রাজশাহীর পবা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কার্যালয় থেকে গুলি ছুঁড়ে ও হাতবোমা ফাটিয়ে হাট ইজারার টেন্ডার বাক্সের দরপত্র লুট করার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। ঘটনার পর রাতেই পবা উপজেলা প্রশাসনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা কায়সারুল আলম বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। তবে দিন-দুপুরে প্রকাশ্যে ওই ঘটনা ঘটলেও মামলার এজাহারে কোনো আসামির নাম নেই।
এ বিষয়ে পবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরাফাত আমান আজিজ বলেন, ‘যেহেতু আসামীদের আমরা চিনি না। তাই এজাহারে কারো নাম উল্লেখ করা হয় নি। তবে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে পুলিশ অভিযুক্তদের শনাক্ত করবে। আর হাট ইজারার জন্য পুনঃবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে আবারো দরপত্র জমা নেয়া হবে।
রাজশাহীর শাহমখদুম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুমা মোস্তারী জানান, ‘আমরা তদন্ত করছি। সিটি ক্যামেরার ফুটেজও দেখা হচ্ছে। তদন্তে যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। তবে এখন পর্যন্ত এ মামলায় কাউকে গ্রেফতার করা যায় নি।
এর আগে, সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) হামলা চালিয়ে দরপত্র লুটের ঘটনা ঘটে। ১৪৩২ বঙ্গাব্দের জন্য গত পবা উপজেলার ১২টি হাট ইজারা দিতে গত ১৫ জানুয়ারি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সোমবার ছিল দরপত্র দাখিলের শেষ দিন। টেন্ডার বাক্স রাখা ছিল ইউএনও’র কার্যালয়ের নিচতলায়। সেখানে একপক্ষ আরেকপক্ষকে দরপত্র দাখিল করতে বাধা দেয়।
এরপর গুলি ও ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে টেন্ডার বাক্স ভেঙে সব দরপত্র লুট করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় শাকিলুর রহমান রন (৪২) নামে সাবেক এক যুবদল নেতা ছুরিকাঘাতে আহত হন। শাকিলুর রাজশাহী নগরীর শাহমখদুম থানা যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক।
জানা গেছে, ওই ১২টি হাটের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল খড়খড়ি হাট। এই হাট প্রতিদিনই বসে। এই হাট থেকেই প্রতিদিন দেশের নানা প্রান্তে শাক-সবজি যায়। স্থানীয় পাঁচটি গ্রুপ এই হাট ইজারা নিতে চায়। ওই পাঁচটি গ্রুপের মধ্যে আলোচনা ছিল যে তাদের পক্ষ থেকে একটি দরপত্রই জমা দেওয়া হবে। এতে কম টাকায় হাট যেমন ইজারা পাওয়া যাবে, তেমনি সমঝোতা করে সবাই হাটের অংশীদার থাকবেন। কিন্তু স্থানীয় এক যুবদল নেতা এই সমঝোতা মানেন নি। তিনি সমঝোতা থেকে বেরিয়ে আলাদাভাবে দরপত্র জমা দিয়েছিলেন। এরপর হামলা ও বাক্স ভেঙে দরপত্র লুটের ঘটনা ঘটে।