× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা জামায়াত বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

ভৈরবে দালালের খপ্পরে পড়ে লিবিয়ায় প্রাণ গেল সুমনের: মরদেহ ফিরে পেতে স্বজনদের আর্তনাদ

আরিফুল ইসলাম মামুন,ভৈরব ( কিশোরগঞ্জ ) প্রতিনিধি

৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭:০৬ পিএম

ছবিঃ সংবাদ সারাবেলা।

কিশোরগঞ্জের   ভৈরবের  সুমন (৪২)  ইতালী যাওয়ার স্বপ্ন পূরণ হলোনা। দালালের খপ্পরে পড়ে লিবিয়ায় তার প্রাণ গেল। ইতালী পৌঁছার আগেই  গত বুধবার রহস্যজনক কারনে তার মৃত্যু হয়। গত চারমাস আগে সুমন ভৈরব থেকে  লিবিয়ায় যায় বলে জানায় তার পরিবার। ভৈরব শহরের লক্ষীপুর গ্রামের মাহমুদ হোসেনের ছেলে সুমন।  

আজ শুক্রবার নিহতের বাড়িতে গেলে সাংবাদিকদের কাছে  সকালে তার স্ত্রী তানিজিনা বেগম   স্বামীর মৃত্যুর খবর জানিয়ে দালাল সুইটি বেগমের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করেন। ভৈরব উপজেলার শম্ভুপুর শান্তিপাড়া ইতালি প্রবাসী  চাঁন মিয়ার মেয়ে দালাল  সুইটি বেগম। তার স্বামীর নাম মোজাম্মেল হক। সুমনের স্ত্রী তানজিনা বেগম   অভিযোগে বলেন, আমার স্বামী দেশে রাইস মিল ব্যবসা করত। কিন্ত ইদানিং ব্যবসা ভাল ছিলনা। একারনে সংসারের সুখ সচ্ছলতা ফেরাতে  সে ইতালী যাওয়ার স্বপ্ন দেখে নিজ উদ্যেগে গত ৪ মাস আগে  লিবিয়ায় যায়।

সেখানে গিয়ে ডাংকিতে ( সমুদ্রের বোর্ড দিয়ে) ইতালী যেতে কুমিল্লার  দাদা নামের এক দালালের সাথে যোগাযোগ করে। এই দালাল সুমনকে বলে ভৈরবের সুইটি বেগমের সাথে এবিষয়ে কথা বলতে। কথা অনুযায়ী আমি সুইটির সাথে যোগাযোগ করে ১০ লাখ টাকার মৌখিক চুক্তিতে আমার স্বামীকে লিবিয়া থেকে ডাংকিতে ইতালী পাঠানোর কথা হয়।

সেই চুক্তি অনুযায়ী আমি আমার সম্পদ বিক্রিসহ ধারদেনা করে ১০ লাখ টাকা দালাল সুইটিকে পরিশোধ করি। কথা ছিল গত ২৪ জানুয়ারি আমার স্বামীকে ডাংকিতে তুলে ইতালী পাঠাবে। ২৩ জানুয়ারি রাতে আমি আমার স্বামীর সাথে মোবাইলে কথা হলে তিনি জানান, পরদিন ডাংকিতে উঠে ইতালী রওয়ানা হবেন। স্ত্রী তানজিনা আরও জানান, দালালকে ১০ লাখ টাকা দেয়া ছাড়াও  অতিরিক্ত আরও ৮ লাখ টাকা তাদের খরচ হয়েছে। লিবিয়া যাওয়া যাতায়ত, সেখানে থাকা- খাওয়া ও দাদা দালাল চক্রকে অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়।

গত বুধবার ( ২৯ জানুয়ারি) আমি লোক মারফত খবর পায় আমার স্বামী  লিবিয়ায় মৃত্যুবরণ করেছেন। সে ইতালী যেতে পারেনি। এখবর জানতে আমি দালাল সুইটির কাছে গেলে সে জানায় সুমন ইতালী পৌঁছে গেছে। এরপর ইতালীতে আমি আমার এক আত্মীয়ের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, ২৪ জানুয়ারি তারা কয়েকজন ডাংকিতে ইতালী পৌঁছেছেন কিন্ত সুমন লিবিয়ায় অসুস্থ হয়ে বা অন্য কোন কারনে মারা গেছেন। এখন আমি কি করব। আমার তিনটি সন্তান।  ধারদেনা কিভাবে পরিশোধ করব, তার লাশ কিভাবে দেশে আসবে বুঝতে পারছিনা। লিবিয়ার দালাল এখন আমার ফোন রিসিভ করছেনা।

তার ফোন বন্ধ পাচ্ছি। এরপর তার স্ত্রী তানজিনা গতকাল বৃহস্পতিবার আবারও  ভৈরবের দালাল সুইটির কাছে গেলে সে বলে, চুক্তি অনুযায়ী আমি টাকা পেয়ে তাকে লিবিয়া থেকে  ইতালী পাঠানো সকল ব্যবস্থা করি। কিন্ত সুমন অসুস্থ হয়ে সেখানে মারা গেলে আমি কি করব।  এবিষয়ে দালাল সুইটি বেগমের সাথে    কথা হলে সুইটি বলেন, আমার কাজ ছিল সুমনকে সেখানের দালাল দিয়ে ইতালী পাঠানো। কিন্ত জানতে পারলাম, ডাংকি দেয়ার দিন সে অসুস্থ হয়ে মারা গেছে। তিনি বলেন আমি জানতাম সুমন ডাংকিতে ইতালী যাবে ২৪ জানুয়ারি। পরে খবর পায় মৃত্যুর। এর জন্য আমি দায়ী নয়।

 উপজেলা নির্বাহী অফিসার শবনম শারমিন এবিষয়ে জানান, অবৈধ পথে কেউ বিদেশে গিয়ে যদি মৃত্যুবরণ করে তাদের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করে থাকে প্রশাসন। অভিযোগ পেলে দালালদের শাস্তির আওতায় আনতে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলিকে অবগত করা হয়। ভৈরবের সুমনের মরদেহ দেশে আনতে নিহতের পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.