নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে প্রায় ২০টি অবৈধ,লাইসেন্স বিহীন ইটভাটা।প্রতিটি ইটভাটায় পোড়ানো হচ্ছে কাঁচা কাঠ। এসব ইটভাটা বন্ধের দাবিতে কোন দিনও হাতিয়ার মানুষ মানবব্ধন করে নাই।
এদিকে হাতিয়া উপজেলায় সরেজমিনে গিয়ে ইটভাটা গুলো ঘুরে দেখা যায়,প্রতিটা ইটভাটাতে পোড়াচ্ছে কাঁচা কাঠ,পাশাপাশি প্রতিটা ইটভাটাতে রয়েছে শিশু শ্রম।
এদিকে হাতিয়ায় অবৈধ ইটভাটা চলমান ও ইটভাটা গুলোতে শিশু শ্রম বন্ধের বিষয়ে জানতে ০৫/০২/২৫ ইং তারিখ বিকেল ৪টা,৫৭ সেকেন্ডের সময় মুঠোফোনে আলাপকালে ,হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: ইবনে আল জায়েদ হোসেন বলেন,আমরা হাতিয়ায় কয়েকটি ইটভাটাতে জরিমানা করেছি। এ বিষয়ে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিবো,যাতে লাইসেন্স ছাড়া পাশাপাশি কয়লা ব্যবহার ছাড়া যে সকল ইটভাটাতে কাঁচা কাঠ পোড়ানো হচ্ছে ঐ সকল ইটভাটাতে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।হাতিয়ায় যে সকল ইটভাটাতে লাইসেন্স নেই,কাঠ পোড়ানো হচ্ছে,শিশু শ্রম রয়েছে এসকল ইটভাটা গুলো বন্ধ করে দেয়া হবে।
নাম না বলতে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন ইটভাটা মালিকের সাথে সরেজমিনে গিয়ে কথা হলে তারা বলেন,আমরা প্রতি বছর বন ও পরিবেশ অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসনকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে মেনেজ করে হাতিয়া এবং সুর্বণচর উপজেলার বাংলা ইটভাটা গুলো চালিয়ে যাচ্ছি।এবছর হাতিয়া উপজেলাতে শুধু দুটো ইটভাটা মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা করা হয় দেড় লক্ষ টাকা কিন্তু বাকি ইটভাটা গুলো মনে হয় উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে।
স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করে বলেন, ইটভাটা গুলোতে অবাধে ব্যবহার করা হচ্ছে ফসলী জমির মাটি। এতে একদিকে যেমন ধ্বংস হচ্ছে বনায়ন,ক্ষতির মুখে পড়েছে কৃষি। কাঠ পোড়ানোর কালো ধোঁয়ায় দূষিত হচ্ছে পরিবেশ ও জীববৈচিত্য। দীর্ঘদিন ধরে এ ইটভাটাগুলো চললেও এ বিষয়ে প্রশাসনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ।স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের ভয়ে নিরূপায় হয়ে এ ইটভাটাগুলোর বন্ধের বিরুদ্ধে আজও কেউ সাহস করেনি মানববন্ধন করতে।
স্থানীয়রা আরও অভিযোগ করে বলেন,ইটভাটা গুলোতে গাছ,মাটি ও ইট পরিবহনের জন্য যে ট্রাক্টর,পাওয়ার টিলার ব্যবহার করা হয়,যার কারণে গ্রামীণ সড়কগুলো চলাচলের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। কালেভদ্রে লোক দেখানো এবছর একটি অভিযান হলেও প্রতিটি ভাটায় জিকজাক চিমনির পাশাপাশি ব্যবহার করা হচ্ছে একাধিক বাংলা চিমনি। অথচ ২০১৩ সালে ইটভাটা সংক্রান্ত এক পরিপত্রে বাংলা চিমনি অবৈধ ঘোষণা করা হয়। কিন্তু এ নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে নিরব ভূমিকায় পরিবেশ অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারি সংস্থাগুলো এখনো চুপ। প্রশাসনকে বৃদ্ধাআঙুল দেখিয়ে ও ম্যানেজ করে চলছে অবৈধ ভাটাগুলোর এমন কার্যক্রম অভিযোগ স্থানীয়দের।
তারা আরও জানান,ইটভাটার কালো ধোয়া আশপাশের পরিবেশ দূষিত করে তুলছে। প্রতিদিন দুপুরের পর থেকে ইটভাটা এলাকাগুলোতে অন্ধকার নেমে আসে। কালো ধোঁয়ায় অন্ধকার হয়ে পড়ে পুরো এলাকা। পুড়ে যাচ্ছে কাঁচা গাছপালা,অসুস্থ হচ্ছে শিশু, বৃদ্ধ’সহ মানুষজন।
এদিকে নোয়াখালী জেলা বন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মিহির লাল সরদার এর সাথে ০৫/০২/২৫ ইং তারিখ বিকেল ৪টার সময় মুঠোফোনে আলাপ কালে তিনি বলেন,হাতিয়া যেহেতু নদী মাতৃক এলাকা সেজন্য আমরা নোয়াখালী পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে যেতে একটু সমস্যা হচ্ছে বিদায় আমরা পরপর হাতিয়ায় যাচ্ছি অভিযান করার জন্য।
এবছর আমরা ইতিপূর্বে হাতিয়ায় দুটো ইটভাটায় জরিমানা করেছি।বাকি গুলোও আমরা একের পর এক আমাদের পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে অভিযানে গিয়ে ইটভাটায় জরিমানা করে যাবো পর্যায়ক্রমে। এছাড়া যে সকল ইটভাটা মালিক গুলো বলছেন আমরা তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়েছি।এই তথ্য সম্পূর্ণ ভুল,আমরা হাতিয়ায় কোন ইটভাটা থেকে অর্থ লেনদেন করিনি।
এছাড়া তিনি আরও বলেন,যদি সঠিক তথ্য পেয়ে থাকেন তাহলে আমাদের বিরুদ্ধে নিউজ করে দেন।আমরা কোন প্রতিবাদ করবো না এছাড়া আমাদের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং জেলা প্রশাসকের নির্দেশক্রমে আমরা অভিযান করে যাবো।তাছাড়া হাতিয়ায় অভিযান পরিচালনা করার আগে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে মেসেজ দিয়ে আসবো।