× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা জামায়াত বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

তানোরের আলু চষিরা লোকসানের মুখে

আলিফ হোসেন, তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি।

০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৭:১৭ পিএম

ছবিঃ সংগৃহীত।

রাজশাহীর তানোরে আগাম আলু চাষ করে আলু চাষিরা লোকসানের মুখে পড়েছে। উৎপাদন খরচও উঠছে না। এতে আগাম আলু চাষিদের মাথায় হাত।বিশেষ করে প্রান্তিক কৃষকেরা আগাম আলু চাষ করে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জমি ইজারা, সার, বীজ, কীটনাশক, সেচ ও শ্রমিকের মজুরিসহ প্রতিক্ষেত্রে অস্বাভাবিকভাবে খরচ বেড়েছে।তানোর পৌর এলাকার গুবিরপাড়া মহল্লার আলু চাষী মমিন বলেন, গত বৃহস্পতিবার তিনি দেড় বিঘা জমির আগাম আলু উত্তোলন করেছেন। গত বছর দেড় বিঘা জমিতে আলু চাষ করে দ্বিগুণ লাভ হয়েছিল। এবারো লাভের আশায় সবকিছু বাড়তি দামে কিনে দেড় বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলেন।

গত বৃহস্পতিবার দেড় বিঘা জমির আলু উত্তোলন করে প্রতি কেজি আলু ১৪ টাকা ২৫ পয়সা দরে বিক্রি করেছেন। দেড় বিঘা জমিতে ৭০ কেজির বস্তায়  ৪০ বস্তা করে  ফলন হয়েছে। দেড় বিঘা জমিতে খরচ হয়েছিল ৭১ হাজার টাকা। অথচ ৪০ বস্তার বিপরীতে ৩১ হাজার টাকা পেয়েছি। ৪০ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হয়েছে। তবে নিজের জমি বলে লোকসান কম হয়েছে।

উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নের (ইউপি) জমসেদপুর মাঠে ৪ বিঘা জমিতে আগাম আলু চাষ করে লোকসান গুনতে হয়েছে চাষী ওলিকে।

তিনি জানান সবকিছু বাড়তি দামের কারনে প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছে প্রায় ৮০ হাজার টাকা করে। বিঘায় ফলন হয়েছে ৩৪ বস্তা করে। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হয়েছে ১৪ টাকা কেজি দরে। ৪ বিঘায় লোকসান প্রায় এক লাখ ৮০ হাজার টাকা হবে। তিনি আরো বলেন, একই মাঠে এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে লাভের আসায় দুই বিঘা জমিতে আলু চাষ করে লোকসান গুনতে হয়েছে কৃষক আনোয়ারকে।

একই মাঠে ফটিক নামের আরেক কৃষক ৩ বিঘা জমিতে আলু চাষ করে প্রতি বিঘায় ফলন হয়েছে ৪০ বস্তা করে।এতে তার বিপুল পরিমাণ টাকা লোকসান হয়েছে।

অন্যদিকে সাফিউল দুই বিঘা জমিতে আলু চাষ করে লোকসানের মুখে পড়েছেন। তিনি বলেন, সাত বছর পর লাভের আশায় আগাম আলু চাষ করে খরচের অর্ধেক টাকাও তুলতে পারেননি। ধানতৈড় গ্রামের কৃষক মুনসুর জানান, কয়েকদিন আগে গোকুল গ্রামের এনামুল ৪ বিঘা জমিতে আলু উত্তোলন করেছে, বিঘায় ৩৪ বস্তা করে ফলন হয়েছে। প্রতি কেজি ১৪ টাকা করে বিক্রি করেছেন। একই গ্রামের রাব্বানী দুই বিঘা, ইব্রাহিম এক বিঘা জমিতে আগাম আলু চাষ করে মাথায় হাত পড়েছে।

স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, আলু চাষে  এতো বেশী টাকা খরচ হতো না। বীজ ও সার সিন্ডিকেটের কারণে দ্বিগুণ দামে কিনতে হয়েছে। এক বস্তা ব্র্যাকের বীজ কিনতে হয়েছে প্রকার ভেদে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা করে। 

জানা গেছে, গত কয়েক বছর আলু চাষে কৃষকেরা ভাল মুনাফা করেছেন। এবার মুনাফার আশায় আলু চাষে সবাই ঝুকে পড়েছে। এই সুযোগে সিন্ডিকেট চক্রের তৎপরতা বেড়ে যায়।এতে বীজ, সার ও জমি ইজারায় কৃষকদের অনেক বেশী বাড়তি টাকা গুনতে হয়েছে। এবার আলু চাষে কৃষকদের মাঝে রীতিমতো প্রতিযোগীতা শুরু হয়েছিল একারণে উৎপাদন খরচ কয়েকগুণ বেশি। এখন আগাম আলুতে উৎপাদন খরচ তো দূরে থাক আসল টাকাই উঠছে না।

এদিকে সাধারণ ভোক্তারা ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজিতে আলু কিনছেন। কিন্তু যে চাষী দিনরাত পরিশ্রম করে ফসল উৎপাদন করছে সে খরচের টাকা তুলতে পারছে না। এক্ষেত্রে যা লাভ হচ্ছে তা যাচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগী ফড়িয়ার পকেটে। অথচ জানুয়ারির শুরুতে জমিতে আলু বিক্রি হয়েছে ২৫ টাকা কেজি,কতদিনের ব্যবধানে তা কমে এখন ১৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে কৃষি বিপণন বিভাগ থাকলেও পণ্যের দর দামে তাদের কোন ভূমিকায় থাকে না। আলু উত্তোলনের সময় দাম কমে যায়, আবার মধ্যস্বত্ত্বভোগীর হাতে আলু যাবার পর কিছুদিন পরেই দাম বেড়ে যায়।
এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহমেদ বলেন, এবারে আলুর লক্ষমাত্রা ছিল ১৩ হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে। কিন্তু চাষ হয়েছে ১৩ হাজার ৩৮৫ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন লক্ষমাত্রা ৪ লাখ ২৮ হাজার ৩২০ মেট্রিক টন।

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.