মাত্র পাঁচ দিনের ব্যবধানে পাবনার ঈশ্বরদীতে এক ইউপি সদস্যদের ছেলে সহ দুজন শিশুকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনা ওই এলাকা জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
অপহৃত ওই দুই শিশু হলো সলিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও মানিকনগর পূর্ব পাড়া গ্রামের বাসিন্দা আক্তারুল ইসলামের ছেলে রাজ ইসলাম (১৪) ও একই এলাকার মনিরুল ইসলামের ছেলে অন্তর হোসেন (১৩)।
জানা গেছে, গত (৩০ জানুয়ারি) বৃহস্পতিবার রাতে এশার নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয় রাজ। এসময় একটি সিএনজি যোগে মুখ বাধা কয়েকজন যুবক রাজকে জোর করে সিএনজিতে তুলে নেয়। পরে মুখে রোমাল দিয়ে তাকে অচেতন করা হয়।
রাজের বাবা ইউপি সদস্য আক্তারুল ইসলাম জানান, চারদিকে খোজাখুজি করে মধ্যরাত পর্যন্ত রাজ বাড়িতে না ফেরায় মসজিদে মসজিদে মাইকিং করা হয়। এসময় চারদিকে লোকজন খোজাখুজি শুরু করলে পার্শ্ববর্তী গ্রামের একটি লিচুবাগান থেকে হাত-পা বাধা অবস্থায় রাজের সন্ধান পেয়ে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে। প্রায় ৬ ঘন্টা পর জ্ঞান ফিরে স্বাভাবিক হলে অপহরণের বিবরণ দেয় রাজ। এসময় তার গায়ে একাধিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। দুই শিশুর পরিবারের পক্ষ থেকে ঈশ্বরদী থানাতে লিখিত কোন অভিযোগ দায়ের করা হয় নাই ।কিন্তু তারা মৌখিক অভিযোগ দায়ের করেছেন থানায় । পুলিশ দুই শিশুর পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে ঘটনার বিবরণ শুনে চলে আসে। এর পর আর থানায় অভিযোগ করা হয় নাই বলে জানান ইউপি সদস্য আক্তারুল ইসলাম।
এর আগে গত শনিবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে একই এলাকার মনিরুল ইসলামের ছেলে অন্তর হোসেন বাড়ি পাশে একটি রাস্তার ওপর দাড়িয়ে ছিল। এসময় মুখ বাধা দুই যুবক মোটরসাইকেল যোগে এসে প্রথমে অন্তরকে রুমাল নাকে দিয়ে অচেতন করে। পরে মোটরসাইকেল তুলে নিয়ে চলে যায়। পরে পাশ্ববর্তী বক্তারপুর গ্রামের একটি বাগানে নিয়ে অপহরনকারীরা অন্তরকে বিস্কুট ও পানি খেতে দেয়। সেখান থেকে কৌশলে অন্তর পালিয়ে পাশের (পেপে বাদশার) মোড়ে যায়। তবে স্বাভাবিকভাবে কথা বলতে না পারায় স্থানীয়রা পুলিশে খবর দিলে স্বজনরা গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।
পৃথক এই দুইটি ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ভুক্তভোগী ওই দুই শিশুর বাড়ি পরিদর্শনে যায় ঈশ্বরদী থানা পুলিশ। তবে ঠিক কি উদ্দেশ্যে তাদের অপহরণ করা হয়েছে তার সুনির্দিষ্ট কারন এখনো জানা যায় নি।
ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শহিদুল ইসলাম শহীদ জানান, দুটি শিশুর অপহরণের খবর জানতে পেরে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে ঈশ্বরদী থানা পুলিশ। এখন পর্যন্ত এসব ঘটনায় কেউ থানায় অভিযোগ করে নি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এদিকে এক সপ্তাহের মধ্যে একই এলাকায় এমন দুইটি ঘটনায় ওই এলাকায় স্কুল ও কলেজে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের নিয়ে চরম উদ্বেগে দিন কাটাচ্ছে সাধারন অবিভাবকরা।