পাবনার ঈশ্বরদীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ইব্রাহিম হোসেনের উপর ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হামলার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করতে না পারাই তিনদিনের আল্টিমেটাম শেষে ওসি শহিদুল ইসলাম শহিদদের অপসারণের দাবিতে থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা।
আজ(২৯ জানুয়ারি) সকাল ১১ টা থেকে দিনব্যাপি ঈশ্বরদী থানার মূল ফটকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে। এসময় বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা ঈশ্বরদী-বানেশ্বর মহাসড়ক অবরোধ করে সকল প্রকার যান চলাচল বন্ধ করে দিলে টানা তিন ঘন্টার বেশি সময় পৌর শহরের রেলগেট থেকে আলহাজ্ব মোড় দুই কিলোমিটার পর্যন্ত তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। পরে সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে যানজট নিরসন করে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়।
ছাত্র সমন্বয়ক তানজিদুর দিহান ও মাহিম মেহরাজের নেতৃত্বে শিক্ষার্থীরা পুলিশের বিরুদ্ধে নানারকম উগ্রবাদী স্লোগান দেন। বিক্ষোভকারীরা ওসির বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কযেকবার হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার আসামি গ্রেপ্তারে গড়িমসির অভিযোগও করেন। থানার ওসির অপসারণের আদেশ না আসা পর্যন্ত বিক্ষোভ চালিয়ে যাবেন বলে ছাত্ররা জানিয়েছেন। ছাত্ররা বিক্ষোভে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকে আমাদের ছাত্রদের উপর কয়েক দফায় হামলা হলো। মামলা হওয়ার পরও কোন আসামী গ্রেফতার করেননি পুলিশ। বর্তমানে থানার ওসির ভুমিকা নিয়ে আমাদের নিরাপত্তার প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে। আমরা থানার ওসির অপসারণ না হলে আরো কঠোর কর্মসুচিতে যেতে বাধ্য হবো।
তবে বিক্ষোভ কর্মসূচির সময় ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার গোস্বামী উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভকারী ছাত্র-জনতার উদ্দেশ্যে বলেন, সম্প্রতি যে কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে তার মধ্যে ছাত্র সমন্বয়ক ইব্রাহিমের হামলার ঘটনাটি সবচেয়ে বেশি দুঃখজনক। আমরা হামলার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে ডিবি ও র্যাব সমন্বয় করে কাজ করছি। তারই ফলশ্রুতিতে ইতিমধ্যে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামীলীগের ৮ জনকে গ্রেফতার করতে পেরেছি। তোমাদের এতটুকু নিশ্চিত করে বলতে পারি এরকম আর কোন ঘটনা ঘটবেনা। আমাদের আর কিছুদিন সময় দাও। আশা করছি একটা কাঙ্ক্ষিত ফলাফল আমরা দিতে পারবো।
এদিকে হামলার শিকার ছাত্র সমন্বয়ক ইব্রাহিম হোসেন বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে ওসির অপসারণ দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচির ব্যাপারে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, আমরা সবাই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। গত কয়েকদিন আগে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমার উপর যে হামলা করেছে সে ঘটনায় প্রশাসনের ভুমিকা নিয়ে আমাদের লাগাতার কয়েকদিনের বিক্ষোভ কর্মসুচির আজ ছিল কঠোর কর্মসুচির একটি। এতে থানার ওসির অপসারণ দাবি করে বিক্ষোভ করেছে আমার ছাত্র ভাইয়েরা। এসময় প্রশাসন আমাদের কাছে কয়েকদিন সময় চেয়েছে। সে কারনে আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে আপাততো আমাদের সকল কর্মসূচি স্থগিত করছি। আর আজকের বিক্ষোভের কারনে যে সময়টুকু জনদূর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে তার জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। পরবর্তীতে আলোচনা সাপেক্ষে আমাদের কর্মসূচি সম্পর্কে জানানো হবে।