেনের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে দৌলতপুর বন বিভাগ আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে দরপত্রের মাধ্যমে বিক্রয় করেছে। এখানে অনিয়মের কোন সুযোগ নেই। এ নিয়ে একটি মহল অপপ্রচার চালাচ্ছে যা দৌলতপুর কলেজের স্বার্থ বিরোধী।