মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের খলিলপুর গ্রামের রায়হান আহমেদ বাড়ির পাশের এক শতক জায়গায় লোগিয়েছেন গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ। সেই গাছ এখন বড় হয়ে এসেছে ফলন। বড় বড় পেয়াজ গুলো মাটির নিচ থেকে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে। খেত থেকে পেয়াজ সংগ্রহে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক রায়হান।
কৃষক রায়হান আহমেদ বলেন, লালতীর সিড লিমিটেড এর কাছ থেকে গ্রীষ্মকালীন পেয়াজ এর বীজ ও চাষাবাদ পদ্ধতি জানতে পারেন তিনি। বীজ তলা তৈরী করে এই পেয়াজের বীজ লাগান তিনি। গাছ বড় হলে ছত্রাক নাশক ছিটিয়ে দেন। এখন তার প্রতিটি গাছের নিচে বড় বড় পেয়াজ ধরেছে। পেয়াজগুলো দেশী পেয়াজের মতো স্বাদ। এখন তিনি বড় জায়গা নিয়ে পেয়াজ চাষ করার পরিকল্পনা করছেন।
রায়হান বলেন, পেয়াজ চাষে তেমন খরচ নেই। শুধু পেয়াজের ঘুড়ায় পরিচর্যা করতে হয়। তাছাড়া কোনো খরচ লাগে না। একই এলাকার কৃষক জাহেল মিয়া বলেন, আমাদের এলাকায় রায়হান পেয়াজের চাষ করে সফল হয়েছেন। আগামীতে আমরা তার কাছ থেকে পেয়াজের বিজ সংগ্রহ করে চাষ করবো। রায়হানের পেয়াজের চাষ এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
লালতীর সিড লিমিটেড এর শ্রীমঙ্গল ডিভিশনের ম্যানেজার তাপস চক্রবর্তী বলেন, ‘লালটির সিড এর তিনটি হাইব্রিড পেয়াজের জাত বাজারে আছে। এক শতক জায়গায় ৩০ গ্রাম বীজ লাগে। প্রায় তিন মাস এর ভিতরে ফলন আসে। পেয়াজগুলো ২০০-৩৫০ গ্রাম ওজনের হয়ে থাকে।
তিনি বলেন, সিলেট বিভাগে এর আগে বানিজ্যিক ভাবে গ্রীস্মকালীন পেয়াজ চাষাবাদ হয় নি। আমরা জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার সিন্দুরখাঁন খলিলপুর গ্রামে একজন কৃষকে উদ্ভুদ্ধ করি পেয়াজ চাষে। লালতীর সিড লিমিটেড এর তিনটি জাতের (এলটি হাইব্রিড,বিজিএস ৪০৩ ও রেড হিল) পেয়াজের বীজ সরবরাহ করি। এরমধ্যে তুলনামূলকভাবে বিজিএস ৪০৩ ভালো ফলন এসেছে। আমরা মনে করি লালতীরের এই গ্রীস্মকালীন পেয়াজ যদি আমরা ব্যাপকভাবে চাষাবাদ করি তাহলে আমাদের আর পরনির্ভরশীল হয়ে থাকতে হবে না। আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে এই পেয়াজ বড় ভুমিকা রাখবে।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো আলাউদ্দিন বলেন, ‘খলিলপুরে লালতীরের প্রদর্শনী মাঠে অনেক ভালো ফলন হয়েছে। আমরা চাই এটি কৃষকদের মাঝে ব্যাপক বিস্তার হোক। পেঁয়াজ অন্যান্য ফসলের থেকে লাভজনক এবং এর উৎপাদন খরচও অনেক কম।
তিনি বলেন, আমরা প্রচুর পরিমান পেয়াজ আমদানী করে আনি। আমরা যদি গ্রীস্ম ও শীতকালীন পেয়াজ সমানভাবে করতে পারি। তাহলে আমাদের আর আমদানী করতে হবে না।